টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার
বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলেশ্বরী নদীর পানি
৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ও ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৯১
সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে টাঙ্গাইলের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির
অবনতি হয়েছে। টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, ভুঞাপুর, মির্জাপুর, বাসাইল ও নাগরপুরে অর্ধলক্ষাধিক
মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
জেলার ৬ টি উপজেলার দুই শতাধিক গ্রামের
দেড় লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বানের স্রোতে রাস্তাঘাট ও ব্রিজ ভেঙে যাতায়াতে
বেড়েছে দুর্ভোগ। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন রাস্তাঘাট। বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইলের
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
অসময়ের বন্যা দেখা দেয়ায় টাঙ্গাইল সদর,
ভুঞাপুর, কালিহাতী, নাগরপুর, মির্জাপুর, বাসাইলের নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করেছে। এতে আবাদ
নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি তলিয়ে গেছে পাঁচ শতাধিক হেক্টর ফসলি জমি। পানিবন্দী দেড় লাখেরও
বেশি মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। দেখা দিয়েছে নানা ধরনের পানিবাহিত রোগ। পয়ঃনিষ্কাশনের
ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের খাদ্য সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ
করেছেন বানভাসিরা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী
মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, যমুনা নদী ধলেশ্বরীসহ অন্যান্য নদীতে ভাঙন দেখা
দিয়েছে। প্রায় ৮০ কিলোমিটার অংশে নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
হলে ভাঙন নিরূপণে কাজ শুরু করা হবে।
তিনি আরো বলেন, যমুনা নদীসহ বিভিন্ন নদীতে
পানি বৃদ্ধি আরো এক সপ্তাহ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি হবে।
কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ
আলী জিন্নাহ বলেন, আমার ইউনিয়নে ভাঙন আর পানি এক যোগে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাড়ীঘরসহ যমুনা
নদীর পাড়ে যে সমস্ত স্থাপনা রয়েছে সেগুলো হুমকির মধ্যে রয়েছে। ঘরবাড়ি চোখের পলকে ডুবে
যাচ্ছে। এখানে পানিবন্দী মানুষ নাওয়া খাওয়া থেকে শুরু করে খুব কষ্টে জীবন যাপন করছে।
আমার ইউনিয়নে এই মুহূর্তে বেশি প্রয়োজন খাবার স্যালাইনসহ শুকনো খাবার।
তিনি আরও বলেন, এই পানিবন্দী মানুষের জন্য
উপজেলা পরিষদের পক্ষে থেকে ১ টন চাউল বরাদ্দ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, সরকারিভাবে
ভাঙন কবলিত কিছু কিছু এলাকায় নগদ অর্থও ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। কালিহাতী উপজেলার
দুর্গাপুর ইউনিয়নের বৈরবাড়ী গ্রামে ৫০ টি পরিবার ও গোয়ালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের আফজালপুর
গ্রামে ৫১ টি পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী ও প্রত্যেক পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে মোট ৫ লাখ
৫ হাজার টাকা নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে।