Logo
শিরোনাম

তাপপ্রবাহ-বন্যা জলবায়ু পরিবর্তনশীলতার সংমিশ্রণ

প্রকাশিত:বুধবার ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ নভেম্বর ২০২৩ | ৭১৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

সম্প্রতি বন্যায় বিপর্যস্ত পুরো পাকিস্তান। আক্ষরিক অর্থে পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ পানির নিচে তলিয়ে যায়। অতীতের প্রতিটি সীমা, প্রতিটি রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এবারের বন্যা। এর আগে কখনো এমন পরিস্থিতি দেখেননি পাকিস্তানের মানুষ। এ পর্যন্ত দেশটিতে বন্যায় মৃত্যু ১৩শ ছাড়িয়েছে। এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভারি বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি। শুধু তাই নয় বিশ্বের বেশিরভাগ অংশের মানুষ এ বছর চরম আবহাওয়া সহ্য করছে।

বছরের প্রথম দিকে, অস্ট্রেলিয়ায় নজিরবিহীন বৃষ্টি হয়েছে এবং গরমেও হাসফাঁস অবস্থা হয় সেখানকার মানুষের। গত মে মাসে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের ফলে ব্রাজিলে বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এতে একশ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। গ্রীষ্মের মধ্যে, পূর্ব আফ্রিকা চতুর্থ বছরের মতো খরার কবলে পড়ে। এরই মধ্যে, ইউরোপজুড়ে শহরগুলোতে তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে গেছে, এবং পুরো মহাদেশে নদীগুলো ৫০০ বছরের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি শুকিয়ে গেছে। চীনের বেশিরভাগ অংশজুড়ে ৭০ দিনের মতো তাপমাত্রা নিয়মিতভাবে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল। দেশটির বৃহত্তম দুটি লেকের পানি সর্বনিম্ন স্তরে নেমেছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য কোনো একক আবহাওয়াজনিত ঘটনাকে দায়ী করা একটি জটিল বিষয়। জটিলতার একটি অংশ যদি বলা যায় তাহলে পৃথিবীর জলবায়ুর জটিল প্রক্রিয়ার কারণে ঘটে, যেখানে ক্রমাগত উষ্ণতা বৃদ্ধি একটি অশুভ লক্ষণ, যার ওপর অনেক বিষয় নির্ভর করে। লন্ডন ইম্পেরিয়াল কলেজের জলবায়ু বিজ্ঞানী ক্যারোলিন ওয়েনরাইট বলেছেন, প্রতিটি ঘটনাই জলবায়ু পরিবর্তন এবং জলবায়ু পরিবর্তনশীলতার সংমিশ্রণ

জলবায়ু পরিবর্তনশীলতার সবচেয়ে শক্তিশালী উৎসগুলোর মধ্যে একটি হলো এল নিনো-সাউদার্ন অসিলেশন (এনসো)। প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব উপকূলে ঘটে যাওয়া এনসো (ইএনএসও) চক্রের দুটি বিপরীত অবস্থা হলো এল নিনো ও লা নিনা। প্রশান্ত মহাসাগরের নিরক্ষীয় পূর্ব উপকূলে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা ও ১২০ ডিগ্রি পশ্চিম দ্রাঘিমাংশের মধ্যবর্তী অঞ্চলে সমুদ্র ও বায়ুমন্ডলীয় তাপমাত্রার মধ্যে অস্থিরতাকে বোঝাতে এনসো শব্দটি ব্যবহার করা হয়। লা নিনা দ্বারা এনসো অন্তর্ভুক্ত শীতল অবস্থা এবং এল নিনো দ্বারা উষ্ণ অবস্থা বোঝানো হয়। স্প্যানীশ শব্দ এল নিনো যার অর্থ ছোট্ট বালক এবং লা নিনা যার অর্থ ছোট্ট বালিকা। এল নিনো উত্তর থেকে দক্ষিণে আর লা নিনা দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবাহিত হয়। পর্যায়বৃত্ত এই পরিবর্তনের কোন নির্দিষ্ট সময় নেই, তবে প্রতি ৩ থেকে ৮ বছরের মাঝে দেখা যায়। যা ক্রান্তীয় অঞ্চলের চারপাশের জলবায়ু (বাইরে কিছু অঞ্চলে) দুটি চরম অবস্থার মধ্যে বিরাজ করে। এটি এক বছরে, প্রশান্ত মহাসাগরজুড়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত বাতাস একই দিকে উষ্ণ জলের কাছাকাছি ঠেলে দেয়। যখন বাতাস স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি দুর্বলভাবে প্রবাহিত হয়, তখন উষ্ণ জল মধ্য ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে থেকে যায়, যার ফলে বিশ্বের সেই অংশে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এল নিনো বন্যা, খরা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। উন্নয়নশীল যেসব দেশ কৃষিকাজ এবং মাছ ধরার উপর নির্ভরশীল, তারাই এল নিনো দ্বারা অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। যখন বাতাস বিশেষ করে প্রবলভাবে প্রবাহিত হয়, তখন পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উষ্ণ জল জমে থাকে, যার ফলে সেখানে বেশি বৃষ্টিপাত হয় এবং দক্ষিণ আমেরিকার উপকূলের গভীরতা থেকে আরও ঠান্ডা জল উঠে আসে। এটি লা নিনা নামে পরিচিত । এমন একটি অবস্থা যা গত দুই বছর ধরে বিশ্বজুড়ে বিরাজ করছে।

লা নিনার প্রভাব পড়ে এমন অঞ্চল যার মধ্যে রয়েছে চিলি, মধ্যপ্রাচ্য এবং পূর্ব আফ্রিকার খরা, পশ্চিম আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ায় বৃষ্টিপাতের উচ্চ হার। যদিও বৈশ্বিক জলবায়ুর আন্তঃসম্পর্কের অর্থ হলো এসব প্রভাব অনিবার্যভাবে আরও দূরে অনুভূত হবে, তবে ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে দূরত্বের সঙ্গে কার্যকারণ শৃঙ্খলের শক্তি ম্লান হয়ে যায়। যদিও, গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রাকে প্রভাবিত করার জন্য এগুলোই যথেষ্ট। যেহেতু এসব অবস্থা সমুদ্রের তাপকে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখে। পাকিস্তানে যা ঘটছে তা একাধিক কারণের বিপর্যয়মূলক সংমিশ্রণ হতে পারে। বাতাসে বেশি আর্দ্রতা (অতিরিক্ত ৭ শতাংশ), যা আরও বেশি বৃষ্টিপাত ঘটায় এবং বন্যার ঝুঁকি বাড়ায়। এটি লা নিনা-প্ররোচিত বৃষ্টিপাতের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলোকে অস্বাভাবিক হারে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিষয়টি আরও পরোক্ষভাবে সনাক্ত করা যেতে পারে, কারণ এ বছরের শুরুতে হিমালয়ে উচ্চ তাপমাত্রার ফলে হিমবাহের গলে যাওয়াকে ত্বরান্বিত করছে যাতে নদীগুলোর প্রবাহ বেড়ে যেতে পারে। এটাও সম্ভব যে বায়ু দূষণ, যা বায়ু সঞ্চালনের ধরণকে জটিল করে তোলে, এরও ভূমিকা থাকতে পারে।

ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন প্রজেক্ট, জলবায়ু মডেল তৈরি করার একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক, পাকিস্তানে বন্যার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কারণ জানতে গত সপ্তাহে কাজ শুরু করেছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তাদের কাছ থেকে একটি মূল্যায়ন আশা করা যায়। অন্য প্রসঙ্গ যদি ধরা হয় তাহলে সেটি হচ্ছে লা নিনা। জলবায়ু মডেলগুলোর মধ্যে লা নিনা দ্বারা প্রভাবিত অঞ্চলগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রসারিত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, অ্যাঙ্গোলা, যা আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী লা নিনা প্রভাবে বন্যা অঞ্চলের সীমানার বাইরে অবস্থিত, এ বছর লা নিনার কারণে উচ্চ বৃষ্টিপাতের সম্মুখীন হয়েছে। এটি একটি ইঙ্গিত হতে পারে, ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের উইলফ্রান মাউফুমা ওকিয়া বলেছেন, সীমানা এরই মধ্যে প্রসারিত হতে শুরু করেছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের এক্সেটার ইউনিভার্সিটির ম্যাট কলিন্স বলেছেন, এ বছর তিন ধরনের প্রভাব কেবল ব্যাখ্যাতীত নয়, তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যা ঘটবে তা জলবায়ু মডেলের পরামর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। লা নিনার প্রভাবে এবছর আরও উষ্ণতা বাড়ছে। এ বছর মার্চে, অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের জন্য কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে প্রবাল প্রাচীর একটি গণ ব্লিচিং ইভেন্টের সম্মুখীন হয়েছে যেখানে প্রবালগুলো ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রতিক্রিয়া হিসাবে তাদের সিম্বিওটিক শৈবালকে বের করে দেয়। এটি লা নিনা বছরে সংঘটিত হওয়া প্রথম ঘটনা। এসক ঘটনা আসন্ন দুর্যোগ সম্পর্কে দেশগুলোকে সতর্ক বার্তা দিচ্ছে বৈকি। বৈশ্বিক উষ্ণতা অনুমান বা ধারণাকেও বিভান্ত বরছে বলা চলে যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া আরও জটিল হয়ে গেছে। এই বছরের লা নিনা উচ্চতর তাপমাত্রা, বর্ধিত বন্যা এবং তীব্র খরার প্রতিনিধি হতে পারে। উদ্বেগের বিষয় হলো এটি এমন একটি বিশ্বে প্রভাব ফেলবে যেখানে দুর্যোগের দ্বারা সম্পদ ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের জলবায়ু কেন্দ্রের পরিচালক মার্টেন ভ্যান অ্যালস্ট বলেছেন, আমরা এরই মধ্যে এটি খাপ খাইয়ে নিতে পারছি না এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।

দায়িত্বের প্রশ্নে সবাই সমান। নির্দিষ্ট করা বিপর্যয়গুলো এনসো দ্বারা ঘটার সম্ভাবনা বেশি ছিল কি না এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিঃসন্দেহে সেই ঘটনার তীব্রতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করছে। ঐতিহাসিকভাবে দূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ধনী দেশগুলো। যে সব দেশ এখন পর্যন্ত কার্বন নির্গমনের সবচেয়ে খারাপ পরিণতি থেকে রক্ষা পেয়েছে। এ বছরের চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনাগুলো মিশরে আসন্ন কপ২৭ এর জন্য একটি বিশেষ নাটকীয় পটভূমি তৈরি করেছে। এসব দুর্যোগের জন্য দায়ভার কে বহন করবে, কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং এর ফলে বিল কে বহন করবে তা নিয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত আলোচনার দরকার।

নিউজ ট্যাগ: পাকিস্তান

আরও খবর

রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন এরদোয়ান

মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট ২০২৩




বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮৭০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৭টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় নামে।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। নামাজের সময়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। নামাজের পর একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

জাতীয় মসজিদে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূরউদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।

৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


আরও খবর



জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৮৭৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত শুরু হয়।

ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।

ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, এবার জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭, ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।


আরও খবর



আজ ঈদ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৯৪৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রোজা শেষে আবারও এলো ঈদ। খুশির বার্তা নিয়ে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা পূর্ণ হলো। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেনে দেশবাসী।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল যে দিবসে তারা খেলাধুলা করতো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এ দুদিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুই দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৪)

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে।ঈদের দিন সকালে পুরুষদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বিশেষ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত তাকবিরসহ জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা এবং তারপর ঈদের খুতবা দেওয়া ও শ্রবণ করা। ঈদের নামাজ খোলা ময়দানে আদায় করা উত্তম। 

ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহে সম্ভব না হলে বায়তুল মোকাররমে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।  তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।  চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন  সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছে ১০ এপ্রিল। অফিস খুলবে ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন টানা ১০ দিন। লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হয়েছে কম। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সময় নিয়ে নিজের শেকড়ে ফিরতে পেরেছেন।

কর্মব্যস্ত এই নগরীর সবাই যখন ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছেড়েছেন তখন এই ঢাকা হয়ে উঠেছে এক অন্য শহর। বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র, নেই চিরচেনা রূপ। এখন আর ঢাকার সড়কে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। মুহূর্তেই চলে যাওয়া যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

এদিকে দেশের সবার জন্য সুখী, আনন্দময় ও নিরাপদ ঈদুল ফিতরের কামনা করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।

রাজনৈতিক নেতাদের অধিকাংশই নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবার। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করবেন, আবার কেউ নামাজ শেষে যাবেন এলাকায়। সব মিলিয়ে  নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তারা, যোগ দেবেন সামাজিক অনুষ্ঠানেও।


আরও খবর