তেল কোম্পানিগুলোর বৃহস্পতি এখন তুঙ্গে। কিছুদিন আগেই খবর আসে, বিশ্বের বৃহৎ তেল কোম্পানিগুলো গত এক বছরে রেকর্ড পরিমাণ আয় করেছে। এবারে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, তেলের দাম বাড়ার কারণে মধ্যপ্রাচ্যের তেল কোম্পানিগুলো আগামী ৪ বছরে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি ডলার আয় করতে পারে।
আইএমএফ এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ধারণা করছে যে মধ্যপ্রাচ্যের তেল-গ্যাস রপ্তানিকারকেরা বিশেষ করে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের কোম্পানিগুলো তেলের উচ্চ দামের কারণে বিপুল মুনাফা করবে। রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা করলে তেলের বাজারে ওলটপালট শুরু হয়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়।
রাশিয়ার তেল-গ্যাস রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও তেলের উচ্চমূল্যের কারণে তারা লাভবান হয়। এশিয়ার দেশগুলোতে রাশিয়ার তেল রপ্তানি বাড়ে। বিশ্বের দুই বৃহৎ তেল আমদানিকারক চীন ও ভারত মূল্যছাড়ে রাশিয়া থেকে তেল কিনতে শুরু করে। তেল কোম্পানিগুলোর অর্জিত মুনাফা ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করা উচিত। বিশেষ করে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে রূপান্তরের যে চেষ্টা চলছে, সেই প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত করা। আর প্রযুক্তির উন্নতিতে বিনিয়োগ করলে তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়বে।
এদিকে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত ও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তেল কোম্পানি সৌদি আরামকো সম্প্রতি জানিয়েছে, এ বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তারা ৪ হাজার ৮৪০ কোটি ডলার (বাংলাদেশের ৪ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা) মুনাফা করেছে। সৌদি আরামকো চলতি বছরের শুরুতে কিছুদিনের জন্য অ্যাপলকে ছাড়িয়ে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিতে পরিণত হয়েছিল। তবে এখন তালিকায় আরামকোর অবস্থান দ্বিতীয়।
তেল কোম্পানিগুলোর মুনাফা প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, বৈশ্বিক সংকট কাজে লাগিয়ে অনেক তেল-গ্যাস কোম্পানি মুনাফার রেকর্ড করেছে, যা অনৈতিক। তিনি বিভিন্ন দেশের সরকারকে এসব কোম্পানির ওপর অধিক হারে করারোপের আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে করের অর্থ চরম অভাবগ্রস্ত মানুষদের সহায়তায় ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।