লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন পলাতক
বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী। করোনা আক্রান্ত হয়ে দেশটির একটি হাসপাতালে তিন মাস আগে তার
মৃত্যু হলেও বিষয়টি জানা যায় গতকাল।
হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই ও সিলেট জেলা
বিএনপির সহসভাপতি আশিক চৌধুরী ফেসবুকে মৃত্যুর বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ স্ট্যাটাস দেন। তিন
মাস আগে হারিছের জীবনাবসান হলেও পরিবারের সদস্যরা এতোদিন সেই সংবাদ গোপন রেখেছিলেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে আশিক চৌধুরী লিখেন-
‘ভাই বড় ধন, রক্তের
বাঁধন’। হারিছের একটি
ছবি যুক্ত করে আশিক এ স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসের নিচে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা
‘ইন্না লিল্লাহি
ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ লিখে কমেন্ট দিতে থাকেন।
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর
রাজনৈতিক সচিব ছিলেন হারিছ চৌধুরী। সে সময়ের প্রভাবশালী এই নেতা বিএনপি ক্ষমতাচ্যুত
হওয়ার পরই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
পালিয়ে যাওয়ার পর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা
মামলায় ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল
ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হারিছ চৌধুরীর সাত বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়।
এছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া
হত্যা মামলায় হারিছ চৌধুরী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ২৮ জনের
বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর হারিছ চৌধুরী সস্ত্রীক
তাঁর গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে আসেন। রাত ১২টার পর তাঁর ব্যক্তিগত
সহকারী আতিক মোবাইল ফোনে জানান, ঢাকায় বিএনপি নেতাদের বাসভবনে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে।
কয়েক ঘণ্টা পর যৌথ বাহিনী হারিছের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু তার আগেই তিনি সরে পড়েছিলেন।
কিছুদিন সিলেটে এখানে-ওখানে লুকিয়ে থাকার পর ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত
দিয়ে রাতের আঁধারে ভারতে চলে যান। ভারতের আসামে করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে তাঁর নানাবাড়ি।
সেখানেই তিনি ওঠেন। সেখান থেকেই বিদেশে যাতায়াত করতেন। সূত্র জানান, ব্যবসা-বাণিজ্যও
দেখভাল করতেন ওখানে থেকেই। হারিছ চৌধুরী স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে যুক্তরাজ্যে থাকতেন।