রাজধানীর শাহজাহানপুরে
আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও শিক্ষার্থী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যার ঘটনায়
মো. খায়রুল আলম ওরফে খায়রুল নামে একজনকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১৭ অক্টোবর)
বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে
জামিন দিয়ে রুল জারি করেন।
আদালতে জামিন
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ কে এম ফয়েজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি
অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ কামরুল হাসান খান (আসলাম)।
পরে আইনজীবী এ
কে এম ফয়েজ জানান, মামলার এজাহারে খায়রুলের নাম ছিল না। হাইকোর্ট তাকে জামিন দিয়ে রুল
জারি করেছেন।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি
জেনারেল এম এ কামরুল হাসান খান (আসলাম) জানান, এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন
করা হবে।
গত ৩০ জুলাই রাতে
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে খায়রুলসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের রিমান্ডে
নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে ৩ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ তাদের
কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
খায়রুল ছাড়া বাকিরা হলেন- জাতীয় পার্টির (জাপা)
নেতা জুবের আলম খান রবিন, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান টিটু ও আরিফুর রহমান সোহেল।
টিপু ও প্রীতি
হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে
মূল পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়কারী হিসেবে মুসার নাম আসে। পরে জানা যায়, মুসা ঘটনার আগেই
গত ১২ মার্চ দেশ ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত চলে যান। পুলিশ সদর দপ্তর গত ৮ এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্যের
বিভিন্ন দেশে ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করে। গত ৮ মে জানা যায়, মুসা দুবাই
থেকে ওমানে প্রবেশ করেছেন। এরপর ইন্টারপোলের ওমান পুলিশ এনসিবির সহযোগিতায় গত ১২ মে
মুসাকে গ্রেফতার করে। পরে গত ৯ জুন বাংলাদেশ পুলিশের একটি টিম ওমানে গিয়ে মুসাকে দেশে
ফিরিয়ে আনে। গত ১০ জুন মুসার ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ইন্টারপোলের মাধ্যমে
মুসাকে দেশে ফেরানোর পর একাধিক দফায় হেফাজতে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর আদালতে
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন মুসা। কিলিং মিশনে কার কী ভূমিকা ছিল সেটি তার বক্তব্যে
উঠে আসে। মুসার তথ্য যাচাই করতে বিভিন্ন সময় আরও কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে
ডিবি। এর মধ্যে টিপু হত্যা পরিকল্পনায় টিটু, রবিন ও সোহেলের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলে।
চারজনের মধ্যে টিটু সবচেয়ে দুর্ধর্ষ। আসামিদের সঙ্গে অপরাধ জগতের যোগসূত্র দীর্ঘদিনের।
যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্ক্কীর সঙ্গে এক সময় তার ঘনিষ্ঠতা ছিল।
নিহত টিপু সরকারি
নানা দপ্তরের ঠিকাদারি করতেন। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য
ছিলেন। ওমর ফারুক যে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, সেই এলাকায় একটি রেস্তোরাঁর
মালিক ছিলেন টিপু, যেখানে তিনি নিয়মিত বসতেন।
ওই হোটেল থেকে
মাইক্রোবাসে সঙ্গীদের নিয়ে ফেরার পথে গত ২৪ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মতিঝিল এজিবি
কলোনি কাঁচাবাজার সংলগ্ন রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় ফেরার পথে শাজাহানপুর আমতলা ইসলামী
ব্যাংক হাসপাতালের সামনে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা
আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী প্রীতি। এছাড়া
টিপুর গাড়িচালক গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময় আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।