প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার মেধাবী জাতি গঠনে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। আজ রবিবার
(২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন
প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল মিল্ক কর্মসূচির
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা জানান।
এ সময় মন্ত্রী
বলেন, একটি জাতি মেধাবী না হলে সে দেশ কোনদিন এগিয়ে যেতে পারে না। এটি সবচেয়ে ভালো
বোঝেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আজ জাতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি
শিক্ষার উন্নয়নে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যাল, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠা, কারিগরি শিক্ষার প্রসার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ, গবেষণায়
বরাদ্দসহ শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করছেন। স্কুলের শিক্ষার্থীরা যাতে গতানুগতিক
পড়াশোনার বাইরে আনন্দের মধ্যে লেখাপড়া করতে পারে সেজন্য তাঁর সরকার স্কুল দৃষ্টিনন্দন
করা, খেলাধুলার ব্যবস্থা করা, ডিজিটাল ব্যবস্থা করাসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন,
শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে ভালো খাবার প্রয়োজন। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান খাদ্য দুধ।
নিয়মিত দুধ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। নিয়মিত দুধ খেলে পুষ্টি চাহিদা পূরণ
হয়। এ জন্য শিক্ষার্থীরা মেধা বিকাশে দুধ খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই বর্তমান
সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের ভালো খাবারের
ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ আলোকেই স্কুল মিল্ক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা
হচ্ছে। এ কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
প্রাণিজ পুষ্টির যোগান পাবে, সুস্থ-সবলভাবে বেড়ে উঠবে। যার মাধ্যমে একটি মেধাবী জাতি
গড়ে উঠবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিপন্ন মানুষদের বেদনা বোঝেন। সেজন্য তিনি
ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান দূর করতে কাজ করছেন। তিনি উন্নয়নের সমতা নিশ্চিত করতে চান। সেজন্য
শহরের মতো গ্রামেও সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোটা জাতিকে নিয়ে
উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করছেন।
বিশেষ অতিথির
বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে
দুধের গুরুত্ব অনুধাবন করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কোমলমতি শিশুদের মাঝে স্কুল
মিল্ক কর্মসূচির মাধ্যমে নিরাপদ ও পুষ্টিকর দূর সরবরাহের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এ
কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিশুদের সুস্থ, সবল ও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠার এক নতুন
অধ্যায় সংযোজন হবে। যা আগামী দিনে শিশুদের বিদ্যালয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করবে। বিশেষ
করে দরিদ্র অঞ্চলে স্কুল থেকে ঝরে পড়া রোধ করতে এ কর্মসূচি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
প্রাণিসম্পদ
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি
হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ
এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত। অনুষ্ঠানে স্বাগত
বক্তব্য প্রদান করেন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম
এবং স্কুল মিল্ক কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান কারিগরি
সমন্বয়ক ড. গোলাম রব্বানী। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ
ও ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠান
শেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের দুধ পান করানোর মাধ্যমে কর্মসূচির
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে ইসলামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৫১জন শিক্ষার্থীকে
দুধ পান করানো হয়।
সরকারের মৎস্য
ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায়
দেশের ৩০০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বছরব্যাপী বিনামূল্যে দুধ পান
করানোর এ পাইলট কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ উদ্বোধনের পরপরই ৫০টি স্কুলে এ কর্মসূচি
শুরু হয়ে যাবে এবং এ বছরের মধ্যেই অন্যান্য স্কুলে ক্রমান্বয়ে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন
করা হবে। প্রকল্পের আওতাভুক্ত ৬১ জেলায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্বাচিত
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীকে স্কুল খোলা থাকার দিনগুলোতে
টিফিনের সময় দুধ প্রদান করা হবে।