শুধুমাত্র টঙ্গীর যানজটে যানবাহনের জ্বালানি খরচসহ দৈনিক ১০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মো. আমিনুল হক শামীম।রোববার (১৭ এপ্রিল) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত পরিবহন ও যোগাযোগ (রেল, সড়ক ও মহাসড়ক) বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
করোনায় ১৮ মাস
গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও সরকারের কাছ থেকে কোন সহায়তা পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি বলেন, খেলাপি হওয়া
এড়াতে, আয় না থাকলেও ব্যাংক ঋণের কিস্তি নিয়মিত পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদের। এমন পরিস্থিতিতে
আগামী বাজেটে টায়ার, টিউব ও অন্যান্য যন্ত্রাংশের ওপর বাড়তি শুল্ক-কর আরোপ না করার
আহ্বান জানান।
ঈদে ঘরমুখী
মানুষের ভোগান্তি কমাতে বিভিন্ন সড়কে চলমান সংস্কার ও নির্মাণ কাজ ঈদের আগে পরে মোট
চৌদ্দদিন বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
মোস্তফা আজাদ
চৌধুরী বাবু বলেন, বিভিন্ন সড়কে সংস্কার ও নির্মাণ কাজ চলায় যানবাহনের গতি ধীর হয়ে
যায়। যা দীর্ঘ যানজট তৈরি করে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি কমাতে তাই ২৭ এপ্রিল থেকে
১০ মে পর্যন্ত সকল প্রকার সংস্কার ও নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান তিনি।
যেসব পয়েন্টে
বেশি যানজট হয় সেসব স্থানে সার্বক্ষণিক হাইওয়ে পুলিশ মোতায়েনেরও আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়াও সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারি সংস্থাগুলোর কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান
অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ও পুলিশের মহা পরিদর্শককে শিগগিরই চিঠি পাঠাবে এফবিসিসিআই।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের
মানুষদের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি কমাতে মাওয়া ও আরিচায় বাড়তি ফেরি ও ফেরির ট্রিপের সংখ্যা
বাড়ানোরও আহ্বান জানান সিনিয়র সহ-সভাপতি। এসময় তিনি পদ্মাসেতুর টোল নির্ধারণে এফবিসিসিআই,
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও বাস ট্রাক মালিক সমিতিকে সম্পৃক্ত করার দাবি জানান।
কমিটির চেয়ারম্যান
ও বাংলাদেশ বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এর চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, রাজধানীর
জয়কালী মন্দির ও ইত্তেফাক মোড়ে প্রতি রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেআইনিভাবে চাঁদা
তোলেন। চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সহায়তা চান তিনি।
করোনাকালে সবচেয়ে
বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাত হিসেবে গণপরিবহন খাত চিহ্নিত করে রমেশ চন্দ্র ঘোষ আগামী তিন বছর
এখাতে নীতি সুরক্ষা দেয়ার আবেদন জানান। আগামী বাজেটে বাড়তি কোন করভার আরোপ না করার
আহ্বান করেন তিনি।
কমিটির অন্যান্য
সদস্যরা তাদের বক্তব্যে বলেন, ভাঙাচোরা সড়কের কারণে যানবাহনের স্থায়ীত্ব কমে যাচ্ছে।
যানজট কমাতে ও সড়কে শৃঙ্খলা আনতে সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থাপনা, সেবার বিকেন্দ্রীকরণ,
বিআরটিএ কে কার্যকর করা, ফিটনেস সনদের নামে ঘুষবাণিজ্য ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান
তারা।
অন্যান্যদের
মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, সাবেক পরিচালক আব্দুল হক, মহাসচিব মোহাম্মদ
মাহফুজুল হক, স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, এম হুমায়ুন
কবীর, ফারুক তালুকদার সোহেল, প্রকৌশলী গোলাম কবীর, জি রহমান শহীদ, বজলুর রহমান রতনসহ
অন্যান্য সদস্যরা।