গাজীপুরের টঙ্গীর বিসিক
এলাকায় পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ
শ্রমিকরা বিসিক এলাকার চারটি পোশাক কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালায়। পরে
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ১০ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড
ও ৬ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় পুলিশসহ ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন
বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষের
ঘটনা ঘটে। পরে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ৩টি পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
আহত শ্রমিকরা হলেন শাহিনুর
আক্তার (১৮), নুর মোহাম্মদ (২৫), তাসলিমা (২৬), জিয়া (২৫), মনিরুল (২৪), সাফিনা আক্তার
(১৮), মুক্তি আক্তার (৩২), কামাল (২৩)। এদের মধ্যে মুক্তি ও কামালকে প্রাথমিক চিকিৎসা
শেষে বাড়ি পাঠিয়ে দিলেও বাকিদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও শহীদ আহসান
উল্লাহ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
টিভলি অ্যাপারেলস লিমিটেডের
শ্রমিক সারোয়ার উদ্দিন ও খায়রুল হক বলেন, শনিবার (২৯ জানুয়ারি) কারখানার ফিনিশিং সেকশনের
কাজ করা রিপা আক্তারকে লাঞ্ছিত করেন একই কারখানার পঞ্চম তলার উৎপাদন ব্যবস্থাপক লুৎফর
রহমান। এ সময় তিনি রিপাকে ধাক্কা দিয়ে কারখানা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। বিষয়টি
জানাজানি হলে ওইদিনই বিচারের দাবিতে শ্রমিকরা উৎপাদন কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করে।
পরে শ্রমিকরা ১২টি দাবি উল্লেখ করে মালিক পক্ষের নিকট একটি দাবিনামা জমা দেয়।
সোমবার (৩১ জানুয়ারি) শ্রমিকরা
উৎপাদন কাজে যোগ না দিয়ে বাসায় চলে যায়। মালিকপক্ষ মঙ্গলবার সকালে অনির্দিষ্টকালের
জন্য কারখানাটি বন্ধ ঘোষণার নোটিশ ফ্যাক্টরির সামনে টাঙ্গিয়ে দেয়। এতে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ
হয়ে ওঠে। পুলিশ বাঁধা দিলে শ্রমিকরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময়
পুলিশ গ্যাসগান ও শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পরে শ্রমিকরা সুমি অ্যাপারেলস
লিমিটেড, আর বি এস আর ফ্যাশন লিমিটেড এবং বিসিক ফকির মার্কেটে জড়ো হয়ে পুলিশের উপর
ত্রিমুখী হামলা চালায়। পরে পুলিশ ৩০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি, ১০ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড
ও ৬ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আবারো শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শ্রমিকরা চলে যাওয়ার
সময় সুমি অ্যাপারেলস লিমিটেড, আর বি এস আর ফ্যাশন লিমিটেড ও রেডিসন অ্যাপারেলস লিমিটেড
কারখানায় ভাঙচুর চালায়। পরে ওই কারখানা তিনটির কর্তৃপক্ষ ছুটি ঘোষণা করেন।
টিভলি অ্যাপারেলস লিমিটেডের
কর্মকর্তারা জানান, শ্রমিকরা উৎপাদন ব্যবস্থাপকের অপসারণ চেয়েছিল। আমরা তা মেনে নিয়েছি।
কিন্তু বহিরাগত কিছু শ্রমিক নেতা সাধারণ শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি
সৃষ্টি করেছে। তাই বিষয়টি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিজিএমইএর
সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।