রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সের্গেই ল্যাভরভ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ‘প্রকৃতি’ বিপদ সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করেছেন। তবে এর মধ্যেও
ইউক্রেনের সাথে শান্তি আলোচনা অভ্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি ।
ল্যাভরভ সোমবার
বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স-এর কাছে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বিপদটি গুরুতর, এটি বাস্তব, আপনি এটিকে
অবমূল্যায়ন করতে পারবেন না।’
শান্তি আলোচনার
ব্যাপারে কিয়েভের দৃষ্টিভঙ্গির সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, ‘শুভেচ্ছার সীমা আছে। কিন্তু এটি যদি পারস্পরিক
আন্তরিকতাপূর্ণ না হয় তবে তা আলোচনা প্রক্রিয়াকে সাহায্য করতে পারবে না।’
ল্যাভরভ ইউক্রেন
ইস্যুতে ন্যাটোর সমালোচনা করে বলেছেন,ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্র সরবরাহের অর্থ হল, ন্যাটো
জোট এক অর্থে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর পাঠানো এসব অস্ত্র বিশেষ
অভিযানের প্রেক্ষাপটে রুশ সামরিক বাহিনীর বৈধ লক্ষ্য হবে।
তিনি বলেন, ‘পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার সঙ্গে
এক অর্থে যুদ্ধে লিপ্ত। তারা ছায়াযুদ্ধ করে যাচ্ছে এবং অস্ত্র জুগিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধ
অর্থ যুদ্ধই।’
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ল্যাভরভ পারমাণবিক সংঘাত বৃদ্ধির আশঙ্কার কথা স্বীকার করেছেন। অবশ্য তিনি শান্তি চুক্তির
সম্ভাবনা সম্পর্কে একটি আশার কথা শুনিয়েছেন।
ল্যাভরভ বলেন,
‘পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি যথেষ্ট। তবে মস্কো
এ ধরনের সংঘাতের কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট ঝুঁকি এড়াতে চায়। এ অবস্থানের ওপরে ভিত্তি করে
আমরা সবকিছু করছি। আমি কৃত্রিমভাবে সে ঝুঁকি বাড়াতে চাই না। তবে অনেকে তা চাইবেন।’
ল্যাভরভ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বিরুদ্ধে আলোচনার ভান করার অভিযোগ তুলে তাঁকে একজন ভালো অভিনেতা বলে মন্তব্য করেন। রাশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, ‘যদি আপনি মনোযোগ সহকারে দেখেন এবং জেলেনস্কি যা বলেছেন তা মনোযোগ সহকারে পড়েন, আপনি হাজার স্ববিরোধিতা খুঁজে পাবেন।’
এদিকে ল্যাভরভের
বক্তব্যের পর ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুবেলা টুইট করে বলেন, ‘ইউক্রেনকে সমর্থন করা থেকে বিশ্বকে ভয়
দেখানোর আশা শেষ হয়ে গেছে রাশিয়ার। লাভরভের সাম্প্রতিক মন্তব্যগুলোতে সে ইঙ্গিত ছিল।
এ কারণের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রকৃত বিপদের কথার অবতারণা করা হয়েছে। এর একমাত্র অর্থ,
ইউক্রেনে নিজেদের পরাজয়ের আঁচ পেতে শুরু করেছে মস্কো।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি
ইউক্রেনে হামলা শুরুর কয়েক দিন পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর পারমাণবিক
বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন। যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ন্যাটো মিত্ররা বলেছে, তৃতীয়
বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি এড়াতে ইউক্রেনে সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ চায় না তারা।