ঋতুর পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের হিমালয় পাদদেশীয় সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামে বাড়তে শুরু করেছে শীতের প্রকোপ। সন্ধ্যা থেকে সকাল, ঝরে পড়ছে শিশির। সেইসঙ্গে কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকছে প্রকৃতি। মধ্যরাত থেকে ঘন কুয়াশা পড়ায় সতর্কতার সঙ্গে যানবাহন চালাচল করছে।
শীত বাড়তে থাকায় বাড়ছে শীতজনিত নানা রোগ। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট রোগীর ভিড় বাড়ছে। বিশেষ করে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। কুড়িগ্রাম জেলা শহরের ভ্যানগাড়ি চালক মানিক মিয়া জানান, দিনের বেলা ঠান্ডা কম থাকলেও সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোরবেলা ঠান্ডা বেশি থাকায় দেরিতে কাজে বের হতে হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. শাহিনুর রহমান সরদার জানান, কুড়িগ্রামে ইতিমধ্যে শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। তাই শীতজনিত ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপজনিত কারণে হাসপাতালে আগের চেয়ে অনেক বেশি রোগী আসছে।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুহিন মিয়া জানান, দিন দিন এই অঞ্চলের তাপমাত্রা হ্রাস পাচ্ছে। শীতের তীব্রতা বাড়ছে। গত কয়েকদিন ধরে এই অঞ্চলে তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি থেকে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু অথবা মাঝারি আকারের শৈতপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে আমাদের সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতা জানিয়েছেন, শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করেছে উত্তরের জনপদ নীলফামারীতে। সন্ধ্যার পর তাপমাত্রা কমে ১৪ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। কুয়াশার কারণে দিনেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। গত তিন থেকে চার দিন ধরে এ অঞ্চলে সূর্যের দেখা মিললেও গরমের তীব্রতা একেবারেই নেই। সন্ধ্যার পর থেকে বইছে ঠান্ডা বাতাস, মাঝারি কুয়াশায় ঢেকে আছে সৈয়দপুরের শহর-গ্রাম। সকাল ৮টা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। ঠান্ডা জেঁকে বসতে শুরু করায় বাড়ছে ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ।
শীতবস্ত্রের অভাবে কোনোমতে পুরোনো কাঁথা-কম্বল জড়িয়ে রাত পার করছে তারা। পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। এদের মধ্যে শিশুরাই বেশি। শীতের তীব্রতায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে জমে উঠতে শুরু করেছে শীতের পুরোনো কাপড়ের দোকান। তবে গত বছরের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি।