ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর নতুন নিয়োগব্যবস্থা ‘অগ্নিপথ’ পরিকল্পনার বিরোধিতা করে তরুণ-যুবারা গত চার দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে অন্তত আটটি রাজ্যে। এরই মধ্যে হায়দ্রাবাদের সিকান্দারাবাদে সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অনেকে। সারা দেশে ১২টির মতো ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার জেরে শনিবার থেকে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে ৩৫০টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। বিহারে একটি রেলওয়ে স্টেশন ও একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের বিরুদ্ধে একটি অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করারও অভিযোগ উঠেছে। বিক্ষোভকারীদের ইট-পাটকেল ও পাথর নিক্ষেপে নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন।
চলমান এসব বিক্ষোভ-সহিংসতার কারণে অন্তত ১২টি ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভ ঠেকাতে বেশ কয়েকটি শহরে সংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশও জারি করা হয়েছে। এরই মধ্যে উত্তর প্রদেশের বালিয়ায় অজ্ঞাত ৪০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়া দিল্লির কাছে গৌতম বুদ্ধনগরে যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে হামলা করার অভিযোগে অজ্ঞাত ২২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। গত তিন দিনে প্রায় ৬২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৩০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হরিয়ানার মহেন্দরগড়ে বিক্ষোভকারী যুবকেরা একটি পিক-আপ ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া সোনিপাত, কাইথাল, ফতেহাবাদ, জিন্দেও বিক্ষোভ করেছেন তরুণেরা। রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন ভারতের যুবকেরা এবং আলওয়ারে জয়পুর-দিল্লি হাইওয়ে অল্প সময়ের জন্য অবরোধ করেছিলেন তাঁরা। এদিকে অগ্নিপথ নিয়ে সরব হয়েছেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতারাও। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে ‘সত্যাগ্রহ’ আন্দোলনে বসার ঘোষণা দিয়েছেন।
এরই মধ্যে অগ্নিপথ প্রকল্পের কিছু নিয়ম পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে ভারত সরকার। ভারতের কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ) ও আসাম রাইফেলসে ‘অগ্নিবীরদের’ জন্য ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষণ এবং নিয়োগের বয়সসীমা তিন বছর শিথিল করার কথা বলেছে। তবু থামছে না আন্দোলন। রবিবার (১৯ জুন) চতুর্থ দিনের মতো বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ চলছে।