ভারতের পাম অয়েল আমদানি কমে ১১ বছরের সর্বনিম্নে নামার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে আমদানি ১৯ শতাংশ কমতে পারে। কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে পাম অয়েলের তুলনায় সয়াবিন তেল অনেক সস্তা। অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়ার পাম অয়েল রফতানি নিষেধাজ্ঞায় সয়াবিন তেলের বাজার হিস্যাও বেড়েছে। পাশাপাশি নয়াদিল্লি শুল্কমুক্ত সয়াবিন তেল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে।
এদিকে বিশ্বের শীর্ষ ভোজ্যতেল আমদানিকারক দেশটি থেকে আমদানি কমে গেলে চাপের মুখে পড়বে মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের বাজারদর। এছাড়া রেকর্ড পরিমাণ সয়াবিন তেল আমদানিরও সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মার্কিন সয়াবিন তেলের ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আগামী ৩১ অক্টোবর ভারতে ২০২১-২২ বিপণন মৌসুম শেষ হবে। এ মৌসুমে দেশটির পাম অয়েল আমদানি কমে ৬৭ লাখ টনে নামতে পারে, যা ২০১০-১১ মৌসুমের পর সর্বনিম্ন। পাঁচজন ডিলারের করা গড় পূর্বাভাসে এ তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে ডিলাররা বলছেন, চলতি বছর সয়াবিন তেল আমদানি গত বছরের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মৌসুম শেষে আমদানির পরিমাণ দাঁড়াবে ৪৫ লাখ টনে।
অন্যদিকে চলতি ও আগামী অর্থবছরের জন্য ভারত সরকার ২০ লাখ টন পর্যন্ত অপরিশোধিত সয়াবিন তেল ও অপরিশোধিত সূর্যমুখী তেল আমদানিতে শুল্ক উঠিয়ে নিয়েছে। মূলত স্থানীয় বাজারে ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্প্রতি এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ভোজ্যতেল ব্রোকারেজ ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সানবিন গ্রুপের প্রধান নির্বাহী সন্দিপ বাজোরিয়া বলেন, বর্তমান শুল্ক অবকাঠামো পাম অয়েলের তুলনায় সয়াবিন তেল আমদানি অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে। অন্যান্য ডিলারও এ বিষয়ে একমত। জুনে সরবরাহের জন্য ভারতে প্রতি টন অপরিশোধিত পাম অয়েলের দাম প্রায় ১ হাজার ৭৭৫ ডলার প্রস্তাব করা হচ্ছে। এর মধ্যে ব্যয়, ইন্স্যুরেন্স ও জাহাজ ভাড়া অন্তর্ভুক্ত। অথচ একই সময় সরবরাহের জন্য অপরিশোধিত সয়াবিন তেল প্রস্তাব করা হচ্ছে টনপ্রতি ১ হাজার ৮৪৫ ডলার।
প্রসঙ্গত, টানা তিন সপ্তাহ পর গত সোমবার পাম অয়েল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। এরপর ধীরে ধীরে কমছে পণ্যটির দাম। তবে এখন পর্যন্ত রফতানি শুরু করতে পারেনি দেশটি। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কী পরিমাণ পাম অয়েল স্থানীয় বাজার সরবরাহের জন্য রাখা হবে, কতটুকু সরকারকে সরবরাহ করতে হবে তা নির্ধারণ করার আগে রফতানি চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।