Logo
শিরোনাম

ভেজাল ওষুধ বন্ধ হবে কবে?

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ এপ্রিল ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৩ নভেম্বর 20২৩ | ২৬৯০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীসহ দেশে ভেজাল ও নকল ওষুধের সরবরাহ দিনের পর দিন বেড়েই চলছে। নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এসব ভেজাল ও নকল ওষধু খেয়ে অসুস্থ হওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো প্রকার ওষুধ খাওয়া যাবে না। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নকল ওষুধ প্রতিরোধের জন্য আপাতত দোকানদারকে ইনভয়েসের মাধ্যমে ওষুধ ক্রয়ের জন্য বলেছি এবং প্রেসক্রিপশন ছাড়া কাউকে কোনো প্রকার ওধুষ দেওয়া যাবে না।

এসব ভেজাল ওষুধের বিষয়ে সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, মানুষ আর কতভাবে প্রতারিত হবে। কোনটা ভেজাল আর কোনটা ভেজাল না সেটা আমরা কীভাবে বুঝব। এসব ভেজাল ওষুধ বন্ধ হবে কবে। রাজধানীর অলি গলিতে ও বড় বড় ওষুধ মার্কেটগুলোতে ভেজাল ও নকল ওষুধে সয়লাব! মানুষের রোগমুক্ত হয়ে বেঁচে থাকার অন্যতম অপরিহার্য উপাদান ওষুধ। সুস্থ জীবনযাপন করতে ওষুধের ব্যবহার কোনো না কোনো সময় করতেই হয়। জীবন রক্ষায় সহায়ক হিসেবে কার্যকরী সেই ওষুধই এখন জীবন ধ্বংসের কারণ! এমনটি কারো কাম্য না হলেও কিছু নৈতিকতা বর্জিত মানুষ মুনাফার লোভে উৎপাদন করছেন ভেজাল ও নকল ওষুধ। যা খেয়ে জীবন রক্ষা বা সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা, উল্টো মানবদেহ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ভেজাল ওষুধ খেয়ে অসুস্থ ব্যক্তিরা যা বলছেন: ভেজাল ও নকল ওষুধ সেবনের কারণে এক মাস ধরে অসুস্থ হয়ে ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন মুন্সিগঞ্জের স্বাধীন। স্বাধীন বলেন, 'একটি ভুল চিকিৎসা ও ওষুধের জন্য দিনের পর দিন আমাকে ভুগতে হচ্ছে।'

মিরপুরের শাপলা ফার্মেসির সহকারী নজরুলের দেওয়া ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন রিকশাচালক আবুল মিয়া। এ সময় আবুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, 'আমাকে নজরুল কী ওষুধ দিল, সেটা খেয়ে আমার পেটে জ্বালা করে, ব্যথা করে, পরে আমি হাসপাতালে ১৫ দিন ধরে ভর্তি আছি। আর আমি কোনো দিন ডাক্তার না দেখিয়ে ওষুধ খাব না। নিয়ম-কানুন মেনে স্বাভাবিক জীবনযাপন করেও মানুষ ভেজাল, মানহীন ওষুধের প্রভাবে দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। কেউ চরম কষ্টে জীবন পার করছেন, কেউবা অল্প বয়সেই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করছেন।

যা বলছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা: ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, সক্ষমতা অনুযায়ী চাহিদার ৯৫ শতাংশ ওষুধের জোগান দিচ্ছে প্রস্তুতকারক দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ছাড়া আমেরিকা, কানাডা, জাপানসহ বিশ্বের ১৫৬টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। মানসম্পন্ন ওষুধ তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসা কুড়ানোর পাশাপাশি ২০১৮ সালে মেডিসিন প্রডাক্ট অব দ্য ইয়ার পদকে ভূষিত হয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তবে এত সক্ষমতা অর্জন সত্ত্বেও বাজারে কেন ছড়াচ্ছে নকল ওষুধ, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরও।

প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো সমন্বয় করে অভিযান চালাচ্ছে। অধিদপ্তরও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। তবে জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট কম থাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিয়মিত নজরদারি ও অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান মেলে। পরে প্রতিষ্ঠিত ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের অভিযোগের ভিত্তিতে এসব কারখানায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানের পর ভেজাল ওষুধ তৈরির কার্যক্রম কিছুটা কমলেও নিয়মিত নজরদারি না থাকায় ফের তা শুরু হয়।

গোয়েন্দারা বলছে ভেজাল ওষুধ কারবারি চক্রের প্রধান টার্গেট ঢাকা: ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, ভেজাল ওষুধ ও নিম্নমানের ওষুধ কারবারি চক্রের প্রধান টার্গেট ঢাকা। এসব ওষুধ খেয়ে অনেক মানুষ অসুস্থ হচ্ছেন। রাজধানীর মিটফোর্ড ও এর আশপাশের এলাকায় এ চক্রের সদস্যরা কারখানা গড়ে তোলে। পরবর্তীকালে চাহিদা বাড়তে থাকায় কুমিল্লা ও বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গড়ে ওঠে কারখানা। এসব কারখানার তৈরি নকল ওষুধ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। যার কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রশাসনের অভিযানের সময়, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য ও বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধে সয়লাব। দেশে ওষুধ শিল্পের অভাবনীয় উন্নতি ঘটলেও ভেজাল ওষুধে ছেঁয়ে গেছে ফার্মেসিগুলো। ফলে ওষুধের মান নিয়ে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ওষুধ বিক্রির ব্যবসা, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা; এভাবে ওষুধ সংশ্লিষ্ট কাজে দীর্ঘ বছর যুক্ত থাকার সূত্র ধরে অসাধু ব্যক্তিরা জড়িয়ে পড়ছে ভেজাল ওষুধ উৎপাদনের কাজে। এ ছাড়া এক শ্রেণির নাম না জানা ওষুধ কোম্পানি বেশি লাভের আশায় নামীদামী কোম্পানির ওষুধ নকল করে বাজারে ছাড়ছে। চাহিদা সম্পন্ন বেশ কিছু ওষুধ নকল করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রগুলো। অনেকে ইউনানী বা আয়ুর্বেদিক ওষুধের লাইসেন্স নিয়ে উৎপাদন করছে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ। মেশাচ্ছে রং ও ঘনচিনি। এসব ওষুধই ছড়িয়ে যাচ্ছে অলিগলি ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের ফার্মেসিগুলোতে। যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে ভোক্তাদের।

অনুমোদিত ওষুধ কোম্পানির মাত্র অর্ধশত প্রতিষ্ঠান সঠিক পদ্ধতিতে ওষুধ তৈরি করে: সূত্রমতে, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত ওষুধ কোম্পানির সংখ্যা ২৮০টির মতো। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর মধ্যে মাত্র অর্ধশত প্রতিষ্ঠান পরিবেশ, উপাদানের মান ঠিক রেখে এবং সঠিক পদ্ধতিতে ওষুধ তৈরি করে থাকে। আর বেশিরভাগ কোম্পানি বাধাহীন চিত্তে ভেজাল উপাদান মিশিয়ে নকল ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করে যাচ্ছে। এ যেন মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা। যা চরম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিভিন্ন সময়ে রাজধানী ও আশপাশের জেলায় গড়ে ওঠা নকল ওষুধ তৈরির কারখানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালালেও এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববাজারে ১৪৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। ভেজাল ও নকল ওষুধ এই সুনাম ও আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। মফস্বলের ওষুধ ফার্মেসিগুলোকে টার্গেট করে অসাধুচক্র সারাদেশে ভেজাল ও নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এদিকে সম্প্রতি অসাধু একটি চক্র ধরার পর পুলিশ বলছে, একমি ল্যাবরেটরিজ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালসসহ বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের ওষুধ নকল করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিত তারা। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- তরিকুল ইসলাম, সৈয়দ আল মামুন, সাইদুল ইসলাম, মনোয়ার, আবদুল লতিফ, নাজমুল ঢালী ও সাগর আহমেদ মিলন। তাদের কাছ থেকে একমি কোম্পানির মোনাস-৭০০ বক্স, স্কয়ার কোম্পানির সেকলো-৫০ বক্স, জেনিথ কোম্পানির ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস-৭৪৮ বক্সসহ বিভিন্ন কোম্পানির বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ, ওষুধ তৈরির মেশিন, ডায়াস ও ওষুধের খালি বক্স উদ্ধার করা হয়।

এসব অপরাধের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, ডেমরা, কাজলা, আরামবাগ, লালবাগ ও মিটফোর্ড এলাকা থেকে কয়েকজন নকল ওষুধ প্রস্তুতকারকদের গ্রেফতার করা হয়। এই চক্রটি সারাদেশে নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলকে টার্গেট করে বহুল বিক্রিত ওষুধগুলো নকল করে তারা বাজারজাত করছিল। আমরা আট প্রকার নকল ওষুধ উদ্ধার করেছি। যেসব ওষুধ সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়, সেগুলোই নকল করে বাজারজাত করছিল চক্রটি। আসল ওষুধের প্রকৃত দামের তুলনায় অনেক কমদামে নকল ওষুধগুলো বাজারে বিক্রি হচ্ছিল। এগুলো মাদকের থেকেও ভয়ংকর। মানুষ সুস্থ হওয়ার জন্য ওষুধ সেবন করে। আর নকল ওষুধ সেবন করে মানুষ বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এদের ধরতে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছি।

এদিকে সম্প্রতি ঢাকা, সাভার ও পিরোজপুরে পৃথক অভিযান চালিয়ে এ চক্রের আট সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় সন্ধান মেলে নকল ওষুধ তৈরির কারখানার। নকল ওষুধ তৈরির যন্ত্র ও ছাঁচ উদ্ধার করে ডিবির লালবাগ বিভাগের কোতয়ালি জোন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির লালবাগ বিভাগের কোতয়ালি জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, এ চক্রের সদস্যরা আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির ভুয়া লাইসেন্স বানান। এ লাইসেন্স ব্যবহার করে তারা প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করে। এর মধ্যে সেকলো, মোনাস, মন্টিয়ার, সেফ-৩, নেপ্রোক্সেন প্লাসের মতো বহুল ব্যবহৃত ওষুধও রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা নকল ওষুধ প্রতিরোধের জন্য আপাতত দোকানদারকে ইনভয়েসের মাধ্যমে ওষুধ ক্রয়ের জন্য বলেছি। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া কাউকে ওষুধ দেওয়া যাবে না। কোম্পানির অনুমোদিত প্রতিনিধির কাছ থেকেই ওষুধ নিতে হবে। এর বাইরে নকল ও ভেজাল ওষুধ ঠেকানো সম্ভব না। স্যাম্পল ওষুধ কোনো দোকানদার বিক্রি করতে পারবে না। এটা আইনগত নিষিদ্ধ। এটা করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  ড্রাগস আইনে নকল ও ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান আছে ১০ বছর। তবে জরিমানার অঙ্ক নির্দিষ্ট না থাকলেও তা অনেক ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন হয় না। বিশেষ ক্ষমতা আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু মামলা হওয়ার পর তদন্তের ক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ফেলে নকল ওষুধ উৎপাদনকারীরা। তাদের টাকার অভাব নেই। নকল ওষুধে পুরোটাই লাভ।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, সম্প্রতি নকল প্যারাসিটামল খেয়ে ৫০০ শিশুসহ অনেক মৃত্যুর খবরও গণমাধ্যমে এসেছে। এদিকে গত ১২ আগস্ট এবং ২ এপ্রিল রাতে পৃথক দুই অভিযানে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরা। এরমধ্যে, ২ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ক্যান্সার ও করোনা মহামারিতে বহুল ব্যবহৃত দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ ও ওষুধ তৈরির সরঞ্জামসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ।

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. নাজমুল হক বলেন, নকল ওষুধ সেবন করলে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে ও বেশি অসুস্থ হয়ে যায় রোগীরা। এসব ওষুধ খেয়ে প্রতিনিয়তই মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। কিছু সুবিধাভোগী চিকিৎসক আছে, তারা বাড়তি কমিশনের আশায় প্রেসক্রিপশনে এসব নকল ওষুধের নাম লেখে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুগদা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ভেজাল ওষুধ বিপণন করা গণহত্যার সমান। এদের মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়া জরুরি। ওষুধ দেখে চিনতে হবে। কোনটা আসল আর কোনটা নকল ওষুধ।

নকল ওষুধ চেনার উপায়: ওষুধের প্যাকেটের গায়ে যে সিল থাকে সেটি ভালো করে দেখুন কোথাও কোনো গলদ আছে কি না। লেবেল একই আছে কি না। আগে যদি আপনি একই ওষুধ কিনে থাকেন তাহলে পরের বার কেনার সময় আগের প্যাকেটের সঙ্গে প্যাকেজিং, অক্ষরের ফন্ট, বানান, রং এগুলো মিলিয়ে দেখতে হবে। ওষুধ সেবনের আগে খেয়াল করুন ওষুধের রং, আকার, গঠন ঠিক আছে কি না। ওষুধের কোথাও কোনো ভাঙা অংশ আছে কি না। গুড়া ওষুধের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরিমাণে দেওয়া আছে কি না। এসব ভালো করে দেখুন। ওষুধ যদি ক্রিস্টালের মতো হয় তাহলে যথেষ্ট শক্ত কিংবা অতিরিক্ত নরম কি না দেখুন। আমরা বলতে পারি কিন্তু যারা ওষুধ সেবন করবেন তাদের বেশি করে খেয়াল রাখতে হবে আমরা সঠিক ওষুধ কিনছি কি না। সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছে এসব ভেজাল ও নকল ওষুধ কোম্পানিরা।

জানতে চাইলে ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের চিকিৎসক আব্দুল মালেক  বলেন, যারা সাধারণ মানুষকে এসব নকল ওষুধ দিয়ে ক্ষতি করছে তাদের বিচার হওয়া উচিত। নকল ওষুধ ও ফার্মেসির দেওয়া ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হয়ে আমার কাছে বেশ কিছু মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের বিভিন্ন পরীক্ষা করে বেশ কিছু জটিল সমস্যা পাওয়া গেছে। এসব নকল ওষুধের আক্রমণে অনেক মানুষ শারীরিকভাবে পঙ্গু হচ্ছেন। এসব বিষয়ে সরকার ও সাধারণ মানুষকে সর্তক হতে হবে। অন্যথায় সাধারণ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়তে থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, ভেজাল ওষুধ তো আমরা বা আমাদের সাধারণ মানুষ বোঝে না। যারা ভেজাল ওষুধ তৈরি করে অথবা বিক্রি করে তাদের আইনের আওতায় না আনলে, আমরা সাধারণ মানুষ বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব। প্রশাসনকে বলতে চাই, যারা ভেজাল ওষুধ তৈরি করে তাদের গ্রেফতার করে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হোক। তাহলে হয়তো এসব অপরাধ কমে আসবে।

নিউজ ট্যাগ: ভেজাল ওষুধ

আরও খবর

আতশবাজির আলোতে ঝলমলে রাজধানী

রবিবার ০১ জানুয়ারী ২০২৩

রসগোল্লার জন্মদিন আজ

মঙ্গলবার ১৫ নভেম্বর ২০২২




আজ ঈদ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৬৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রোজা শেষে আবারও এলো ঈদ। খুশির বার্তা নিয়ে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা পূর্ণ হলো। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেনে দেশবাসী।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল যে দিবসে তারা খেলাধুলা করতো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এ দুদিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুই দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৪)

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে।ঈদের দিন সকালে পুরুষদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বিশেষ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত তাকবিরসহ জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা এবং তারপর ঈদের খুতবা দেওয়া ও শ্রবণ করা। ঈদের নামাজ খোলা ময়দানে আদায় করা উত্তম। 

ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহে সম্ভব না হলে বায়তুল মোকাররমে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।  তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।  চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন  সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছে ১০ এপ্রিল। অফিস খুলবে ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন টানা ১০ দিন। লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হয়েছে কম। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সময় নিয়ে নিজের শেকড়ে ফিরতে পেরেছেন।

কর্মব্যস্ত এই নগরীর সবাই যখন ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছেড়েছেন তখন এই ঢাকা হয়ে উঠেছে এক অন্য শহর। বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র, নেই চিরচেনা রূপ। এখন আর ঢাকার সড়কে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। মুহূর্তেই চলে যাওয়া যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

এদিকে দেশের সবার জন্য সুখী, আনন্দময় ও নিরাপদ ঈদুল ফিতরের কামনা করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।

রাজনৈতিক নেতাদের অধিকাংশই নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবার। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করবেন, আবার কেউ নামাজ শেষে যাবেন এলাকায়। সব মিলিয়ে  নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তারা, যোগ দেবেন সামাজিক অনুষ্ঠানেও।


আরও খবর



বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৪০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৭টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় নামে।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। নামাজের সময়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। নামাজের পর একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

জাতীয় মসজিদে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূরউদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।

৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


আরও খবর



জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৪৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত শুরু হয়।

ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।

ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, এবার জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭, ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।


আরও খবর