ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের
প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নদীর পানি বেড়ে গেছে। এ কারণে জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে বেশ
কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ সময় পৃথক স্থানে পানিতে ডুবে মারা গেছে পাঁচ শিশু।
বুধবার (২৬ মে)
ইয়াসের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ো হাওয়ায় বিধ্বস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি। ডুবে গেছে
ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি।
১. বরিশালের বাকেরগঞ্জে
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ডুবে ২ শিশু মারা গেছে। বুধবার (২৬ মে) উপজেলার
পৃথক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত শিশুরা হলেন,
সুমাইয়া আক্তার (৩) উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের ঢালমারা গ্রামের হাফিজুর রহমানের মেয়ে।
আজওয়া আক্তার (৩) গারুরিয়া ইউনিয়নের রুনসী পশুরি গ্রামের আজগর আলীর মেয়ে ।
২. বাগেরহাটের
মোরেলগঞ্জের খাউলিয়া এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (২৬ মে) দুপুরের দিকে উপজেলার খাউলিয় ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত জিনিয়া আক্তার (৪) চালিতাবুনিয়ার নির্মাণ শ্রমিক কালাম গাজীর মেয়ে।
৩. নোয়াখালীর
হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে লিমা
আক্তার (৭) নামের এক শিশু।
বৃহস্পতিবার
(২৭ মে) সকাল পর্যন্ত নিখোঁজ শিশুটির কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন হাতিয়া
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন।
(৭) সুখচর ইউনিয়নের
চর আমান উল্যাহ গ্রামের বাবুল মিয়ার মেয়ে।
এ বিষয়ে হাতিয়া
থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, এ সংবাদ পেয়ে শিশুটির পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লিমাকে খোজা
হচ্ছে।
৪. ঘূর্ণিঝড় ইয়াস
ও পূর্ণিমার প্রভাবে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় বিষখালী নদীর পানি বেড়ে গেছে। এ সময়
পনি ডুবে মারা গেছে দুই শিশু। বুধবার (২৬ মে) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার মেডিকেল মোড়
সংলগ্ন ও বড়ইয়া এলাকায় পৃথক এই ঘটনা ঘটে।
৫. রাজাপুরে ব্যাপক
হারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বিষখালী নদীতে বেড়িবাঁধ না থাকায় পানি ঢুকে উপজেলার বিভিন্ন
এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই
সঙ্গে ভেসে গেছে কয়েকশ পুকুরের মাছ।
৬. মোংলায় ঘূর্ণিঝড়ের
প্রভাবে আশপাশের উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি
পেয়েছে। এতে পশুর নদীর বাঁধ সংলগ্ন কানাইনগর, চিলা ও জয়মনি এলাকার চারশতাধিক বসতঘর
তলিয়ে গেছে। চিংড়িসহ অসংখ্য মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে উপকূলীয় অঞ্চলের আশ্রয়কেন্দ্র
গুলোতে কেউ আসেননি
অতি জোয়ার বা
জলোচ্ছ্বাসে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, নোয়াখালী
ও লক্ষ্মীপুর জেলার ২৭টি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলো
হলো- আশাশুনি, শ্যামনগর, দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছা, মোংলা, শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, বরগুনা
সদর, মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা, আমতলী, পটুয়াখালী সদর, গলাচিপা, রাঙ্গাবালী, দশমিনা, মির্জাগঞ্জ,
কলাপাড়া, চরফ্যাশন, মনপুরা, দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন, ভোলা সদর, তজুমদ্দিন, হাতিয়া, কমলনগর
ও রামগতি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসকদের অনকূলে পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী ও অর্থ বরাদ্দ দেয়া আছে।