সিরাজগঞ্জ হার্টপয়েন্টে
গত ১২ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমেছে। মঙ্গলবার সকালে এখানে পানি ছিল
১২.৩৫ সেন্টিমিটার। বিকালে তা কমে গিয়ে ১২.২৫ সেন্টিমিটারে দাঁড়িয়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি
উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার হাসানুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গত ১২ ঘণ্টায়
১০ সেন্টিমিটার পানি কমে যাওয়ায়, নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে যমুনায়
বন্যার পানি কমতে থাকায় শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের আরকান্দি, ঘাটাবাড়ি, জালালপুর,
পাকুরতলা, কৈজুরি ইউনিয়নের ভেকা ও হাট পাচিল গ্রামে যমুনা নদীর ভাঙন আরও তীব্র আকার
ধারণ করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় এ ৬ গ্রামের অন্তত অর্ধশতাধিক বাড়িঘর যমুনা নদীগর্ভে বিলীন
হয়ে গেছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে প্রায় ২ শাতাধিক মানুষ।
গত ২৪ ঘন্টায়
পাচিল গ্রামে অন্তত ২০টি বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য গ্রাম মিলিয়ে
প্রায় অর্ধশত বাড়িঘর যমুনাগর্ভে চলে গেছে। সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব এসব অসহায় মানুষ শিশুসন্তানদের
নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
তাদের অভিযোগ চলতি পাচিল-আরকান্দি যমুনার তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ কাজের ঠিকাদারের
লোকজন স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে ভাঙ্গণ কবলিত বাড়িঘর রক্ষায় বালির বস্তা ফেলার নাম
করে জন প্রতি ২০ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নিলেও শেষ পর্যন্ত দাবি অনুযায়ী
আরও টাকা না দেয়ায় বস্তা ফেলা হয়নি। ফলে চোখের সামনে তাদের বাড়িঘর যমুনা নদীগর্ভে বিলীন
হয়ে গেছে।
তারা আরও বলেন,
সময়মতো বস্তা ফেলা হলে তাদের আজ এ অবস্থা হতো না। এজন্য তারা ঠিকাদারের লোকজনকে দায়ী
করেন। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে ঠিকাদারের লোকজন কেউ কথা বলতে রাজি হননি। ফলে তাদের বক্তব্য
পাওয়া যায়নি।এ বিষয়ে কৈজুরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খোকন বলেন, পাচিল
গ্রামে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের ঠিকাদারের গাফিলতিতে এ বছর গ্রামের মানুষ নদী
ভাঙনের কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছে। তারা সময়মতো বস্তা ফেললে এ ক্ষতি হতো না।
অপরদিকে জালালপুর
গ্রামের আলহাজ আলী, কামরুল ইসলাম, মহির মেম্বর, লালচান বলেন, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের
পাশে এখনো কেউ এসে দাঁড়ায়নি ফলে তাদের দিন কাটছে অর্ধাহার-অনাহারে। তারা রোদ-বৃষ্টিতে
ভিজে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এ বিষয়ে জালালপুর
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ সুলতান মাহমুদ জানান, তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল
পরিদর্শন করেছেন। এদের জন্য দ্রুত সাহায্য সহযোগিতা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি
অবহিত করেছি। কিন্তু এখনো কোনো বরাদ্দ পাইনি। পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরেজমিন এলাকা পরিদর্শন
করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।