যুদ্ধাপরাধের
দায়ে ফের দুই যুদ্ধবন্দি রুশ সেনার শাস্তি ঘোষণা করল ইউক্রেনের একটি আদালত। যুদ্ধ শুরুর
প্রথম দিকে খারকিভের দু’টি গ্রামে বিনা
প্ররোচনায় গোলাবর্ষণ ও হামলার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে আলেকজান্ডার ববিকিন এবং আলেকজান্ডার
ইভানোভ নামে ওই দুই সেনা। তাদেরকে ১১ বছরেরও বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি যুদ্ধাপরাধের
শুনানি শুরু হয়েছে ইউক্রেনে। গত সপ্তাহে তার প্রথম মামলায় নিরস্ত্র বৃদ্ধকে হত্যার
ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত ২১ বছর বয়সি এক রুশ ট্যাঙ্ক কম্যান্ডারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল
ইউক্রেনের আদালত। আজ আরও দুই রুশ সেনার দীর্ঘ কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়ে আদালত জানিয়েছে,
যুদ্ধের নিয়ম ভেঙে হামলা চালিয়েছ ওরা।
সূত্রের খবর,
রুশ সেনাদের আইনজীবীর তরফে সাজার মেয়াদ কমানোর জন্যে আবেদন করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের
নির্দেশের তারা ওই কাজ করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। অন্য দিকে, সোমবার রাতে ব্রাসেলসে
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বৈঠকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও কড়া অবস্থান নেওয়ার কথা জানিয়েছে
সংগঠনটি। এ দিনের বৈঠকে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধের বিষয়ে অবশেষে সমঝোতায় এসেছে
দেশগুলি।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ ঘোষণার পরে রাশিয়াকে অর্থনৈতিক ভাবে কোণঠাসা করতে সেখান থেকে তেল আর প্রাকৃতিক
গ্যাস আমদানির উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইইউ। কিন্তু তা পুরোপুরি
কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ ইউরোপের মোট আমদানিকৃত তেলের ২৫% এবং গ্যাসের ৪০%
শতাংশ সরবরাহ করে রাশিয়া। হাঙ্গেরির মতো কয়েকটি দেশ, যারা জ্বালানির জন্যে রাশিয়ার
উপরে অতিরিক্ত নির্ভরশীল, তারা কিছুতেই এ বিষয়ে রাজি হচ্ছিল না।
দীর্ঘ আলোচনার
পরে অবশেষে সংগঠনের নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আগামী ৬ মাসে রাশিয়া থেকে তেল ও গ্যাস
আমদানি ৯০ শতাংশ কমিয়ে ফেলা হবে। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ইইউয়ে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি
মিখাইল উলিয়ানভ টুইট করে বলেছেন, রাশিয়া অন্য ক্রেতা খুঁজে নেবে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে
আরও কড়া পদক্ষেপ করার পাশাপাশি ওই বৈঠকে ইউক্রেনের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে ইইউ।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে তারা দ্রুত ৯০০ কোটি ইউরো সাহায্য হিসাবে পাঠাচ্ছে বলে জানিয়েছে।
ইউক্রেনের অর্থনীতিকে
চাঙা করতে আগামী দিনেও ইউরোপের দেশগুলি এ ভাবেই নগদের জোগান দেবে বলে আশ্বস্ত করেছেন
সংগঠনের শীর্ষকর্তা শার্ল মিশেল। ইউক্রেনের প্রতি রাষ্ট্রের আগ্রাসী মনোভাবের বিরোধিতা
করে যে সব রুশ নাগরিকেরা রুখে দাঁড়িয়েছেন তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিল জার্মানি।
ওই নাগরিকদের অধিকাংশই রাজনৈতিক হিংসার শিকার হচ্ছেন এই দাবি করে জার্মান মন্ত্রী ন্যান্সি
ফেজার জানান, তাঁদের আশ্রয় দিতে অনুমতি প্রক্রিয়া সহজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি।
বিগত বেশ কিছু
দিন ধরে জর্জিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী অধ্যুষিত ওসেটিয়া প্রদেশ নিজেদের সীমান্তভুক্ত করার
চেষ্টা চালাচ্ছিল মস্কো। এ বিষয়ে ওসেটিয়ার রুশ-মদতপুষ্ট নেতা প্রথমে মস্কোকে ইতিবাচক
ইঙ্গিত দিলেও পরে সিদ্ধান্ত বদলালেন। ইঙ্গিত দিলেও পরে সিদ্ধান্ত বদলালেন। তিনি জানিয়েছিলেন,
১৭ জুলাই এ বিষয়ে তাঁরা পদক্ষেপ করবেন।
তবে আচমকাই সিদ্ধান্ত বদলের কথা জানিয়েছে সংগঠনটি। অন্য দিকে, মঙ্গলবার সিভিয়েরোডনেৎস্কের প্রশাসক দাবি করেছেন, রুশ আকাশ হানায় সে শহরের একটি রাসায়নিক কারখানা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিধ্বস্ত কারখানা থেকে ছড়িয়ে পড়ছে বিষাক্ত নাইট্রিক গ্যাস। শহরের উপর ভেসে থাকা গোলাপি রঙের ধোঁয়াপুঞ্জের ছবি পোস্ট করেছেন তিনি।