মুখ মাস্ক দিয়ে ঢাকা। পরনে কালো জিন্স আর নীল টি শার্ট। কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে নিজেই ট্রলি নিয়ে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে এলেন। ১১ বছর পর বাংলাদেশে পা রাখলেন বাংলাদেশের সাবেক কোচ জেমি সিডন্স। হাত নাড়িয়ে যেন বললেন,‘আমি এসে গেছি।’ বুধবার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছান তিনি।
২০১১ বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর বাংলাদেশের অন্যতম সফল কোচকে বিদায় বলে দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) । সিডন্স থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ ভরাডুবির কারণে বিসিবি তাকে রাখেনি।
দীর্ঘ সময় পর আবার বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হতে সিডন্স ফিরলেন। ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করবেন। শুরুতে তার কাজের জায়গা চূড়ান্ত ছিল না। বিসিবি যখন যেখানে সুযোগ পাবে সেখানেই তাকে কাজে লাগানোর কথা ছিল। তবে বোর্ড এখন তাকে জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে ব্যাটিং পরামর্শক অ্যাশওয়েল প্রিন্সকে হাই পারফরম্যান্সের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘সিডন্সকে মূলত বিসিবির ব্যাটিং কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা তাকে যখন যেভাবে সুযোগ পাই ব্যবহার করবো। তবে আমরা চাই সে এখন জাতীয় দল নিয়েই বেশি কাজ করুক। তার অভিজ্ঞতা আমরা ব্যবহার করতে পারলে আমাদের ক্রিকেটারদের জন্য ভালো হবে।’
বিমানবন্দর থেকে হোটেলে উঠেছেন সিডন্স। আপাতত তাকে হোটেলেই থাকতে হচ্ছে। বিপিএল চলাকালীন তার কাজে যোগ দেওয়ার সুযোগ নেই। বিপিএলের পরই আফগানিস্তান সিরিজ। সেই সিরিজ দিয়েই কাজ শুরু করবেন তিনি।
জেমি সিডন্স এর আগে ২০০৭ থেকে ২০১১ বিশ্বকাপ পর্যন্ত সাকিব-তামিমদের কোচ ছিলেন। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর চাকরি হারান। তবে ব্যাটিং কোচ হিসেবে তার দারুণ দক্ষতার কথা বরাবরই স্বীকার করে নেন মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিকরা। তাদের মতে সিডন্স তাদের ব্যাটিং উন্নতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন সেই সময়ে। তার অধীনে বাংলাদেশ ১৯ টেস্টের মধ্যে ২টি, ওয়ানডেতে ৮৪ ম্যাচের ৩১টি জিতেছে। তবে টি-টোয়েন্টিতে ৮ ম্যাচের কোনোটিতে জিততে পারেনি।
বাংলাদেশে ফিরতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত সিডন্স। এক ভিডিও বার্তায় বলেছিলেন,‘দুই বছর বাংলাদেশে কাটানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই বছরের অক্টোবরেই অস্ট্রেলিয়াতে আমাদের একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। আমি তরুণ কয়েকজন খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করতে মুখিয়ে আছি। শুধু জাতীয় দল নয়, জুনিয়র ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামেও কাজ করবো। আমি আগেও সেখানে কাজ করেছি। সেখানে কাজ করতে আমি ভালোবাসি।’
এদিকে অ্যাশওয়েল প্রিন্সের সঙ্গে বিসিবির চুক্তি চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তাকে হাই পারফরম্যান্সের দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানালেন জালাল ইউনুস, ‘প্রিন্সকে তখন আমরা হাই পারফরম্যান্স বিভাগের দায়িত্ব দিয়ে দিবো। এছাড়া অন্য কোথা দেওয়া যায় সেটি নিয়ে আমরা ভাববো। আমাদের তো অনেক কোচ লাগবে।’