আঞ্চলিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণে অবকাঠামো
উন্নয়নের মাধ্যমে পরিবহন খরচ ও ট্রানজিট সময় কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ ও নেপালকে ১০৩ কোটি
ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক।
‘এক্সিলারেটিং
ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রেড কানেক্টিভিটি ইন ইস্টার্ন সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক এ কর্মসূচির
আওতায় বাণিজ্য বাধা দূরীকরণে প্রথম কিস্তিতে বাংলাদেশ পাবে ৭৫ কোটি ৩৪ লাখ ডলার।
মঙ্গলবার বিশ্ব ব্যাংকের এক বিবৃতিতে জানানো
হয়, এ অর্থ দিয়ে সিলেট-চরকাই-শেওলা সড়ককে দুই লেইন থেকে চার লেইনে উন্নীত করা হবে।
তাতে শেওলা স্থলবন্দরের সঙ্গে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উন্নত যোগাযোগ গড়ে উঠবে; যাত্রার
সময় কমে আসবে ৩০ শতাংশ।
পাশপাশি এই ঋণের অর্থ দিয়ে বেনাপোল, ভোমরা
ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের ডিজিটাইজেশন, অবকাঠামো উন্নয়নে অর্থায়ন করা হবে। দেশের স্থলবন্দরকেন্দ্রিক
বাণিজ্যের ৮০ শতাংশই ওই তিন স্থান দিয়ে হয়ে থাকে।
তাছাড়া চট্টগ্রাম কাস্টমসের আধুনিকীকরণেও
এই অর্থ ব্যবহার করা হবে। দেশের ৯০ শতাংশ আমদানি-রপ্তানির আনুষ্ঠানিকতা চট্টগ্রাম কাস্টমসের
মাধ্যমেই সারা হয়।
বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে, এ কর্মসূচির আওতায় নির্বাচিত কিছু সড়ক করিডোর, স্থলবন্দর ও কাস্টম অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হবে, যেখানে পরিবেশের পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীলতা নিশ্চিত করা হবে। এর ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে নেপাল ও ভুটানের সড়ক যোগাযোগ আরও উন্নত হবে।
বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রেসিডেন্ট
হার্টউইগ শেফার বলেন, “বিপুল সম্ভাবনা থাকার পরও কাজে লাগানো
হয়নি- দক্ষিণ এশিয়ার এমন দেশগুলোর সেসব ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করছে রিজিওনাল ট্রেড কর্মসূচি।
বর্তমানে যে আঞ্চলিক বাণিজ্য হয়, তা দক্ষিণ এশিয়ার মোট বাণিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ, অথচ
পূর্ব এশিয়ায় এই হার ৫০ শতাংশ।
“দক্ষিণ এশিয়াও
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে জোরালো উন্নতি সাধন করতে পারে এবং বাণিজ্য ও কানেকটিভিটির মাধ্যমে
লাখ লাখ মানুষের জন্য সুযোগ তৈরি করতে পারে।”
২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে এসে বাংলাদেশ,
ভুটান, ভারত ও নেপালের মধ্যে বাণিজ্য ছয় গুণ বেড়েছে জানিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ
ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়ান টেম্বন বলেন, বাংলাদেশের সামনে আরও ৯৩ শতাংশ
আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
“বাংলাদেশের আঞ্চলিক
বাণিজ্য, পরিবহন ও অটোমেশনের মত ক্ষেত্রের উন্নয়নে ওই কর্মসূচি সহায়তা করবে, যার ফলে
কোভিড-১৯ মহামারীর মতো অভিঘাত মোকাবিলা করা সহজ হবে।”
বিশ্ব ব্যাংকের এ কর্মসূচির আওতায় সাড়ে
২৭ কোটি ডলার ঋণ পাচ্ছে নেপাল, যার মাধ্যমে দেশটির সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন করা হবে। ফলে
যাত্রার সময় কমার পাশাপাশি ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগের উন্নতি
ঘটবে।