কৃষিতে ভর্তুকি
দেওয়া থেকে সরে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন,
আমি কৃষকের সন্তান। আমিও নিজে কৃষক ছিলাম, আমার পাড়া প্রতিবেশীরাও কৃষিক। তবে ধীরে
ধীরে কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া থেকে সরে আসা উচিত। কারণ গ্রামের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। গ্রামের
বাড়ি ঘরের রূপ পরিবর্তন হয়েছে, ছেলে-মেয়ে পড়াশুনা করছে। সবাই ভালো আছেন। কিন্তু বৈশ্বিকভাবে
সারের দাম বাড়ছে।
শনিবার (৪ জুন)
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সিএ ভবনে আসন্ন বাজেটে ‘ক্ষুদ্র অর্থনীতি: প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী
বলেন, আবার ভীতিও আছে শ্রীলঙ্কা ভীতি। কারণ কৃষি ভর্তুকি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য দেওয়া
হয়। শ্রীলঙ্কাও অর্গানিক কৃষিতে গিয়েছিল, তারা ফেল করেছে। তাই কৃষিকে সবসময় আমরা গুরুত্ব
দিয়ে থাকি।
তিনি বলেন,
একনেক মাঠে আমি কাজ করি। আমরা অপচয় রোধ করতে কাজ করছি। মাঝে মাঝে আয়েশি ভাব করেছিলাম।
এটার রাশ টানতে হবে। ১৮০০ প্রকল্পের তালিকা আছি। এগুলোর গুরুত্ব অনুসারে সাজানো হবে।
কোনটা আগে প্রয়োজন কোনটা পরে প্রয়োজন সেটা বের করতে হবে।
রেমিট্যান্সে
প্রণোদনা দেওয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাসীরা দেশে খায়
না, দেশে থাকেন না অথচ নিট আয় দেয়। তবে ঢালাওভাবে দুই শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার পক্ষে
আমি নেই। যারা মাসে দুইশ থেকে তিনশ ডলার রেমিট্যান্স পাঠায় তাদের প্রণোদনা দেওয়ার পক্ষে।
মুক্ত বাণিজ্য
চুক্তি বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন বলেন, শুধু ভুটানের সঙ্গে এফডিএ হয়েছে। অথচ ভিয়েতনাম
১৮ থেকে ১৯টা দেশের সঙ্গে এই চুক্তি করেছে। কেন এফডিএ চুক্তি হয় না আমার জানা নেই।
সিপিডির বিশেষ
ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রধান
অন্তরায়। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা দূর করতে হবে। যেমন- এখনো এনবিআর এর কর আদায়ে অনেক
ঘাটতি আছে। মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কিন্তু রেভিনিউ জিডিপি কমছে, এক্সপোর্ট জিডিপি কমে।
আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগে বিনিয়োগ করে ফিট করতে হবে। গ্রোথের জন্য বিনিয়োগ দরকার,
বিনিয়োগ ছাড়া গ্রোথ আসবে না।
তিনি বলেন,
পদ্মা সেতু জাতীয় আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। এটা শুধু ট্রান্সপোর্ট নয় এটাকে ইকোনমিক করিডর
করতে হবে। পদ্মা সেতু ঘিরে ১৭টা ইকোনমিক জোন করতে হবে। এর ফলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি
হবে।
মুস্তাফিজুর
রহমান বলেন, কৃষি খাতে ৪০ শতাংশ লেবার আছে। অথচ এখাতে ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
ভিয়েতনাম এফডিএ করেছে ইউরোপ-জাপানের সঙ্গে। আমরা কিন্তু এটা করছি না।
যৌথভাবে গোলটেবিল
বৈঠকের আয়োজন করে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)
ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। যৌথভাবে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে দ্য ইনস্টিটিউট
অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম
(ইআরএফ)। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিএবি’র সভাপতি মো. শাহাদাৎ হোসেন ও ইআরএফ’র সভাপতি শারমীন রিনভী। এসময় গোল টেবিলে অংশ নেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট
অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, ইআরএফ’র সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল
ইসলাম, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক (ডিজি) ড. বিনায়ক
সেন, মেট্রোপলিট্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকার (এমসিসিআই) এর সভাপতি
মো. সাইফুল ইসলাম।