মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের মূর্ত প্রতীক ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য বিজয়’৭১। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করছে এই দৃষ্টিনন্দন শিল্পকর্ম। প্রকৃতিকন্যা খ্যাত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনে ভাস্কর্য। এই মমতাময়ী নারীর আহবান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার জন্যে।
নেত্রকোনার খ্যাতিমান ভাস্কর শিল্পী শ্যামল চৌধুরী পোড়া মাটির পাটাতনের ওপর শ্বেতপাথরে খোদাই করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইতিহাসকে এভাবেই মেলে ধরেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক এই ভাস্কর্য দেখতে ক্যাম্পাসে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
একাত্তরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের রেস্ট হাউসে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ৯৩ ব্রিগেডের হেড কোয়ার্টার স্থাপন করে। এখান থেকেই বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে বাঙালী নিধনের নির্দেশনা দেয়া হতো। একাত্তরের সেই সব স্মৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এই ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। এতে ইতিহাস পাওয়া যাবে যে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬২’র আন্দোলন, ৬৬-এর আন্দোলন এবং শেষ পর্যন্ত ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ।
ময়মনসিংহ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার আব্দুর রব বলেন, এই ইতিহাস যুগ যুগ ধরে আগামী প্রজন্ম যাতে জানতে পারে। ৯৭ সালে প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হোসেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নতুন প্রজন্মের কাছে মেলে ধরতে এই উদ্যোগ নেন। সারাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মারক সংরক্ষণের আহবান জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। ১৯৭১ কিভাবে এদেশের মানুষের মধ্যে অঙ্কিত হয়ে আছে, তার নিদর্শন সব জায়গায় গেলে বোঝা যায়।
একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী মো. ফজলুর রহিম সর্বপ্রথম ক্যাম্পাসে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ জন ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে শহীদ হন।