Logo
শিরোনাম

ঐতিহ্যের মূর্ত প্রতীক ভাস্কর্য বিজয় ’৭১

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ০৪ জুন ২০২৩ | ১৮১জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের মূর্ত প্রতীক ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য বিজয়৭১। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করছে এই দৃষ্টিনন্দন শিল্পকর্ম। প্রকৃতিকন্যা খ্যাত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনে ভাস্কর্য। এই মমতাময়ী নারীর আহবান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার জন্যে।

নেত্রকোনার খ্যাতিমান ভাস্কর শিল্পী শ্যামল চৌধুরী পোড়া মাটির পাটাতনের ওপর শ্বেতপাথরে খোদাই করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইতিহাসকে এভাবেই মেলে ধরেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক এই ভাস্কর্য দেখতে ক্যাম্পাসে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। 

একাত্তরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের রেস্ট হাউসে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ৯৩ ব্রিগেডের হেড কোয়ার্টার স্থাপন করে। এখান থেকেই বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে বাঙালী নিধনের নির্দেশনা দেয়া হতো। একাত্তরের সেই সব স্মৃতি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এই ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়।  এতে ইতিহাস পাওয়া যাবে যে ৫২র ভাষা আন্দোলন, ৬২র আন্দোলন, ৬৬-এর আন্দোলন এবং শেষ পর্যন্ত ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। 

ময়মনসিংহ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার আব্দুর রব বলেন, এই ইতিহাস যুগ যুগ ধরে আগামী প্রজন্ম যাতে জানতে পারে। ৯৭ সালে প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হোসেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নতুন প্রজন্মের কাছে মেলে ধরতে এই উদ্যোগ নেন। সারাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মারক সংরক্ষণের আহবান জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। ১৯৭১ কিভাবে এদেশের মানুষের মধ্যে অঙ্কিত হয়ে আছে, তার নিদর্শন সব জায়গায় গেলে বোঝা যায়।

একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী মো. ফজলুর রহিম সর্বপ্রথম ক্যাম্পাসে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ জন ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে শহীদ হন।

নিউজ ট্যাগ: বিজয় ’৭১

আরও খবর



মাছ-মাংসের দামে উত্তাপ, সবজির দরও বাড়তি

প্রকাশিত:শনিবার ০৩ জুন ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৪ জুন ২০২৩ | ২৯জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর খুচরা বাজারে মাছ-মাংসের দাম উত্তাপ ছড়াচ্ছে। গরুর মাংস প্রতিকেজি সর্বোচ্চ ৮০০ এবং ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া সবজির দামও বাড়তি। কমেনি পেঁয়াজ ও আদার দাম। তাই ক্রেতার অস্বস্তি বাড়ছে। শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, নয়াবাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

কয়েকজন বিক্রেতা জানান, বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে; যা সাত দিন আগেও ছিল ৭৫ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি আমদানি করা আদা ৩৫০ ও দেশি আদা সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশে যে পরিমাণে পেঁয়াজ আছে তাতে কুরবানির ঈদের আগে সংকট হওয়ার কথা নয়। বিক্রেতারা ঈদ উপলক্ষ্য করে দাম বাড়াচ্ছে। অজুহাত দিচ্ছে আমদানি বন্ধের। এছাড়া বিভিন্ন দেশের আদার মানের ওপর নির্ভর করে প্রতি কেজির আমদানি মূল্য পড়ে ১২৯-২৫০ টাকা। দেখা গেছে ২৫০ টাকায় আমদানি করা আদা ২৬০ বা ২৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর ১২৯ টাকায় কেনা আদাও আড়ত থেকে বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৮০ টাকা। এটা একেবারেই অযৌক্তিক। আড়ত থেকে কেনা এই আদা খুচরা পর্যায়ে আরও বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাই মূল্য সহনীয় করতে কঠোর তদারকি করা হচ্ছে। অনিয়ম যারা করছে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।

খুচরা বাজারে শুক্রবার প্রতি কেজি করলা বিক্রি হয় ৮০ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি বরবটি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, কাকরল ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচাকলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০-৮০ টাকা এবং জালিকুমড়া প্রতি পিস ৬০-৭০ টাকা বিক্রি হয়।

এদিন রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা বিক্রি হয়। যা রোজার ঈদের আগে ৭০০ টাকা ছিল। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় ২০০ টাকা, প্রতিকেজি রুই মাছ বিক্রি হয় ৩২০-৩৫০ টাকা, কাতল মাছ ৩০০ টাকা, পাঙ্গাশ ২২০-২৩০ টাকা বিক্রি হয়। দেশি পুঁটি মাছ কেজি বিক্রি হয় ৬৫০ টাকা।

রাজধানীর নয়াবাজারে পণ্য কিনতে আসা মো. ইব্রাহিম বলেন, পণ্যের দাম দেখে অস্বস্তি লাগছে। দাম কমাতে সরকারসংশ্লিষ্টদের কোনো উদ্যোগ নেই। সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকার পরও বিক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। যেসব সংস্থা এসব দেখবে তারাও দায় নিচ্ছে না। লোক দেখানো বাজার তদারকি করছে। এতে ভোক্তার কোনো উপকার হচ্ছে না।


আরও খবর



ভোলা-৩ আসনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান

প্রকাশিত:শুক্রবার ০২ জুন 2০২3 | হালনাগাদ:রবিবার ০৪ জুন ২০২৩ | ৬১জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জেলার লালমোহন ও তজুমদ্দিন এ দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত ভোলা-৩ আসন। এক সময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসন প্রায় ১৫ বছর ধরে আওযামী লীগের দখলে রয়েছে। বর্তমানে এ আসনের এমপি আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে এ আসনে এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের দৌড়ঝাপ বেড়েছে। মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন তাঁরা। প্রচার চালাচ্ছেন জোরেশোরে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের দলীয় বর্তমান এমপিসহ দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের পদচারণে মুখর ভোলার লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলা।

জানতে চাইলে লালমোহন' উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি এলাকায় উন্নয়নকাজ অব্যাহত রেখেছি। দলকে সুসংগঠিত করেছি। আগামীতেও করে যাবো। তাই দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমি যথেষ্ট আশাবাদী, বাকিটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যা ভালো মনে করবেন।

তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেকেই বলছেন, ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিসহ নানা ঘটনায় বিতর্কিত হওয়ায় অনেকটাই বেকায়দায় আছেন শাওন। এ ছাড়া এমপি হওয়ার পর আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের গুরুত্ব না দিয়ে হাইব্রিড নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ফলে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের একটি অংশ তাঁর উপরে ক্ষুব্ধ।

এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও চরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. হোসেন হাওলাদার বলেন, চৌধুরী শাওন এমপি হওয়ার পর এলাকায় হাইব্রিড নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলীয় কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। আর আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দিচ্ছেন মামলা। তাই এ আসনে বর্তমান এমপি নুরুন্নবী চৌধুরীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অনেকেই দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান তিনি।

তবে স্থানীয় জনগনের সাথে কথা বললে বেশির ভাগ মানুষের মুখেই ব্যবসায়ী বিবিএস কোর্সের চেয়ারম্যান আবু নোমান হাওলাদার (সিআইপি) এর কথা জানা যায়। তার জনপ্রিয়তা ভোলা-৩ আসনে অনেকটাই ব্যাপক, বেশির ভাগ স্থানীয় বাসিন্দাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মানুষ ইন্জিনিয়ার আবু নোমানকে ভোলার এমপি হিসেবে দেখতে চায়। কারণ তার সামাজিক কর্মকাণ্ডের অনেকটাই মুগ্ধ হয়েছেন ভোলাবাসী। তা ছাড়া অন্যান্য নেতৃবৃন্দের ও জনপ্রিয়তাও কোনো অংশে কম নয়।


আরও খবর



যুক্তরাষ্ট্রের ২টি যুদ্ধবিমানকে রাশিয়ার ধাওয়া

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০৩ জুন ২০২৩ | ৩৮জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

বাল্টিক সাগরের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া মার্কিন বিমান বাহিনীর এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমানকে বাধা প্রদান করেছে মস্কো। মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে রাশিয়া। খবর এএফপির।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সীমান্ত থেকে বিদেশি সামরিক বিমানগুলোকে ধাওয়া দেওয়ার পর মস্কোর যুদ্ধবিমান তার বিমান ঘাঁটিতে ফিরে আসে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এক্ষেত্রে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী সীমান্ত লঙ্ঘন প্রতিরোধ করেছে। এ সময় রাশিয়ার যুদ্ধ বিমানটি আকাশসীমা ব্যবহারের আন্তর্জাতিক আইন কঠোরভাবে মেনে তার অভিযান পরিচালনা করে। এদিকে পেন্টাগন মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার নিশ্চিত করেন যে মার্কিন যুদ্ধবিমান রাশিয়ার যুদ্ধ বিমানের ধাওয়ার শিকার হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বি-১ বোমারু বিমানগুলো ইউরোপে একটি দীর্ঘ পরিকল্পিত মহড়ায় অংশ নিচ্ছিল। মাত্র এক সপ্তাহ আগে রাশিয়া বলেছিল তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘনের চেষ্টা করা দুটি বিমানকে তারা বাধা দিয়েছিল। এগুলোর একটি জার্মানির এবং আরেকটি ফ্রান্সের বিমান ছিল।


আরও খবর



আজ ঘোষণা: কেমন হবে এরদোগানের মন্ত্রিসভা

প্রকাশিত:শনিবার ০৩ জুন ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৪ জুন ২০২৩ | ৩৭জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো আজ শনিবার শপথ নিবেন তুর্কি নেতা রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। এর মাধ্যমে তুরস্কের ক্ষমতায় টানা তৃতীয় দশকে পা রাখছেন তিনি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তুরস্কের সময় অনুযায়ী বেলা ২টায় শপথ অনুষ্ঠিত হবে।

 রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, শপথ অনুষ্ঠানের পর নিজের মন্ত্রিসভা ঘোষণা করবেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। দেশটির যোগাযোগ (কমিউনিকেশন) পরিচালক গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

২৪ টিভির সঙ্গে কথা বলার সময় ফাহরেটিন আলতুন নামের এই যোগাযোগ পরিচালক বলেন, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর এরদোগান আতাতুর্কের সমাধিস্থল আনিতকবীর পরিদর্শন করবেন।

এর পর প্রেসিডেন্ট এরদোগান তার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদানকারী বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য একটি নৈশভোজেরও আয়োজন করবেন, বলেন  ফাহরেটিন আলতুন। তুর্কি প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে বিশ্বের অন্তত ৭৮টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, মন্ত্রী এবং অন্যান্য প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, একই দিন রাতেই প্রেসিডেন্ট এরদোগান তার নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করবেন।

তুর্কি সংবাদমাধ্যম হুরিয়াত ডেইলির মতে, সরকারের প্রায় পুরো মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন আসতে পারে। পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিষয়টি ব্যতিক্রম হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে চূড়ান্ত নিবেন এরদোগান।

উল্লেখ্য, তুরস্কের সংবিধান অনুযায়ী কোনো সংসদ সদস্য মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলে তার আসন ফাঁকা হয়ে যায়। স্বাভাবিক কারণেই নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া মন্ত্রী করবেন না এরদোগান। অর্থাৎ সংসদ সদস্য নন- এমন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে বেশির ভাগ মন্ত্রী করা হবে। যাতে পার্লামেন্টে আসন সংখ্যা কমে না যায়।

তুরস্কের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি গত ২৮ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করেছে বৃহস্পতিবার (১ জুন)। এতে দেখা যায়, এরদোগান ৫২ দশমিক ১৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধী জোটের নেতা কামাল কিলিকদারোগ্লু পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ৮২ শতাংশ ভোট।


আরও খবর



শেখ হাসিনার আরেকটি বৈশ্বিক অর্জন জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বীকৃতি

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:শনিবার ০৩ জুন ২০২৩ | ৬২জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে জাতিসংঘে সম্প্রতি। প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি শিরোনামের ঐতিহাসিক রেজুলেশনটি সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।

বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজুলেশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের ব্যাপক স্বীকৃতি দিয়ে এ উদ্যোগকে দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই অর্জন জনগণের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবায় সাম্য আনয়নে বাংলাদেশের দৃঢ়প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে। সাধারণ পরিষদে রেজুলেশনটি উপস্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত। কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনস্বরূপ জাতিসংঘের ৭০টি সদস্য রাষ্ট্র এ রেজুলেশনটি কো-স্পন্সর করে। বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনে এ রেজুলেশনের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরা হয়। জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রগুলো কর্তৃক এ রেজুলেশনের অনুমোদনকে ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের  বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। রেজুলেশনটির সফল বাস্তবায়ন কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের নিমিত্তে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে এই রেজুলেশনের সুদূরপ্রসারি প্রভাব রয়েছে। কারণ এটি সদস্য দেশগুলোতে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রবর্তন ও বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বহুপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক ও দাতাদের যথাযথ কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সব মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে এ অনন্য কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করেছিলেন, যা সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সুফল সরবরাহে বিপ্লব ঘটিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে রেজুলেশনটি সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে নেগোশিয়েশন করেন উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মো. মনোয়ার হোসেন। মিশন গত কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য কূটনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে এবং এর ধারাবাহিকতায় এই রেজুলেশনটি এই বছরের শুরুর দিকে মিশন সদস্য রাষ্ট্রের বিবেচনার জন্য প্রস্তাব করে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে গত ৪ মাস নিবিড় আলোচনা ও নেগোশিয়েশনের পরে মঙ্গলবার প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সারাদেশে ১৮ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলো প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে এবং সাধারণ মানুষ সেখানে চিকিৎসা নিতে আসছে। এর ফলে দেশে অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার অভিজ্ঞতা অন্য দেশের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনেক দেশ এখনও মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে পারেনি। সেসব দেশ চাইলে বাংলাদেশ তাদের কাছে আমাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবে। ১৯৯৮ সালে সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক শুরু করলেও ২০০১ সালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর একটি ট্রাস্ট গঠনের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেন, যাতে এটি আর কেউ বন্ধ করতে না পারে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্যোগ নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু স্বাস্থ্যসেবা দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি ১০ শয্যার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।

এই গৌরবের দাবিদার এ দেশের মানুষ। কারণ তারা ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করে বারবার তাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। বুলেট, বোমা ও গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যাওয়ার কারণেই শেখ হাসিনা দেশবাসীর কল্যাণে কাজ করে যেতে পারছেন। সাম্প্র্রতিক সময়ে দেশের স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অগ্রগতি হয়েছে বলে স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট সকলেই মনে করছেন। বর্তমানে দেশে ৫টি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১১৬টি (সরকারি-বেসরকারি) মেডিকেল কলেজ রয়েছে। গত এক দশকে সরকারি হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। বেসরকারি খাতে দেশে প্রচুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকার জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে। দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে ৩০টি বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা করেছে এবং অনেক জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে। জনসংখ্যার ঘনত্ব বিবেচনা করে অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন যে, মহামারির কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষ মারা যাবে। তবে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সমন্বিত এবং সময়োপযোগী প্রচেষ্টা সম্ভাব্য বিপর্যয় এড়াতে পারে। কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে অ্যানেস্থেশিয়াতে ৪০৯ জন জুনিয়র পরামর্শদাতা, ২ হাজার চিকিৎসক এবং ৫ হাজার নার্স বিশেষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।     

নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও গত ১৪ বছরে স্বাস্থ্য খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা এখন অনেক সহজলভ্য হয়েছে। সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক চিকিৎসা সেবার উন্নয়নের পাশাপাশি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উপরও আমাদের নজর দিতে হবে। তাছাড়া কমিউনিকেবল এবং নন-কমিউনিকেবল রোগের বিষয়গুলো নিয়ে সমানভাবে কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা এখন অনেক সহজলভ্য হয়েছে। সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো তৈরির জন্য আমরা সারাদেশে ৬০০-এর বেশি হাসপাতাল নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। ১১টি স্নাতকোত্তর স্তরের সুপার স্পেশাল হাসপাতাল, হৃদরোগ, বক্ষ ব্যাধি, ক্যানসার ও নিউরো সাইন্স সংক্রামক ব্যাধি ও কুষ্ঠরোগ হাসপাতালসহ অন্যান্য বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আর গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে প্রায় ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। আমাদের চিকিৎসাসেবা যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। চিকিৎসকদের দক্ষতাও বেড়েছে। আগে যেসব রোগে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়া হতো, বর্তমানে এসব রোগের চিকিৎসা দেশেই হচ্ছে এবং চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে।

আমাদের দেশে তো বটেই সারাবিশ্বে মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হৃদরোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, হৃদরোগজনিত রোগে বর্তমান বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ১৭ দশমিক ৯ মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর শতকরা প্রায় ২৭ ভাগ হৃদরোগের কারণে হয়ে থাকে। আর দেশে বর্তমানে প্রতি হাজারে ১০ জন শিশু হৃদরোগে ভুগছে। এছাড়াও প্রতি ৫ জন তরুণের মধ্যে একজন হৃদরোগ ঝুঁকিতে রয়েছে। খাদ্যাভ্যাস কায়িক পরিশ্রম না করা, ধূমপান, ডায়াবেটিকসহ নানা কারণে দেশে হৃদরোগে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সরকার প্রতিটি জেলায় একটি মেডিকেল কলেজ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে।

তবে স্বাস্থ্যসেবায় আরো অনেক কাজ করতে হবে। দেশে সংখ্যায় অনেক ডাক্তার তৈরি হলেও জনসংখ্যা অনুপাতে তা বড় নয়। ১ হাজার ৫৮১ জন লোকের জন্য রয়েছেন একজন নিবন্ধিত চিকিৎসক। গ্রামীণ, প্রত্যন্ত এবং দুর্গম অঞ্চলগুলোতে চিকিৎসক শূন্যতার হার বেশি। অনেক সরকারি হাসপাতালে সরঞ্জাম পাওয়া গেলেও প্রযুক্তিবিদ বা টেকনিশিয়ানের পদ খালি রয়েছে। এসব পদে নিয়োগ ও তাদের ধরে রাখা দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। এর পাশাপাশি প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতার উন্নয়ন। এমনও অনেক ঘটনা রয়েছে যেখানে স্বাস্থ্য সরঞ্জাম থাকলেও সেগুলো চালানোর মতো সঠিক জ্ঞানস¤পন্ন কাউকে পাওয়া যায় না। ডাক্তারের বাইরে নার্স, মিডওয়াইফ এবং মেডিকেল টেকনোলজির ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা খাতে বাজেট বাড়ানোর দাবি দীর্ঘদিনের। যে বাজেট বরাদ্দ করা হয় তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, বেতন ও ভাতার জন্য ব্যয় হয়। তাই বাজেট বরাদ্দ থেকে রোগীদের জন্য প্রকৃত উপকারিতা কম পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য বাজেটের প্রচলিত একটি খাত হলো সরঞ্জামাদি সংগ্রহ বা প্রকিউরমেন্ট এবং অবকাঠামো নির্মাণ। গত একযুগ জিডিপির ০.৯% কাছাকাছি বরাদ্দ পেয়ে আসছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অবকাঠামো অনেক সমৃদ্ধ। ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা যে দুর্বলতা রয়েছে তা কাটিয়ে তুলতে হবে। শিশুমৃত্যুর হার কমেছে, মাতৃমৃত্যু হার কমেছে, টিকাদান কর্মসূচি গতি পেয়েছে ইত্যাদি। সবার জন্য সহজলভ্য ও মানসম্মত স্বাস্থ্য সুবিধ্য। নতুন নতুন রোগ মহামারির আকার নিচ্ছে। ক্যানসার, হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। নতুন রোগ হিসেবে করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। এগুলো এসডিজি যুগের মহামারি। দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির মতো স্বাস্থ্যসেবার পরিষেবা বেসরকারি খাতের মাধ্যমে প্রসারিত হচ্ছে। তবে এর গুণমান নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উচিত কার্যকরভাবে এই খাতের নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ করা। স্বাস্থ্যসেবার গুণমান এবং ব্যয় অনেকটা পরিবর্তিত হয় এসব নিয়ন্ত্রণহীন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের মাধ্যমে। স্বাস্থ্য খাতকে সেবার পরিবর্তে বাণিজ্যে রূপান্তর করেছে। স্বাস্থ্য খাতে সিস্টেমের সমস্যা রয়েছে। যারা সেবা দেবেন তারা হাসপাতালে উপস্থিত থাকেন না। নিরাপদ স্যানিটেশনের ব্যবস্থা থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের দুর্বলতা রয়েছে। পয়ঃনিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা নেই। এসব সমস্যা দূর করতে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সমন্বয়ের মাধ্যমে সরকার কাজ করছে। আমাদের হেলথ সিস্টেমে আগের চেয়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আগামীতে আরও হবে। কমিউনিটি ক্লিনিক, উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সসহ দেশের স্বাস্থ্যসেবা দানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পানি এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার অবকাঠামোগত সুবিধা রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সরকারের পক্ষ থেকে এ বছর সাড়ে ৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হবে এবং ১৫ হাজার নার্স নিয়োগের অনুমোদন হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে আরো ৮ হাজার বেড বাড়ানো হবে। ২০ হাজার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। বড় ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালগুলোতে ঢাকার বাইরে থেকে আসা লোকজন বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে তাদের সহযোগিতার জন্য হেল্প ডেস্ক স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে পাবলিক টয়লেটের সংখ্যা বাড়িয়ে পৃথকস্থানে করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেডিকেল কলেজ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মান বাড়ানোর জন্য পুরাতন সব কমিউনিটি ক্লিনিক ভেঙে আরো বেশি সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন নতুন ডিজাইনের ভবন তৈরি করা হচ্ছে। হাসপাতালেল বর্জ্য বাইরে না ফেলার ব্যাপাওে জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোকে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে হাসপাতালগুলোর কার্যক্রমের ওপর সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটরিংয়ের কাজ শুরু হচ্ছে। এ খাতের আরো উন্নতির জন্য মাতৃমৃত্যু ১ এ এবং শিশু মৃত্যুহার ৭০ এর নামিয়ে আনাই লক্ষ্য।

বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করেন। তিনি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের সবক্ষেত্রে একটি শক্ত নীতিমালা, পরিকল্পনা এবং অবকাঠামো রেখে গেছেন, যার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে আজকের স্বাস্থ্যব্যবস্থা। তার পরিকল্পনা শুধু রাজধানী বা শহরকেন্দ্রিক ছিল না; বরং জেলা, থানা, ইউনিয়ন, গ্রামসহ তৃণমূল পর্যায়ে সেগুলো নিশ্চিত করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য আর তা বাস্তবায়নের জন্য তিনি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, প্রতিটি জেলায় হাসপাতাল, থানা হেলথ কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুবিন্যস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রণয়নের পথ দেখিয়েছিলেন। স্বাস্থ্যকে সংবিধানের মূল অধিকার, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গুরুত্ব এবং চিকিৎসকদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদাদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অগ্রযাত্রা শুরু।

ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পর্যায়ে বহু হাসপাতাল নির্মিত হয়েছে এবং শতাধিক সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চালু রয়েছে। অনেক বিশেষায়িত হাসপাতালে বিনামূল্যে মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, প্রসূতিসেবা, অর্থোপেডিক, চোখ, নাক-কান-গলা, হৃদরোগ, নবজাতক ও অপুষ্টিজনিত সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। সংক্রামক ব্যাধি, কুষ্ঠ ও অন্য রোগের জন্য ১৪টি বিশেষায়িত হাসপাতাল ছাড়াও সব মেডিকেল কলেজ, জাতীয় হৃদরোগ এবং অনেক জেলা হাসপাতালে সিসিইউ-এর চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে। ক্যানসার চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউটে।

নতুন অনেক ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল নির্মিত হয়েছে, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স, অত্যাধুনিক ক্যানসার ও জাতীয় কিডনি হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, জাতীয় হৃদরোগ ও অ্যাজমা সেন্টার, পঙ্গু হাসপাতালের সম্প্রসারণ, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালকে সরকারি হাসপাতালে রূপান্তর, মুগদায় ৫শ শয্যার হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ই এন টি হাসপাতাল, জাতীয় নার্সিং উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, বক্ষব্যাধি ও কুর্মিটোলা ৫শ শয্যাবিশিষ্ট এবং ঢাকার ফুলবাড়িয়ায় সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, খুলনার আবু নাসের বিশেষায়িত ও গোপালগঞ্জের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল এবং এ হাসপাতালকে কেন্দ্র করে অনলাইন চক্ষুসেবা কার্যক্রম চালু করতে ভিশন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।


আরও খবর