রক্ষণ থেকে আক্রমণ;
সবখানেই দাপট দেখালো ব্রাজিল। বল দখলেও থাকলো এগিয়ে। তৈরি করল বেশ কয়েকটি দারুণ সুযোগ।
কিন্তু ফিনিশিংয়ের অভাবে সার্বিয়ার জাল ভেদ করতে পারলেন না নেইমার-ভিনিসিয়ুসরা। ফলে
গোলশূন্য ড্র নিয়ে বিরতিতে গেল তিতের দল।
লুসাইল স্টেডিয়ামে
২০২২ বিশ্বকাপের গ্রুপ 'জি'-এর ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল ও সার্বিয়া। ২০ বছরের
শিরোপা খরা ঘোচানোর লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। আক্রমণে বাড়তি
জোর দিয়ে আজ ৪-২-৩-১ ফরম্যাশনে দল সাজিয়েছেন ব্রাজিল কোচ তিতে। আক্রমণভাগে রাফিনিয়া,
ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও নেইমারকে রেখে স্ট্রাইকিং পজিশনে রিচার্লিশনকে রেখেছেন তিনি। রক্ষণে
দানিলো মার্কুইনোস, থিয়াগো সিলভা এবং আলেক্স সান্দ্রো। মাঝমাঠ সামলানোর দায়িত্বে লুকাস
পাকেতা ও কাসেমিরো। অন্যদিকে মাঝমাঠের শক্তিতে জোর দিয়ে ৩-৫-১-১ ফরম্যাশনে নেমেছে সার্বিয়ানরা।
ব্রাজিলের জার্সিতে
আজ মাঠে নেমে রেকর্ডের খাতায় নাম লিখিয়েছেন থিয়াগো সিলভা। অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরে
মাঠে নেমেই ব্রাজিলের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি বয়সে বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড গড়েছেন তিনি।
সার্বিয়া ম্যাচে মাঠে নামার সময় চেলসি সেন্টার-ব্যাকের বয়স ৩৮ বছর ৬৩ দিন। এর আগে ১৯৬৬
বিশ্বকাপ খেলতে নামার সময় ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলার দালমা সান্তোসের বয়স ছিল ৩৭ বছর
১৩৮ দিন।
ম্যাচের শুরু
থেকে সার্বিয়ার রক্ষণে হানা দেয় ব্রাজিল। চতুর্থ মিনিটে রাফিনিয়া সার্বিয়ার ডিফেন্ডার
স্ত্রাহিনিয়া পাভলোভিচকে কাটিয়ে নিচু ক্রস নিয়েছিলেন। কিন্তু কাছের পোস্ট থেকে বল ক্লিয়ার
করা হয়। সপ্তম মিনিটে আক্রমণে ওঠে আসা নেইমারকে ঠেকাতে গিয়ে ফাউল করেন পাভলোভিচ। সঙ্গে
সঙ্গে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। নবম মিনিটে কাসেমিরোর দারুণ পাসে বক্সের ভেতরে বল পেয়ে
যান নেইমার। নিয়ন্ত্রণে নিলেও সার্বিয়ান ডিফেন্ডাররা ঘিরে ধরেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডকে।
ফলে শট নিতে পারেননি তিনি।
ত্রয়োদশ মিনিটে
কর্নার কিকে বল গোলমুখে পাঠান নেইমার। কিন্তু সার্বিয়ার গোলরক্ষক ভানিয়া মিলিনকোভিচ-সাভিচ
ফের কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান সেই শট। দ্বিতীয় কর্নার কিকে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি মার্কিনিয়োস।
বরং তার আগেই দুই হাতে বল ধরে ফেলেন সার্বিয়ার গোলরক্ষক। ২১তম মিনিটে কাসেমিরো দূরপাল্লার
শট নিয়েছিলেন। কিন্তু সহজেই বল গ্লাভসবন্দি করেন সার্বিয়ান গোলরক্ষক। অন্যদিকে প্রথম
২৫ মিনিটে বল দখলে টক্কর দিলেও মাত্র একবার ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক আলিসনকে সেভাবে পরীক্ষার
মুখে ফেলতে পারে সার্বিয়া। অনেকটা দূর থেকে বক্সে ঢুকে পড়া মিত্রোভিচকে লক্ষ্য করে
ক্রস দেন তাদিচ। কিন্তু ব্রাজিল গোলরক্ষক লাফিয়ে বল গ্লাভসবন্দি করেন।
২৮তম মিনিটে সত্যিকারের
সুযোগ আসে ব্রাজিলের সামনে। সিলভার থ্রো বল বক্সে পেয়ে যায় ভিনিসিয়ুস। কিন্তু রিয়াল
মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড শট নেওয়ার আগেই ডাইভ দিয়ে তার পায়ের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন সার্বিয়ার
গোলরক্ষক। পরের মিনিটেই বাঁ প্রান্তে ফ্রি-কিক পায় ব্রাজিল। তা থেকে বল পেয়ে বক্সের
কাছে ঢুকে ক্রস পাঠান রিচার্লিশন। কিন্তু সার্বিয়ার রক্ষণের জটলায় সফল হতে পারেননি
তিনি। বল উড়ে যায় গ্যালারিতে। ৩৫তম মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও দুর্বল শটে বল তার
হাতেই তুলে দেন রাফিনিয়া। ৪১তম মিনিটে সবচেয়ে ভালো সুযোগটা নষ্ট করেন ভিনিসিয়ুস। কাসেমিরোর
লং বল খুঁজে নেয় রিয়াল তারকাকে। কিন্তু সেখানে সার্বিয়ার ডিফেন্ডার মিলেনকোভিচ বল দখলে
নেন। তবে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের বুকেই মারেন তিনি। বল নেমে পাশেই দৌড়াতে থাকা
ভিনিসিয়ুসের পায়ে পৌঁছে যায়। কিন্তু একদম কাছ থেকে তার নেওয়া শট পোস্টের বাইরে দিয়ে
বেরিয়ে যায়। ফলে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য ড্রয়ে।