বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের
মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত হলো। এখন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক
তিনি।
রোববার (১৭ অক্টোবর) স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে
বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মেহেদী হাসানের পর স্কটল্যান্ড শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন
তিনি। আর এর মধ্য দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে এখন তার উইকেট সংখ্যা ১০৮টি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে ৮৯ ম্যাচ
খেলে ১০৮ উইকেট নিয়ে সাকিব আল হাসান ছাড়িয়ে গেলেন লঙ্কান কিংবদন্তি বোলার লাসিথ মালিঙ্গাকে।
শুধু তাই নয়, এদিন দুই উইকেট শিকার করে পৌঁছে যান আরও এক অনন্য উচ্চতায়। আন্তর্জাতিক
আঙিনায় ৬০০ উইকেটের মাইলফলকও ছুঁয়ে ফেললেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার।
এর আগে ইনিংসের প্রথম ওভারে বল করতে এসে
প্রথম বলেই সাফল্য প্রায় পেয়েই যাচ্ছিলেন তাসকিন আহমেদ। তার এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েছিলেন
স্কটিশ ব্যাটার জর্জ মানসি। তবে আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। রিভিউও করেনি বাংলাদেশ।
এরপর দ্বিতীয় ওভারে বোলিং করতে আসেন মুস্তাফিজুর রহমান। এলবিডব্লুর আবেদন হয়েছিল তার
বলেও, তবে তাতেও সাড়া মেলেনি।
বাংলাদেশের হয়ে প্রথম সাফল্য এনে দিলেন
মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই সাফল্য পান তিনি।
চাপটা ছিল প্রথম ওভার থেকেই। তাসকিন-মুস্তাফিজের পর সাইফউদ্দিনের ওপর ভরসা রাখেন মাহমুদউল্লাহ।
চতুর্থ বলেই সফল হলেন সাইফউদ্দিন। তার দারুণ ইয়র্কারের জবাব ছিল না কাইল কোয়েটজারের,
৭ বল খেলে কোনো রান না করেই ফিরে গেছেন স্কটিশ অধিনায়ক।
ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে বল করতে এসে বেশ খরুচে
ছিলেন মুস্তাফিজ। তার করা ওভারের দ্বিতীয় বলে চার, পঞ্চম বলে ছয় হাঁকান মানসি। পাওয়ার
প্লে শেষে স্কটল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেট হারিয়ে ৩৯।
মুস্তাফিজের ওপর চড়াও হওয়ার পর বাংলাদেশের
পথের কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্কটল্যান্ডের উদ্বোধনী ব্যাটার জর্জ মানসি। তবে পথের কাটা
সরান মেহেদী হাসান। এর আগে একই ওভারে শিকারে পরিণত করেন ম্যাথু ক্রসকে। তার জোড়া আঘাতে
ম্যাচে প্রাণ ফিরে পায় টাইগাররা।
আউট হওয়ার আগে জর্জ মানসি করেছিলেন ২৩
বলে ২৯ রান। এছাড়া ম্যাথিউ ক্রস করেছেন ১৭ বলে ১৩ রান। এদিকে, মেহেদীর জোড়া আঘাতের
পর জোড়া সাফল্য পান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও। রোববার (১৭ অক্টোবর) নিজেদের
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতে বোলিংয়ে মাহমুদউল্লাহ
বাহিনী। ওমানের আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে খেলাটি চলছে।
এর আগে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে স্কটিশদের
বিপক্ষে একবারই খেলেছিল বাংলাদেশ। তবে ২০১২ সালে নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে
টাইগাররা শোচনীয় পরাজয় বরণ করে। আর তাই আজকের ম্যাচটি একদিক থেকে প্রতিশোধের লড়াইও
বটে।
এদিকে, মুখোমুখি লড়াইয়ে নামার আগে বাংলাদেশকে
প্রচ্ছন্ন হুমকিই দিয়ে রেখেছিল স্কটল্যান্ড। দলটির কোচ কোচ শেন বার্গার বলেন, ‘পাপুয়া নিউগিনি
কিংবা ওমান থেকে বাংলাদেশকে আমরা বড় করে দেখছি না। আমরা জানি, প্রতিটা দলই আমাদের হারাতে
চাইবে। তবে আমাদের বিপক্ষেই বাকিদের সবচেয়ে বড় ম্যাচটা খেলতে হবে। আমরা প্রস্তুত এবং
তৈরি আছি।’
অন্যদিকে, স্কটল্যান্ডের হুমকির বদলায়
টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ পাল্টা হুমকি না দিয়ে মাঠের খেলাতেই মনোযোগ দিতে বলেছেন।
তিনি ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কাউকে ছোট করে দেখতে চাই না। স্কটল্যান্ডের
বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা খেলতে চাই।’
এদিকে, জানা গেছে, টাইগারদের উৎসাহ দিতে
মাঠে থাকবেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তবে গত কয়েকটা সিরিজের মতো বিশ্বকাপ
আসরেও মাহমুদউল্লাহ বাহিনীর উদ্বোধনী জুটি নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে। টি-টোয়েন্টিতে দলের
হয়ে নিয়মিত ওপেনিংয়ে নামা নাঈম শেখ ছন্দে নেই। এদিকে, লিটন দাসও নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন।
তবে আনুষ্ঠানিক দুই প্রস্তুতি ম্যাচে রানের
দেখা পেয়েছেন সৌম্য সরকার। আর তাই ধারণা করা হচ্ছে, টাইগারদের হয়ে ওপেনিং জুটিতে লিটন-সৌম্যের
ওপরই আস্থা রাখতে পারে নির্বাচকরা।
এর আগে শনিবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম সংবাদ সম্মেলনেও বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ওপেনিংয়ে লিটনকে খেলানোর আভাস দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কেউ প্রতিদিন রান করতে পারে না। তার মানে এই না যে, সে (লিটন) ছন্দে নেই। কেউ যদি নিজের খেলার প্রতি আত্মবিশ্বাসী থাকে, যদি হোম ওয়ার্কগুলো ঠিক মতো করে আর ম্যাচের জন্য প্রস্তুত থাকে, তবে সেটাই যথেষ্ট।