
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের
প্রভাবে ভারি বর্ষণ ও ঝোড়ো বাতাসে উপকূল অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় গাছের ডালপালা ভেঙে
পড়েছে। এর ফলে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায়
৪৫ লাখ ২৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। ঝড়ের ঝুঁকি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
কমাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিতরণ কম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
দক্ষিণাঞ্চলে
বিদ্যুৎ বিতরণে দায়িত্বে আছে দুটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)
এবং পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানি (ওজোপাডিকো)।
আরইবির দায়িত্বরত
এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত
আমাদের ২৩টি সমিতির ৪৪ লাখ এক হাজার ৫০০ গ্রাহকের বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। উপকূলের
বেশির ভাগ এলাকায় ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হচ্ছে। তাই ঝুঁকির মধ্যে থাকা এলাকাগুলোতে
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। ’
পল্লী বিদ্যুতায়ন
বোর্ডের (আরইবি) ভৌগোলিক এলাকা বাদে খুলনা, বরিশাল ও বৃহত্তর ফরিদপুর বিভাগের ২১টি
জেলা ও ২০টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ওজোপাডিকো।
ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা
পরিচালক (এমডি) মো. আজহারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের ঝুঁকিপূর্ণ
পাঁচটি জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এসব জেলায় প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার
গ্রাহক রয়েছে। তাদের সবার বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। ’
এদিকে ঘূর্ণিঝড়
সিত্রাং মোকাবেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ এবং সঞ্চালন কম্পানিকে কন্ট্রোলরুম খোলার নির্দেশ
দিয়ে অফিস আদেশ জারি করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। একই সঙ্গে অপর এক অফিস আদেশে সব বৈদ্যুতিক
স্থাপনা সুরক্ষায় উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
আজ সোমবার বিদ্যুৎ
বিভাগের উপসচিব শাকিল আহমেদের সই করা এবং বিভাগের উপসচিব রেহানা আক্তারের সই করা পৃথক
দুই আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং
উপকূলীয় অঞ্চলের ১৩টি জেলায় মারাত্মকভাবে আঘাত হানবে। আর দুটি জেলায় হালকাভাবে আঘাত
হানবে। ১৩টি জেলার মধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী,
ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী। অর্থাৎ চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল
বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় এটি আঘাত হানবে এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের দ্বীপ অঞ্চলগুলোতেও,
বিশেষ করে মহেশখালী, সন্দীপ এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ আছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং
নিয়ে আজ সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। প্রতিমন্ত্রী বলেন,
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সিভিয়ার সাইক্লোনে রূপান্তরিত হয়েছে। এটা মহাবিপৎসংকেত পর্যন্ত
যেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে
ক্ষতি মোকাবেলায় সাত হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে ২৫ লাখ মানুষের
আশ্রয়ণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।