গরমের এই সময়টায়
আনারস বেশ সহজলভ্য। এই রসালো ফলটি দেহের জন্যও খুব উপকারী। গ্রীষ্মে প্রতিদিনই বাড়ছে
রোদের তীব্রতা, সেই সঙ্গে বাড়ছে রোগবালাই। গরম থেকে হঠাৎ করেই ছোট বড় সবারই হতে পারে
জ্বর, সর্দি-কাশি, বুকে শ্লেষ্মা বা কফ জমার মতো সমস্যাগুলো। অবাক করার মতো হলেও সত্যি,
এসব রোগ উপশমে আনারস খুব ভালো কাজ করে।
আনারসের পুষ্টিগুণ
পুষ্টিগুণে
ভরপুর ফল হচ্ছে আনারস। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম,
ফসফরাস, থিয়ামিন, রাইবেফ্লাভিন, ভিটামিন বি-৬, ফোলেট, প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম,
ম্যাঙ্গানিজ, অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট ও বিটা ক্যারোটিন আছে—যা জ্বর, সর্দি-কাশি, বুকে শ্লেষ্মা
বা কফ জমা সারাতে ভালো কাজ করে।
এছাড়া হৃদরোগসহ
বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে আনারসের থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপকারী।
এই গরমে আনারসের জুস করে খেতে পারেন। কারণ আনারসের জুস স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী।
এটি ইমিউনিটি বা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
কীভাবে তৈরি করবেন আনারসের জুস
প্রথমত, আনারসের
খোসা ছাড়িয়ে ছোট ছোট করে কেটে ফ্রুট জুসারের সাহায্যে রস তৈরি করে নিন। এবার একটি কাপের
অর্ধেক পর্যন্ত আনারসের রস নিয়ে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে নেবেন। এই মিশ্রণ নিয়মিত খেলে
সহজেই কাশি থেকে মুক্তি মিলবে।
দ্বিতীয়ত, আনারসের
রসের সঙ্গে মধু, লবণ ও সামান্য গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। দিনে তিনবার
খেলে, ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে উপকার পাবেন। সর্দি-কাশি, বুকে শ্লেষ্মা বা কফ জমা কমবে।
আনারস জুসের অন্যান্য পুষ্টিগুণ
পুষ্টির অভাব
দূর করে: আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস।
এসব উপাদান দেহের পুষ্টির অভাব পূরণ করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে: যারা ওজন কমাতে চান, তারা নিয়মিত আনারসের জুস খেতে পারেন। এতে প্রচুর
ফাইবার ও কম ক্যালরি আছে। জুসের পাশাপাশি আনারস দিয়ে সালাদ তৈরি করেও খেতে পারেন।
হাড় গঠন করে: আনারসের
জুসে আছে ক্যালসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের বড় উৎস। এটি হাড় মজবুত করে। প্রতিদিন এক গ্লাস
করে আনারসের জুস পান করলে হাড়ের সমস্যাজনিত যেকোনো রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষা করে: দাঁতের মাড়ি শক্ত করতে এবং দাঁত শক্ত করতেও প্রতিদিন এক গ্লাস আনারসের
জুস পান করতে পারেন। মূলত আনারসে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। দাঁতে জীবাণুর
আক্রমণ কমাতে এবং দাঁত ঠিক রাখতে আনারসের জুস ভীষণ উপকারী।
চোখের জ্যোতি বাড়ায়: আনারসের জুস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে রক্ষা করে। এ রোগটি চোখের
রেটিনা নষ্ট করে দিতে পারে এবং ধীরে ধীরে অন্ধত্বের দিকে ঠেলে দেয়। আনারসে আছে বেটা
ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারসের জুস খেলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
হজমশক্তি বৃদ্ধি করে: আনারসের জুস হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। আনারসে আছে ব্রোমেলিন,
যা হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। বদহজম বা হজমজনিত যেকোনো সমস্যা থেকে মুক্তি
পেতে ইফতারে আনারসের জুস পান করতে পারেন।
রক্ত জমাটে বাধা প্রদান করে: দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না আনারসের জুস। ফলে হৃদপিণ্ড শরীরে অক্সিজেনযুক্ত
রক্ত সরবরাহ করতে পারে খুব সহজে। আনারস রক্ত পরিষ্কার করে হৃদপিণ্ডকে কাজ করতে সাহায্য
করে।