প্রতিদিনের
রান্নার অন্যতম উপকরণ পেঁয়াজ। ঝাঁঝালো এ মসলা উপাদানটি কাটার সময় চোখ জ্বালা করে, চোখে
পানি চলে আসে। এর কারণ পেঁয়াজ কাটলে পেঁয়াজের কোষে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড সালফক্সাইড
নামের যৌগটি সালফোনিক অ্যাসিডে পরিণত হয়।
সালফোনিক অ্যাসিড
আসলে এক ধরনের অর্গেনোসালফার যৌগ, যাকে পেঁয়াজের অ্যালিনেজ এনজাইম প্রোপেনইথিওল সালফার
অক্সাইডে রূপান্তরিত করে। এই যৌগটি চোখের সংস্পর্শে এসে সালফিউরিক অ্যাসিডে পরিণত হলে
চোখে জ্বালার অনুভুতি সৃষ্টি করে, যা কালক্রমে অশ্রুগ্রন্থি থেকে অশ্রু নিঃসরণ ঘটায়।
রান্নায় স্বাদবর্ধক
ও প্রয়োজনীয় এই মসলা জাতীয় উপাদানটি কাটার সময় চোখ যেন জ্বালা না করে তার কিছু পদ্ধতিও
রয়েছে।
চলুন জেনে নেই
চোখে পানি ছাড়াই পেঁয়াজ কাটার সাতটি পদ্ধতি-
(১) ফ্যানের
নিচে বা বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে বসে পেঁয়াজ কাটুন। বাতাসে সালফার গ্যাস উড়ে যায়।
ফলে চোখের সংস্পর্শে আসে না।
(২) কাটার ১৫
মিনিট আগে পেঁয়াজ ফ্রিজে রেখে দিন। এতে পেঁয়াজের অ্যামিনো অ্যাসিডের প্রতিক্রিয়া ধীর
হয়ে যায় ও রসায়ন পাল্টে যায়। উচ্চ তাপমাত্রা পেঁয়াজের অ্যামিনো অ্যাসিডগুলো সক্রিয়
করে তোলে। যার কারণে কাটার সময় চোখ জ্বালা করে। তবে পেঁয়াজ দীর্ঘসময় ফ্রিজে রাখা যাবে
না। এতে তা নরম হয়ে যাবে।
(৩) ধারালো
ছুরি ব্যবহার করুন। কারণ ধারালো ছুরি পেঁয়াজের কোষগুলোকে কম ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই ঝাঁঝ
কম বের হয়।
(৪) পেঁয়াজের
বোঁটার অংশে এনজাইম কেন্দ্রীভূত থাকে। কাটার আগে বোঁটার অংশ কেটে ফেলুন।
(৫) জ্বলন্ত
চুলা বা মোমবাতির পাশে পেঁয়াজ কাটলে ঝাঁঝ উড়ে যায়। কারণ আগুনের তাপে সালফার উপাদান
নিঃশেষ হয়ে পড়ে।
(৬) পেঁয়াজের
খোসা ছাড়িয়ে পানিতে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এতে সালফার যৌগ সংকুচিত হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে
যদিও পেঁয়াজের বহিরাবরণ পিচ্ছিল হয়ে যায়। তাই কাটার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
(৭) শেফদের
পরামর্শ- পেঁয়াজ দু’ভাগ করে, কাটা অংশ চপিং বোর্ডের উপর রেখে কাটলে গ্যাস সরাসরি চোখের সংস্পর্শে
আসতে পারে না।