পুরান ঢাকার বিভিন্ন
এলাকা যেন টাইম বোমার ‘ফ্যাক্টরি’। যেকোনো সময়
বিস্ফোরণে ঘটতে পারে হাজারো প্রাণহানি। এসব এলাকায় এখনো রয়েছে ১ হাজার ৮৯৬টি কেমিক্যাল
গুদাম। যার বেশির ভাগের ওপরই হাজারো মানুষের বসবাস। ঢাকা দক্ষিণ সিটির এক কর্মকর্তা
জানান, কেমিক্যাল গোডাউন সরানোর বিষয়টি ক্যাবিনেটে ঝুলে আছে।
দাউ দাউ করে আগুন
জ্বলে ওঠে ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলী এলাকায়। যে আগুনে প্রাণ যায় তরতাজা
১২৪ জনের। এরপর ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চুড়িহাট্টার আগুনে প্রাণ যায় আরও ৭১ জনের।
ওয়াহিদ ম্যানসন ছিল যার কেন্দ্র বিন্দু। এসবের পেছনে মূল উপাদান ছিল কেমিক্যাল গোডাউন।
একে তো ঘিঞ্জি এলাকা তার ওপর বিস্ফোরক দ্রব্য-সব মিলিয়ে মরণ ফাঁদ।
সবশেষ ঘটনা আরমানিটোলায়
হাজী মুসা ম্যানশনে। ঘাতক সেই কেমিক্যাল। ২৩ এপ্রিলের সেহরির সময় ভোর রাত। পুরো ভবনের
নিচতলায় কেমিক্যাল গোডাউন। ওপরে সেই মানুষের বসবাস। এবার প্রাণ গেল ৪ জনের। কিন্তু
ঘটনার পরেই শুধু তদন্ত কমিটি আর কেমিক্যাল গুদাম সরিয়ে নেয়ার তোরজোড় শুরু হয়। ক’দিন পরে আর কোনও তৎপরতা চোখে পড়ে না।
প্রাণে বেঁচে
যাওয়া বাসিন্দারা জানান, বাড়ির মালিক বলেছে আপনার এখানে নিরাপদ। এসব কেমিক্যালে বিস্ফোরণ
হয় না।
স্থানীয়রা জানান,
সবগুলো এলাকাতেই কেমিক্যালের কারখানা। যদি এটি একটু বড় এলাকায় হতো তাহলে হাজার মানুষের
মরদেহ নিয়ে যেতে হতো। এমন মৃত্যু আর দেখতে চাই না। এজন্য কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির
অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি বাড়ি বাড়ি ঘুরে-বিস্ফোরকের তালিকা
তৈরি করেছি। আমরা আর কাউকে লাইসেন্স দিচ্ছি না। এরই মধ্যে জরিপের কাজ শেষ হয়েছে। ১
হাজার ৮৯৬টি কেমিক্যাল গুদামের তালিকা করা হয়েছে। কেবিনেট সিদ্ধান্ত দিলেই শুরু হবে
কাজ।
একই বিষয়ে ঢাকার
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, সরকার সব বানিয়ে দিলেও যাবে না তা আপনারা
জানেন। সবার আগে তাদের ইচ্ছের বিষয়টি প্রয়োজন। এসব কেমিক্যাল গোডাউন সরানোর ক্ষেত্রে
প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।