Logo
শিরোনাম

বিলাস পণ্যে ব্যয় অব্যাহত রেখেছেন অতিধনীরা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ নভেম্বর ২০২৩ | ৬৭০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি ব্যয়। গত এক বছরে খাদ্য, জ্বালানি ও ভ্রমণ ব্যয় ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে। অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহনে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। ফলে দেশে দেশে মন্দার ঝুঁকি আরো ঘনীভূত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও বিলাস পণ্যে ব্যয় অব্যাহত রেখেছেন অতিধনী গ্রাহকরা। বিলাস পণ্য সরবরাহ করা মূল প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ফেরারি, ডিঅর, লুই ভিতোঁ ও ভার্সেস উল্লেখযোগ্য। প্রতিষ্ঠানগুলোর ১ হাজার ২০০ ডলারের স্নিকার্স এবং ৩ লাখ ডলারেরও বেশি মূল্যের স্পোটর্স কার রয়েছে। বর্তমানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গি অন্ধকারে পড়লেও সংস্থাগুলোর বিক্রি শক্তিশালী রয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলো পুরো বছরের মুনাফার পূর্বাভাসও বাড়াচ্ছে। যেখানে ওয়ালমার্ট, বেস্ট বাই, গ্যাপ ও অন্যান্য খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান মুনাফার পূর্বাভাস কমাচ্ছে এবং ব্যয় সংকোচনের অংশ হিসেবে নতুন কর্মী নেয়া স্থগিত কিংবা পুরনো কর্মীদের ছাঁটাই করছে।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের ভোক্তাদের আর্থিক টানাপড়েনের কারণে সংস্থাগুলোর বিক্রি নিম্নমুখী হয়েছে। ফলে সংস্থাগুলো অনিশ্চয়তায় পড়ে ব্যয় সংকোচনের মতো পদক্ষেপ নিচ্ছে। অন্যদিকে বিলাস পণ্যের অপ্রতিরোধ্য বিক্রি অতীতের অর্থনৈতিক মন্দার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিপুল পরিমাণ সম্পদ এবং সম্পদের বৈচিত্র্যপূর্ণ উৎস থাকায় ধনীরা প্রায়ই এ ধরনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির খুব কম প্রভাব অনুভব করেন। অতিধনীদের এ উচ্চব্যয় ইঙ্গিত দেয় যে কীভাবে মূল্যবান জিনিসপত্রের কেনাকাটা প্রায়ই মর্যাদার প্রতীক হিসেবে কাজ করে। বাজার গবেষণা ও ব্যবসায়িক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান লাক্সারি ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন পেডরাজা বলেন, আমাদের সমাজে ক্ষমতার প্রতীক থাকা শক্তিশালী একটি বিষয়। এটি এখনো অতিধনীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যেমন লুই ভিতোঁর এক জোড়া স্নিকার্স ১ হাজার ২৩০ ডলার এবং একটি ব্যাগের মূল্য ২ হাজার ৩৬০ ডলার। হাই-ফ্যাশন ব্র্যান্ডের মূল প্রতিষ্ঠান এলভিএমএইচ ক্রিশ্চিয়ান ডিঅর, ফেন্ডি ও গিভেন্সি ব্র্যান্ডেরও মালিক। চলতি বছরের প্রথমার্ধে এলভিএমএইচের আয় ২১ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৫৭০ কোটি ইউরোয় (৩ হাজার ৭৮০ কোটি ডলার) পৌঁছেছে। অন্যদিকে ইতালীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড ভার্সেসের এক জোড়া জুতা কিংবা শার্টের দাম সহজেই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সংস্থাটির আয় প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়ে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। ব্র্যান্ডটির মূল প্রতিষ্ঠান ক্যাপ্রি হোল্ডিংসের সামগ্রিক আয় এপ্রিল-জুন সময়ে ১৫ শতাংশ বেড়ে ১৩৬ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

ক্যাপ্রির প্রধান নির্বাহী জন আইডল বলেন, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও বিলাসী শিল্পে প্রমাণিত স্থিতিস্থাপকতার কারণে আমরা দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস নিয়ে আত্মবিশ্বাসী রয়েছি। যদিও আমাদের মধ্যে কেউই জানি না যে বছরের শেষার্ধে ঠিক কী অপেক্ষা করছে। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, বিলাসবহুল পণ্যের শিল্পটি বেশ শক্তিশালী। চলতি মাসের শুরুতে ইতালীয় সুপারকার নির্মাতা ফেরারি দ্বিতীয় প্রান্তিকের আয়ের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল। এ সময়ে সংস্থাটির আয় রেকর্ড ১২৯ কোটি ইউরোয় (১৩৩ কোটি ডলার) পৌঁছেছে। শক্তিশালী এ ফলাফলের পর চলতি বছরের আয়ের পূর্বাভাসও বাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বিলাসবহুল বিশ্বের বাইরে কিছু প্রতিষ্ঠানও ব্যয়বহুল পরিষেবা থেকে বিপুল আয়ের কথা জানিয়েছে। যেমন ডেল্টা এয়ারলাইনস অন্যান্য টিকিটের তুলনায় বিজনেস ও প্রিমিয়াম ইকোনমির মতো বিভাগগুলোর আয়ে শক্তিশালী পুনরুদ্ধারের বিষয়টি উল্লেখ করেছে।

অ্যাজিলিটি রিসার্চ অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ধনী গ্রাহক বিশেষজ্ঞ অমৃতা বান্তা বলেন, বিলাসবহুল শিল্পে সর্বদাই কিছুটা স্থিতিস্থাপকতা রয়েছে। মহামারী বিশ্বজুড়ে সম্পদবৈষম্যকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। অর্থনীতি স্থবিরতার এ সময়ে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে পড়লেও অধিকাংশ ধনী ও অতিধনীদের সম্পদ বেড়েছে।

নিউজ ট্যাগ: মূল্যস্ফীতি

আরও খবর

রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন এরদোয়ান

মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট ২০২৩