Logo
শিরোনাম

বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক কার্যক্রম সংকোচনের মুখোমুখি

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ নভেম্বর ২০২৩ | ৬৩৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি। লাফিয়ে বাড়ছে পণ্য ও সেবার দাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আরো বেশি অর্থ গুনতে হচ্ছে ভোক্তাকে। ফলে অতিপ্রয়োজনীয় নয়, এমন পণ্যের বিক্রি কমেছে। এ অবস্থায় বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক কার্যক্রম সংকুচিত হয়েছে। কোভিডজনিত বাধা ও ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতির চাপ নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। সব মিলিয়ে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মন্দার আশঙ্কা আরো বাড়ছে।

স্ট্রেইটস টাইমসের খবর অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত অর্থনৈতিক কার্যক্রম দুর্বল হয়ে পড়েছে। ফলে মূল্যবৃদ্ধি ও ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বকে মন্দায় ফেলে দেবে, এমন উদ্বেগ আরো জোরদার হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্সে (পিএমআই) বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক কার্যক্রম সংকোচনের চিত্র উঠে এসেছে। শিগগিরই এ পরিস্থিতি পরিবর্তনের আশাও সামান্য।

অর্থনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের অর্থনীতিবিদ পল ডেলস বলেন, সাধারণভাবে বললে মূল্যস্ফীতির অত্যন্ত উচ্চহার নিত্যপণ্য ও পরিষেবার জন্য পরিবারগুলোকে আরো বেশি অর্থ প্রদান করতে হচ্ছে। এতে অন্য আইটেমগুলোয় ব্যয় কমাতে বাধ্য হচ্ছে তারা। এটি অর্থনৈতিক উৎপাদন কমাতে ভূমিকা রাখছে। এক্ষেত্রে উচ্চ সুদহারের ভূমিকা কম। বরং উচ্চ মূল্যস্ফীতি এক্ষেত্রে বড় অবদান রাখছে বলেও মনে করেন তিনি।

ক্রেডিট রেটিং সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের তথ্যানুসারে, আগস্টে টানা দ্বিতীয় মাসের মতো যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সংকুচিত হয়েছে। এটি ২০২০ সালের মে মাসের পর সবচেয়ে দুর্বল স্তরে নেমে গিয়েছে। মার্কিন এ পরিসংখ্যান উৎপাদন ও পরিষেবা উভয় খাতের দুর্বল চাহিদার দিকে ইঙ্গিত করেছে। যখন ক্রমবর্ধমান সুদহার ও উচ্চ মূল্যস্ফীতি ভোক্তাদের ব্যয় সক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া নতুন ক্রয়াদেশ তিন মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সংকুচিত হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন করে কর্মী নিয়োগ কমিয়ে দিয়েছে।

পাশাপাশি বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির প্রায় অর্ধেক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা কিংবা এরই মধ্যে শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপের শিল্পোৎপাদনও সংকুচিত হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটনের মতো পরিষেবাগুলোর লকডাউন-পরবর্তী পুনরুদ্ধার প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। জার্মানি বিশেষভাবে পিছিয়ে রয়েছে। দেশটির অর্থনৈতিক উৎপাদন ২০২০ সালের জুনের পর সবচেয়ে বড় পতন হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে রুশ গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমানোয় ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি এমন বিপর্যয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ফ্রান্সে অর্থনৈতিক কার্যক্রম দেড় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সংকুচিত হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যের পিএমআই এখনো ৫০ পয়েন্টের ওপরে রয়ে গিয়েছে, যা সম্প্রসারণের চিত্র তুলে ধরে। তবে দেশটির কারখানা কার্যক্রমে অপ্রত্যাশিত বড় পতন হয়েছে।

এদিকে নতুন করে কোভিড সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় জাপানে শিল্পোৎপাদন সংকুচিত হয়েছে। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তা চাহিদা কমে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। জাপানের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার পরিষেবা খাত সাত মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো সংকুচিত হয়েছে। যদিও পর্যটন খাতে সম্প্রসারণের জন্য সংকোচনের হার কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে দীর্ঘস্থায়ী জিরো কোভিড নীতি এবং ক্রমবর্ধমান রিয়েল এস্টেট খাতে মন্দা ভোক্তা ও ব্যবসায়িক আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। প্রধান অর্থনীতিগুলোর এ পরিসংখ্যান বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে। যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ঋণের খরচ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দিয়েছে। প্যাসিফিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টসহ বিনিয়োগকারীদের মতে, ক্রমবর্ধমান সুদহার মন্দার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর এ পদক্ষেপ কতটা সফল হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের অর্থনীতিবিদ অ্যান্ডু হারকার বলেন, ইউরো অঞ্চলের পরিসংখ্যানগুলো তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) অর্থনৈতিক সংকোচনকে নির্দেশ করে। অর্থনৈতিক দুর্বলতা আরো বিস্তৃত হওয়ার কারণে গাড়ি নির্মাতা থেকে পর্যটন ও রিয়েল এস্টেট কোম্পানি পর্যন্ত বিভিন্ন খাতের উৎপাদন নিম্নমুখী হতে দেখা যাচ্ছে।

নিউজ ট্যাগ: মূল্যস্ফীতি

আরও খবর

রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন এরদোয়ান

মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট ২০২৩