Logo
শিরোনাম

চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ধীরগতির আশঙ্কা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ জুন ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ১১ নভেম্বর ২০২৩ | ১৩০৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

সাম্প্রতিক লকডাউন শেষে চীনের অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখা দিয়েছে। গত মাসে দেশটির কারখানা কার্যক্রম অপ্রত্যাশিতভাবে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। যদিও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে ভোক্তা ব্যয় নিম্নমুখী রয়ে গিয়েছে। এটি কঠোর কোভিডজনিত নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কাটিয়ে অর্থনীতি টেনে তোলার ক্ষেত্রে নীতিনির্ধারকদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। সব মিলিয়ে এ বিপর্যস্ত অবস্থা কাটিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ধীর হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মার্চ ও এপ্রিলে চীনের কয়েক ডজন শহরে পূর্ণ বা আংশিক লকডাউন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের কঠোর আঘাত করেছিল। বাণিজ্যিক কেন্দ্র সাংহাইয়ে দীর্ঘায়িত লকডাউনসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিধিনিষেধ দেশটির অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়। এর পরে গত মাসে দেশটির কারখানা কার্যক্রম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের (এনবিএস) তথ্য অনুসারে, মে মাসে কারখানা কার্যক্রম দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। এর আগে এপ্রিলে ২ দশমিক ৯ শতাংশ পতন হয়েছিল। যেখানে রয়টার্সের জরিপে অর্থনীতিবিদরা গত মাসে কারখানা কার্যক্রম দশমিক ৭ শতাংশ সংকোচনের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। কোভিডজনিত বিধিনিষেধ শিথিল এবং শক্তিশালী বৈশ্বিক চাহিদা শিল্প খাতের উন্নতিতে সহায়তা করেছে।

গত মাসে চীনের রফতানি প্রত্যাশা ছাড়িয়ে দুই অংকের প্রবৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ কারখানাগুলো পুনরায় চালু হয়েছে এবং সরবরাহ চেইনে জটিলতা কিছুটা শিথিল হয়েছে। মে মাসে খনি খাতের বার্ষিক উৎপাদন ৭ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে উৎপাদন শিল্প বেড়েছে দশমিক ১ শতাংশ। এর মধ্যে নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ি উৎপাদন বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০৮ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। চীনের ভোক্তা ব্যয় এখনো বড় ধরনের সংকোচনের মধ্যে রয়েছে। কারণ ভোক্তারা সাংহাই ও অন্য শহরগুলো বাড়িতে সীমাবদ্ধ ছিলেন। গত মাসে দেশটির খুচরা বিক্রি বার্ষিক ৬ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। আগের মাসের তুলনায় এ হ্রাসের হার ১১ দশমিক ১। যদিও শস্য, ভোজ্যতেল এবং খাদ্য ও পানীয়ের মতো মৌলিক পণ্যে বর্ধিত ব্যয়ের কারণে আরো বড় সংকোচনের আশঙ্কা করা হয়েছিল।

জংইউয়ান ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ওয়াং জুন বলেন, আমাদের ভোক্তা ব্যয় নিয়ে অত্যধিক আশাবাদী হওয়া উচিত নয়। কারণ পুনরুদ্ধারটি অনেক বেশি ধীর হয়েছে। বারবার কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে ভোক্তাদের আয় বাড়ার গতিও ধীর হয়েছে। পাশাপাশি তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক বেশি সতর্ক রয়েছেন। এ কারণে ভোক্তা ব্যয় হঠাৎ করে শক্তিশালীভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা নেই। কোভিডজনিত বিধিনিষেধে অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি খাত ক্যাটারিং শিল্পের বিক্রি গত মাসে ২১ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। এপ্রিলে সংকোচনের হার ছিল ২২ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির চালক স্থায়ী সম্পদ বিনিয়োগ বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৬ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। যদিও ৬ শতাংশ বাড়ার আশা করা হয়েছিল। যদিও এটি চার মাসে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় ধীর হয়েছে। দেশটিতে বেকারত্ব হার এপ্রিলের ৬ দশমিক ১ থেকে মে মাসে ৫ দশমিক ৯ শতাংশে নেমেছে। যদিও এটি সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৫ শতাংশের উপরে রয়ে গিয়েছে।

ডাচ আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান আইএনজির প্রধান চীনা অর্থনীতিবিদ আইরিশ প্যাং বলেন, কারখানা কার্যক্রমের পরিসংখ্যান মে মাসের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের একটি চিত্র তুলে ধরে। যদিও সব মিলিয়ে এ পরিসংখ্যান অনেক ধীর। সরকার সম্ভবত আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করার চেষ্টা করবে।

এ তথ্য প্রকাশের পর চীনা পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা তৈরি হয়। এনবিএসের একজন মুখপাত্র ফু লিংহুই একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নীতি সমর্থনের কারণে জুনে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে আরো উন্নতি হবে বলে আশা করছি। যদিও আন্তর্জাতিক পরিবেশ এখনো জটিল ও গুরুতর। আমাদের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধার এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের মূল সূচকগুলোও নিম্ন স্তরে রয়ে গিয়েছে।

নিউজ ট্যাগ: চীন

আরও খবর

রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন এরদোয়ান

মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট ২০২৩