Logo
শিরোনাম

চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি ৭৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৬ এপ্রিল ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ নভেম্বর ২০২৩ | ২৭১৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

দীর্ঘদিন ধরেই চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ চলছে ভারতের। ২০২০ সালের মাঝামাঝিতে প্রতিবেশী দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে সংঘাত এ বিরোধে নতুন মাত্রা যোগ করে। প্রভাব পড়ে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্কেও। এ পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীনা পণ্যের নির্ভরতা কমানোর আহ্বান জানান। এর পরও ২০২১-২২ অর্থবছরে বেইজিংয়ের সঙ্গে নয়াদিল্লির বাণিজ্য ঘাটতি ৭ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের রেকর্ড স্পর্শ করেছে। এটিকে সরকারের আত্মনির্ভর ভারত অর্জনের পথে বড় একটি ধাক্কা হিসেবে অভিহিত করেছেন বিশ্লেষকরা। খবর দ্য প্রিন্ট।

চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের (জিএসিসি) তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত চীনে ২ হাজার ৬৪৬ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে ভারত। অন্যদিকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি থেকে ১০ হাজার ৩৪৭ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে দেশটি।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পরিসংখ্যান সরবরাহ করেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, গত অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে চীনের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৬ হাজার ৫৩৪ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ ঘাটতির পরিমাণ আগের অর্থবছরের তুলনায় অনেক বেশি। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪ হাজার ৪০২ কোটি ডলার, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৪ হাজার ৮৬৫ কোটি ডলার এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৩৫৭ কোটি ডলার। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ ঘাটতি ৬ হাজার কোটি ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়েছিল। সে সময় ভারতের এ ঘাটতি ছিল ৬ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। এর পেছনে চীনে ভারতের আকরিক লোহা ও তুলা রফতানিতে উল্লেখযোগ্য হ্রাসকে দায়ী করা হয়েছিল। তবে ২০১৮-১৯ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত বাণিজ্য ঘাটতি নিম্নমুখী প্রবণতায় ছিল।

জিএসিসির তথ্য অনুসারে, ৩১ মার্চ শেষ হওয়া অর্থবছরে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে মোট দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১২ হাজার ৯৯৩ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। ভারত থেকে চীনের আমদানি প্রাক-কভিড পর্যায়কে ছাড়িয়ে গিয়েছে। এ সময়ে দেশটি ২ হাজার ৬৪৬ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। যেখানে আগের অর্থবছরে এটি ছিল ১ হাজার ৭৫১ কোটি ডলার।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত শীর্ষ বাণিজ্য প্রচার সংস্থা ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনস (এফআইইও) অনুসারে, চীন থেকে আমদানি করা শীর্ষ পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস পণ্য, যন্ত্রপাতি ও সার। এ পণ্যগুলোই চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করেছে। এফআইইওর ডিজি ও সিইও অজয় সাহাই বলেন, চীন থেকে আমাদের মোট আমদানির প্রায় ৫০ শতাংশই ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস পণ্য ও যন্ত্রপাতি রয়েছে।

জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইকোনমিক স্টাডিজ অ্যান্ড প্ল্যানিংয়ের অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ বিশ্বজিৎ ধর বলেন, চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতির পেছনে তিনটি প্রধান কারণ। প্রথমত, বেশির ভাগ প্রধান অর্থনীতির মতো চীন মহামারীর বিপর্যয়কর প্রভাব অনুভব করেনি। প্রকৃতপক্ষে, মহামারীর মধ্যেও দেশটির বাণিজ্য প্রসারিত হয়েছে। দ্বিতীয়ত যখনই বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়, তখন চীন আন্তর্জাতিক বাজার নির্ভরতা কমিয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করে। ২০০৮ সালে বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের সময়ও দেশটি এমনটা করেছিল। তৃতীয়ত, দেশটির আমদানি ও রফতানি পণ্যের ধরনের পার্থক্য। চীন ভারত থেকে প্রচুর আকরিক লোহা ও ধাতু আমদানি করে, যা কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহূত হয়। তবে দেশটি আমাদের এখানে বিপুল পরিমাণ সম্পূর্ণ পণ্য রফতানি করে।

বিশ্বজিৎ ধরের মতে, তবে ইতিবাচক খবর হলো চীনে আমাদের রফতানি বাড়ছে। যদিও তা এখনো অপর্যাপ্ত। এক্ষেত্রে উন্নতির জন্য নয়াদিল্লিকে এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।

নিউজ ট্যাগ: চীন

আরও খবর

এলপিজির দাম আরও বাড়ল

বৃহস্পতিবার ০২ নভেম্বর 2০২3