Logo
শিরোনাম

চলচ্চিত্র ও জীবনের মহানায়ক উত্তম কুমার

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ নভেম্বর ২০২৩ | ১০৪০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

উত্তম কুমার। নামটা শুনলেই চোখে ভাসে এক অবয়ব তিনি আসলেই কি অভিনয় করেন নাকি জীবন তুলে ধরেন! সদা হাস্যোজ্জ্বল এক দীপ্ত প্রতীভা। আজকের দিনে আমরা দেখি সেলিব্রিটি তকমা আর উত্তম কুমার ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের সর্বকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং কাঙ্ক্ষিত অভিনেতা। আবার তিনি জনমানুষের কতখানি কাছের তিনি তা আজ শুনে কারও কাছে অবিশ্বাস্যও মনে হয়।

জনপ্রিয়তার এই তকমার বাইরে মনে হলেও তিনি ছিলেন ভীষণ কোমল হৃদয়ের প্রচন্ড বিনয়ী এবং আন্তরিক। একাধারে মেধাবী, প্রজ্ঞাবান, বিনয়ী, কোমল হৃদয় এবং দুর্দান্ত প্রতিভাবান এই অভিনেতা এতো বিখ্যাত হওয়া সত্বেও শ্যুটিং ইউনিটের অতি সাধারণ কর্মীরও দেখভাল করতেন। বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য তার ত্যাগ ছিল অবর্ণনীয়। চলচ্চিত্র থেকে উপার্জন করা সমস্ত অর্থ ফের বিনিয়োগ করেছেন চলচ্চিত্রেই। চলচ্চিত্র প্রযোজনায় তার প্রযোজিত বহু চলচ্চিত্র ফ্লপ তকমা পাওয়ার পরও ফের টাকা ঢালতে দ্বিধা বোধ করেননি।

এমনও বহুবার হয়েছে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনেতা হিসেবে বড় পারিশ্রমিকে যুক্ত হয়েছিলেন কিন্তু অর্থের সংকুলান না হওয়ায় পরিচালক চলচ্চিত্রের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তখন উত্তম কুমার নিজের পারিশ্রমিক কেটে নিজের গাঁট থেকে পয়সা দিয়েছেন যেন চলচ্চিত্রটা অর্থের অভাবে পড়ে না থাকে। চলচ্চিত্রের শুটিং বন্ধ না হয়ে যায়। চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি মানুষের কল্যানে আজীবন কাজ করেছেন। কোনো শিল্পী থেকে শুরু করে ফিল্ম ইউনিটের সাধারণ টি বয় পর্যন্ত তার আন্তরিকতায় মুগ্ধ হতো। তিনি যেমন‌ ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক তেমনি ছিলেন জীবনেরও মহানায়ক। তেমনই কয়েকটি ঘটনা উত্তম কুমারের জীবনের।

সেবার 'যদুবংশ' চলচ্চিত্রের শুটিং চলছিলো। শট দিতে গিয়ে উত্তমকুমারের হঠাৎ খেয়াল হলো, উপর থেকে একটা আলো পড়ার কথা ছিল কিন্তু সেটা জ্বলেনি। জ্বালানোর কথা যার, সেই লাইটম্যানের নাম কালী। কালী মন খারাপ করে বসে আছেন। শট দেয়া শেষ হলে উত্তমকুমার মেকআপ রুমে ডাকলেন কালীকে। কালী তো ভয়ে কুঁকড়ে গেছেন রীতিমতো। উত্তম কুমার আজ নিশ্চয়ই বকাবকি করবেন। কাছে যেতেই উত্তমকুমার তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ''কী রে, কিছু হয়েছে?' প্রশ্ন শুনে কেঁদে ফেললেন কালী। ফের উত্তম জিজ্ঞেস করলেন, 'তোকে আজ বেশ আনমনা মনে হলো!'

কালী উত্তরে বললেন, 'মেয়ের বিয়ের ঠিক হয়েছে দাদা। টাকা জোগাড় করতে পারিনি। সেই চিন্তায় আসলে বারবার ভুল হচ্ছিলো। আর কখনও এমন ভুল হবে না।' ঠিক পরদিনই বাড়িতে ডেকে কালীর হাতে একটি খামে টাকা দিয়েছিলেন উত্তম কুমার।

'জীবনমৃত্যু' চলচ্চিত্রের শুটিং হচ্ছে। চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনেতা অভিনেত্রী উত্তম কুমার ও সুপ্রিয়া দেবী। তাদের বিশ্রামের জন্য ঠিক করা হয়েছে সরকারি ডাকবাংলো। উত্তমকুমার এসে সরকারি ডাকবাংলোতে অন্য অভিনেতা অভিনেত্রীদের না দেখে প্রযোজককে বললেন, 'না না, শুধু আমরা কেন! এখানেই সবাই থাকুক।'' কিন্তু তাতে তো বহু খরচ। প্রযোজক সেই কথা বদলে নানা কথা বলছেন। হঠাৎ উত্তম কুমার বলে উঠলেন, 'তাহলে আমায় ছেড়ে দিন। আমি এ চলচ্চিত্রে অভিনয় করবো না। যেখানে শিল্পী বলতে কেবল প্রধান চরিত্রকে ধরা হয় সেখানে মনে হয় না আমার অভিনয় করা উচিত।' উত্তম কুমারের এই কথাতেই কাজ হলো। প্রযোজক সবার জন্য ব্যবস্থা করলেন। দুপুরের খাবারও সবাই একসঙ্গে খেলেন।

'সাগরিকা' চলচ্চিত্রের সময়ের কথা। চলচ্চিত্রের কিছুদিন শুটিং হওয়ার পর খবর এলো প্রযোজক ভীষণ অসুস্থ। টাকার অভাবে শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড়। এদিকে তখন পরিচালক সরোজ দে'র মাথায় হাত। একদিকে সুচিত্রা সেনের শিডিউল পাওয়াই ভীষণ দুরূহ। পাহাড়ি সান্যাল, কমল মিত্রদের নিয়ে চলচ্চিত্রের কাজ অনেকটুকু এগিয়েছে। শেষে বাধ্য হয়েই চলচ্চিত্রের পরিচালক সরোজ দে উত্তমকুমারকে ধরলেন। উত্তমকুমার বললেন, 'কাজ বন্ধ করবে না। শুটিং চলবে। তোমাকে ৩০ হাজার টাকা দিচ্ছি, তুমি শুটিং চালিয়ে নিবে।' উত্তমকুমার টাকা দিলেন যেদিন পরদিনই প্রযোজক শুনেই বললেন 'এটা কি করে হয়! আমাকে একবার বললেও তো হতো।' পরে অবশ্য উত্তম কুমারের সেই টাকা লাগেনি। কিন্তু উত্তমকুমারের ওই ভরসা আজীবন স্মরণ করে গেছেন চলচ্চিত্রের পরিচালক। সাগরিকা চলচ্চিত্র মুক্তি পাওয়ার পর সুপার হিট হয়েছিলো।

অভিনেত্রী মণি শ্রীমাণি তার স্মৃতিকথায় লিখেছিলে ঠিক এমন। সেবার হঠাৎই মেয়ের বিয়ে ঠিক হলো অভিনয় শিল্পী মণি শ্রীমণির। এদিকে হাতে টাকা পয়সা নেই মণি শ্রীমণির। চলচ্চিত্রের অভিনয় শিল্পীদের মধ্যে অনেকেই ভাবছেন চাঁদা তুলে টাকার জোগাড় করবেন। কিন্তু এভাবে করলে নিজের কাছে খারাপ লাগবে মণি শ্রীমণির। এদিকে তখনো উত্তম কুমার বিষয়টি জানেন না। উত্তম কুমারের ভাই তরুণ কুমার শুনেই রাতে উত্তম কুমারকে বললেন সব‌। এরপর উত্তম কুমার প্রস্তাব দিলেন কলকাতার বিশ্বরূপা রঙ্গমঞ্চে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করার। কিন্তু সেখানে যতো টাকা টিকিট বিক্রি করে আয় হবে সব মণি শ্রীমণিকে দেয়া হবে। কেউ পারিশ্রমিকও নেবেন না। সেই অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন উত্তম কুমার। অনুষ্ঠানে যতো টাকা উঠলো সে টাকা যথেষ্ট ছিল না। আর তাই উত্তম কুমার অনুষ্ঠান শেষে খামে ভরে টাকা পাঠালেন মণি শ্রীমণিকে। সঙ্গে অনুরোধ কেউ যেন টের না পায়।

সেবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হরেন্দ্রকুমার মুখোপাধ্যায় একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন উত্তম কুমারকে। তো উত্তম কুমার ভাইকে নিয়ে সে দাওয়াতে যাচ্ছেন। পথিমধ্যে তার মনে হলো একটি জিনিস তো তিনি ভুল করেছেন। রাজ্যপালের বাড়ির সামনে থেকে গাড়ি ঘোরাতে বললেন ড্রাইভারকে। পাশে তরুণ কুমার বললেন, 'তোমার হুঁশ থাকে না। কিছু ফেলে এসেছো নিশ্চয়ই। আমি আগেই জানতাম।' জবাবে উত্তম কুমার বললেন, একবার টালিগঞ্জে যেতে হবে। জরুরি প্রয়োজন। তৎক্ষণাৎ গাড়ি ঘুরে টালিগঞ্জ চলে গেল। এবার যদি আপনাকে একটা প্রশ্ন করি ওইদিন রাতে গাড়ি ঘুরিয়ে কথায় গিয়েছিলেন উত্তম কুমার? কী এমন ভীষণ প্রয়োজন ছিল তার? উত্তরটা অকল্পনীয় মনে হতে পারে। রাজ্যপালের আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে রাজ্যপালের বাড়ির সামনে থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে তিনি গিয়েছিলেন সেই লাইটম্যান কালীর বাড়িতে কালীর মেয়ের বিয়ে খেতে।

উত্তম কুমারের লিপসিংয়ে আমরা চলচ্চিত্রে আসলে যার গান শুনি তিনি কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। তাদের মধ্যে দারুণ সম্পর্ক ছিল সবসময়। কিন্তু শেষদিকে খানিকটা ভাঙন ধরেছিলো সম্পর্কে। কেউই আর এগিয়ে আসেননি তেমন। তবে উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর চলচ্চিত্রের গান গাইতে গিয়ে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন 'উত্তম চলে যেতে আমার গানের মুখটাই চলে গেল।'' ওর মতো তো আর কেউ পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পারবে না!'

উত্তম কুমারের কতোটা জনপ্রিয়তা ছিল তা আজকের দিনে বসে কল্পনা করা যাবে না। বিশেষ করে পত্রিকা অফিসে প্রতিদিন হাজার হাজার চিঠি আর শত শত ফোন আসতো উত্তম কুমারের সাথে শুধু একবার কথা বলিয়ে দেয়ার জন্য। একটাবার যেন তাদের চিঠির উত্তর দেন উত্তম কুমার। জন্মদিনে চিঠির সংখ্যা কোনো কোনো বছর লাখ খানেকও হতো। উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর এক নারী পত্রিকা অফিসে উত্তম কুমারকে নিয়ে এক চিঠিতে লিখেছিলেন 'উত্তমের মৃত্যুতে আমি বিধবা হলাম।' উত্তমকুমারের চলচ্চিত্রের তালিকায় চোখ বুলালে আরেকটা ব্যাপার মনে হয়, কতো বিচিত্র ভূমিকায় তিনি অভিনয় করেছেন। আবার সময়ের সঙ্গে দারুণভাবে পাল্টেও নিয়েছেন তিনি নিজেকে। শেষদিকে নায়কের ভূমিকা ছেড়ে অভিনয় করেছেন অসামান্য সব চরিত্রে।

উত্তম কুমার যে কতোটা বিনয়ী তা অবর্ণনীয়। একজন প্রধান চরিত্রের অভিনয় শিল্পী থেকে প্রোডাকশন বয়ের সঙ্গেও তার দারুণ সম্পর্ক ছিলো। যা আজকের দিনে মাঝেমাঝে কল্পনাও করা যায়না। সমাজ সচেতন, চিন্তাশীল, অথচ প্রচন্ড ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ছিলেন তিনি। পা থেকে মাথা পর্যন্ত চলচ্চিত্র প্রাণ। উত্তম কুমারের আত্মজীবনী 'আমার আমি' পড়লে বোঝা যায় চলচ্চিত্রের প্রতি কতোটা ত্যাগী ও আত্মপ্রাণ ছিলেন। আত্মজীবনীতে উত্তম কুমার লিখেছিলেন, 'চলচ্চিত্র আমাকে এতোটা দিয়েছে, আমি দিবো না চলচ্চিত্র শিল্পকে।' বাংলা চলচ্চিত্রে যদি কোনো ব্যক্তির আর্থিক ও সামগ্রিকভাবে অবদানের কথা আসে তবে তিনি নিঃসন্দেহে উত্তম কুমারই হবেন। তাইতো তিনি মহানায়ক। একই সঙ্গে বাংলা চলচ্চিত্রের, আবার জীবনেরও।  আজ মহানায়ক উত্তম কুমারের চলে যাওয়ার দিন। প্রয়াণ দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই মহানায়কের প্রতি।

নিউজ ট্যাগ: উত্তম কুমার

আরও খবর



জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৫৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত শুরু হয়।

ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।

ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, এবার জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭, ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।


আরও খবর



বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৪৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৭টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় নামে।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। নামাজের সময়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। নামাজের পর একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

জাতীয় মসজিদে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূরউদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।

৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


আরও খবর



আজ ঈদ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৮০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রোজা শেষে আবারও এলো ঈদ। খুশির বার্তা নিয়ে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা পূর্ণ হলো। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেনে দেশবাসী।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল যে দিবসে তারা খেলাধুলা করতো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এ দুদিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুই দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৪)

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে।ঈদের দিন সকালে পুরুষদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বিশেষ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত তাকবিরসহ জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা এবং তারপর ঈদের খুতবা দেওয়া ও শ্রবণ করা। ঈদের নামাজ খোলা ময়দানে আদায় করা উত্তম। 

ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহে সম্ভব না হলে বায়তুল মোকাররমে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।  তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।  চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন  সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছে ১০ এপ্রিল। অফিস খুলবে ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন টানা ১০ দিন। লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হয়েছে কম। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সময় নিয়ে নিজের শেকড়ে ফিরতে পেরেছেন।

কর্মব্যস্ত এই নগরীর সবাই যখন ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছেড়েছেন তখন এই ঢাকা হয়ে উঠেছে এক অন্য শহর। বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র, নেই চিরচেনা রূপ। এখন আর ঢাকার সড়কে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। মুহূর্তেই চলে যাওয়া যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

এদিকে দেশের সবার জন্য সুখী, আনন্দময় ও নিরাপদ ঈদুল ফিতরের কামনা করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।

রাজনৈতিক নেতাদের অধিকাংশই নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবার। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করবেন, আবার কেউ নামাজ শেষে যাবেন এলাকায়। সব মিলিয়ে  নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তারা, যোগ দেবেন সামাজিক অনুষ্ঠানেও।


আরও খবর