চলতি বছর নিকেল রফতানি থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরিকল্পনা রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার। এ কারণে নিকেলের রফতানি শুল্ক নীতিমালা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের জন্য এ নীতিমালা জারি করা হবে। পাশাপাশি উচ্চমানসম্পন্ন নিকেল উত্তোলনে স্থানীয় খনিগুলোকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া এক সময় বিশ্বের শীর্ষ নিকেল আকরিক রফতানিকারক ছিল। ২০২০ সালে দেশটি অপ্রক্রিয়াজাত নিকেল রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে। বিগলন শিল্প খাতে বিনিয়োগ করতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের আকৃষ্ট করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। বিনিয়োগের বেশির ভাগই ব্যয় হয়েছে নিকেল পিগ আয়রন (এনপিআই) ও ফেরোনিকেল উত্তোলনে। আর এসব ধাতুতে যে নিকেল পাওয়া যায় তা অত্যন্ত নিম্নমানের। নিকেলসমৃদ্ধ। ফলে সিদ্ধান্ত প্রত্যাশিত সাফল্যের মুখ দেখেনি।
সরকারসংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী নিকেল পিগ আয়রন ও ফেরোনিকেলের ওপর শুল্ক আরোপ করা হবে। তবে পরিকল্পিত শুল্ক হারসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানায়নি সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তর। তবে নিকেলের বর্তমান বাজারদরের ওপর ভিত্তি করে সরকার শুল্কহার নির্ধারণ করবে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি কয়লার দামকেও এক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখা হবে। ইন্দোনেশিয়ায় নিকেলের বিপুল ভূগর্ভস্থ মজুদ রয়েছে। এ মজুদকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে তত্পর হয়ে উঠেছে দেশটির সরকার। উদ্দেশ্য দেশের মাটিতেই বৈদ্যুতিক গাড়ি সংযোজন ও এসব গাড়ির ব্যাটারি উৎপাদন করা।
ইন্দোনেশিয়া এরই মধ্যে এলজি ও হুন্দাইয়ের মতো দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বিনিয়োগ চুক্তি নিশ্চিত করেছে। এসব চুক্তির আওতায় বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি তৈরি করা হবে। শীর্ষ বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা যাতে দেশটিতে বিনিয়োগ করে, সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনাও রয়েছে তার।
বিশ্লেষকরা জানান, চলতি বছর ইন্দোনেশিয়ায় নিকেলের চাহিদা ৫ দশমিক ২ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে। চলতি বছর ধাতুটির উদ্বৃত্ত থাকবে ১ লাখ ৩৭ হাজার টন। আগামী বছর উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ৪৯ হাজার টনে। উড ম্যাকেনজির প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০২৬-৩৮ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে অতিরিক্ত আরো ১৬ লাখ ৫০ হাজার টন নিকেলের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হবে। এর সিংহভাগই আসবে ইন্দোনেশিয়া থেকে।