Logo
শিরোনাম

অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবেলায় চাপ দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ আগস্ট ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ৫৪৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

বিশ্বজুড়ে সুপেয় পানির অভাব প্রকট হচ্ছে। কেনিয়া থেকে ক্যালিফোর্নিয়া এবং ইউরোপের প্রায় অর্ধেক অঞ্চলে খরা দেখা দিয়েছে। ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ ও বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে পণ্য পরিবহন কার্যক্রম। বাড়ছে অর্থনৈতিক ঝুঁকি। এ অবস্থায় সংকটপূর্ণ সম্পদ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে পরিচালনা বোর্ডে চাপ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি পানির ঘাটতি সমস্যা সমাধানে কাজ করা সংস্থাগুলোও বিনিয়োগকারীদের কাছে আলাদাভাবে মনোযোগ পাচ্ছে। গত সপ্তাহে চীনের সিচুয়ান প্রদেশে রেশনিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের ঘোষণা দেয়া হয়। একদিকে খরার কারণে জলাধারের পানি কমে উৎপাদন ব্যাহত অন্যদিকে তীব্র দাবদাহের কারণে বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়ে গিয়েছে। এ অবস্থায় দেশটিতে তীব্র বিদ্যুৎ ঘাটতি তৈরি হয়েছে। শুধু চীনে নয়, খরার কারণে রাইন নদীর পানি শুকিয়ে জার্মানিতে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। একই কারণে অনাহারের ঝুঁকিতে পড়েছে হর্ন অব আফ্রিকার দুই কোটিরও বেশি মানুষ। অর্থের হিসাবে এসব ক্ষতির পরিমাণও ব্যাপক।

এ অবস্থায় সুপেয় পানির অভাব নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে প্রায় ১০ লাখ কোটি ডলার পরিচালনাকারী বিনিয়োগকারীদের একটি দল জানিয়েছে, আরো ভালোভাবে সংকটপূর্ণ সম্পদ ব্যবহারে বোর্ডগুলোকে চাপ দেয়ার প্রচেষ্টা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে তারা। এক্ষেত্রে এমনকি পানি অপচয় করা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালকের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ারও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবেলায় তারা এ পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পরিবেশ নিয়ে কাজ করা প্লাটফর্ম সিডিপি ও প্ল্যানেট ট্র্যাকারের মে মাসের বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, পানিসংক্রান্ত ঝুঁকির কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো অন্তত ২২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার লোকসানের মুখোমুখি হতে পারে। সিডিপির করপোরেশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইনের বৈশ্বিক পরিচালক ডেক্সটার গ্যালভিন বলেন, সুপেয় পানির অভাবের ক্ষতিগুলো এখন আর দূরবর্তী ঘটনা নয়। এগুলো এখন প্রতিনিয়ত ঘটছে।

যেমন খরাজনিত বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে গত সপ্তাহে টয়োটা চীনের সিচুয়ান প্রদেশের একটি কারখানার উৎপাদন স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে। জাতিসংঘের মতে, বর্তমানে ২৩০ কোটি মানুষ সুপেয় পানির অভাবে থাকা দেশগুলোয় বসবাস করছে। জটিল এ পরিস্থিতিতে সমাধান খুঁজতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান তহবিল চালু করেছে। বিনিয়োগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান মর্নিংস্টার ডিরেক্টের তথ্যানুসারে, পাঁচ বছরে বিশ্বজুড়ে ২৩টি পানিসংক্রান্ত তহবিল চালু হয়েছে। জুলাইয়ের শেষ নাগাদ তহবিলগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ ৮০০ কোটি ডলার।

৮১ কোটি ২০ লাখ ডলারের ভার্টাস ডাফ অ্যান্ড ফেলপস ওয়াটার ফান্ডের জুনিয়র পোর্টফোলিও ম্যানেজার ডেভিড গ্রুপহাউজ বলেন, পানির সংকট আরো খারাপ হওয়ার কারণে বিশ্বজুড়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। পানি কমে যাওয়ার কারণে রাইন নদী দিয়ে যখন জাহাজ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তখন জার্মানদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতি মানুষকে পানি ও আমাদের তহবিল নিয়ে চিন্তা করতে বাধ্য করছে। তবে তহবিল ব্যবস্থাপক ও বিশ্লেষকরা বলেছেন, পানি নিয়ে কাজ করা অনেক প্রতিষ্ঠান থাকলেও বিশুদ্ধ পানির ওপর মনোযোগ দেয়া তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম। আবার প্রয়োজনের তুলনায় এ খাতে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ও বিনিয়োগের পরিমাণও অপ্রতুল। ২৮ কোটি ২০ লাখ ডলারের থিমেটিকস ওয়াটার ফান্ডের সহব্যবস্থাপক সাইমন গোটেলিয়ারের অনুমান, বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৫-৩০টি পানিসংক্রান্ত বিনিয়োগযোগ্য ইউটিলিটি রয়েছে। পাশাপাশি পানি প্রযুক্তি নিয়েও মুষ্টিমেয় ব্যবসা রয়েছে। প্রত্যেকেই পানি নিয়ে কিছু করতে চায়। কিন্তু পাবলিক ইক্যুইটির মাধ্যমে কাজ করা কঠিন।

পানির সমাধান নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর সংখ্যা খুব বেশি বাড়েনি। পাশাপাশি বিদ্যমান সংস্থাগুলোর আর্থিক পূর্বাভাসও ভালো অবস্থায় নেই। বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণে অন্যতম বাধা হিসেবে কাজ করছে। পানি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা জাইলেমের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যালবার্ট চো বলেন, ২০২৫ সাল পর্যন্ত আমাদের বার্ষিক প্রায় ৫ শতাংশ হারে আয় বাড়বে বলে আশা করছি। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটি উচ্চহার নয়। তবে পানি খাতের জন্য ৫ শতাংশ আয় বৃদ্ধিও তাত্পর্যপূর্ণ।

নিউজ ট্যাগ: সুপেয় পানি

আরও খবর

রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন এরদোয়ান

মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট ২০২৩