Logo
শিরোনাম

পুতিন কি পারমাণবিক অস্ত্র বেছে নেবেন

প্রকাশিত:সোমবার ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ১৬ অক্টোবর ২০২৩ | ৯৪০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

আমি অনেক সময় ভেবেছি, 'পুতিন কখনো এটি করবেন না।' পরবর্তীতে তিনি তা করেছেন। তিনি কখনোই ক্রিমিয়া দখল করবেন না? তিনি তা করেছেন। ডনবাসে পুতিন কখনো যুদ্ধ শুরু করবেন না, তিনি করেছেন। ইউক্রেনে কখনোই তিনি পুরো মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করবেন না, তিনি তা করেছেন। 

তাই আমি উপসংহারে পৌঁছেছি 'কখনো করবেন না', এই বাক্য ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যায় না। তাই এতে নতুন করে একটি অস্বস্তিকর প্রশ্ন জেগেছে, পুতিন কখনোই পারমানবিক বোতামে প্রেস করবেন না? করবেন কি? 

এটি তাত্ত্বিক কোনো প্রশ্ন নয়। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গতকাল ইউক্রেন প্রসঙ্গে ন্যাটো নেতাদের 'আক্রমনাত্মক বিবৃতির' অভিযোগ এনে তার দেশের পরমাণু বাহিনীকে উচ্চ সতর্ক অবস্থানে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন।

ভালোভাবে শুনুন প্রেসিডেন্ট পুতিন কি বলেছেন। গত বৃহস্পতিবার যখন পুতিন টেলিভিশনে বিশেষ সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেন, এটি ছিল একটি ভয়ঙ্কর সতর্কবার্তা: 'বাইরের কেউ যদি হস্তক্ষেপ করার কথা চিন্তা করেন- তাহলে আপনাকে ইতিহাসের বড় পরিণতির সম্মুখীন হবেন।'

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী নোভায়া গেজেটা পত্রিকার প্রধান সম্পাদক দিমিত্রি মুরাতবের মতে, 'পুতিনের কথাগুলো পারমাণবিক যুদ্ধের সরাসরি হুমকির মতো শোনাচ্ছে।'

'ওই টিভি ভাষণে পুতিন শুধু ক্রেমলিনের প্রভু হিসেবে নয় তিনি এই বিশ্বের প্রধান হিসেবে আচরণ করছিলেন; একইভাবে যখন একটি ফ্ল্যাশ গাড়ির মালিক তার আঙুলের চারপাশে চাবির রিং ঘুরিয়ে দেখায়, পুতিন তেমনি পারমাণবিক বোতামটি ঘোরান। পুতিন অনেকবার বলেছেন: যদি রাশিয়া না থাকে তাহলে এই দুনিয়ার কি দরকার আমাদের? পুতিনের এই কথায় কেউ পাত্তা দেয়নি। কিন্তু এটি একটা হুমকি যে রাশিয়ার সঙ্গে পুতিনের ইচ্ছা মতো আচরণ না করা হলে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।' 

২০১৮ সালের এক তথ্যচিত্রে প্রেসিডেন্ট পুতিন মন্তব্য করেন, 'কেউ যদি রাশিয়াকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে আমাদের জবাব দেওয়ার আইনি অধিকার আছে। হ্যাঁ, এটি মানবতা ও বিশ্বের জন্য একটি বিপর্যয় হবে। কিন্তু আমি রাশিয়ার একজন নাগরিক ও এর রাষ্ট্রপ্রধান। কেন আমাদের রাশিয়া ছাড়া একটি বিশ্ব দরকার?' 

২০২২ সালের দিকে নজর দেওয়া যাক। পুতিন ইউক্রেনে পুরোমাত্রায় যুদ্ধ শুরু করেছে, কিন্তু ইউক্রেন বাহিনী শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পঙ্গু অর্থনৈতিক ও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে একত্রিত হয়েছে৷

মস্কো-ভিত্তিক প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক পাভেল ফেলগেনহাওয়ারের মতে, 'পুতিন শক্ত অবস্থানে আছেন। একবার যদি পশ্চিমারা রাশিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের সম্পদ আটকে রাখে এবং রাশিয়ার অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়, এতে পুতিনের কাছে তেমন বেশি বিকল্প পথ নেই।'

'পুতিনের কাছে একটি পথ হচ্ছে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া, এতে ইউরোপিয়ানরা ধাক্কা পাবে। আরেকটি বিকল্প পথ হচ্ছে ব্রিটেন ও ডেনমার্কের মধ্যে উত্তর সাগরের কোথাও পারমাণবিক অস্ত্র বিস্ফোরণ করা।'

পুতিন যদি পারমাণবিক হামলা বেছে নেন, তাহলে তার ঘনিষ্ঠ বৃত্তের কেউ কি তাকে নিরস্ত করার চেষ্টা করবেন বা তাকে থামাবেন?

নোবেল পুরস্কার বিজয়ী দিমিত্রি মুরাতব বলেন, 'রাশিয়ার রাজনৈতিক অভিজাতরা কখনই জনগণের সঙ্গে নেই, তারা সবসময় শাসকের পক্ষ নেয়।' এবং ভ্লাদিমির পুতিনের রাশিয়ায় শাসকরা সর্বশক্তিমান।

পাভেল ফেলগেনহাওয়ার বলেন, 'কেউ পুতিনের বিপক্ষে দাঁড়াতে প্রস্তুত নয়। আমরা একটি বিপজ্জনক অবস্থানে আছি।'

ইউক্রেনে যুদ্ধ ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধ। যদি পুতিন তার সামরিক লক্ষ্য অর্জন করে, সার্বভৌম জাতি হিসেবে ইউক্রেনের ভবিষ্যত সন্দেহের মধ্যে পড়বে। কিন্তু যদি ব্যর্থ মনে হয় ও ভারী ক্ষয়ক্ষতি হয় শঙ্কা, এটি ক্রেমলিনকে আরও মরিয়া ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্ররোচিত করতে পারে।

তাই পুতিন পারমাণবিক হামলা চালাবে না এটিও বিশ্বাস করার মতো নয়।


আরও খবর

রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন এরদোয়ান

মঙ্গলবার ২৯ আগস্ট ২০২৩