Logo
শিরোনাম

পদ্মা সেতু: বাংলাদেশের আস্থা ও সাহসের প্রতীক

প্রকাশিত:শনিবার ২৫ জুন ২০২২ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ নভেম্বর ২০২৩ | ১০৪০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

পদ্মা সেতু বাংলাদেশের আস্থা ও সাহসের প্রতীক। পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তে প্রয়োজন ছিল সীমাহীন সাহস ও সুদৃঢ় রাজনৈতিক প্রতিজ্ঞা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে সেটা ছিল বলেই এই সেতু এখন বাস্তব। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জিডিপিতে ১ দশমিক ২ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি যোগ করবে। এই সেতু বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান অর্থাৎ এ অঞ্চলের (বিবিআইএন কানেক্টিটিতে) উন্নয়নে জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এই সেতুর ফলে বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আরও আকৃষ্ট হবেন। পদ্মা সেতু একটি সত্যিকারের গেমচেঞ্জার।  পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ (ইউরোপীয় ইউনিয়ন), দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভারত, চীন, সৌদি আরব ও ইতালির রাষ্ট্রদূত এবং রাশিয়ার দূতাবাসের পক্ষ থেকে অতিসাম্প্রতিক সময়ে এমন মন্তব্য করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরমি ব্রুয়ার বলেন, পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য একটি সাফল্য, যা বাংলাদেশিদের জন্য গর্বের বিষয়। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের সঙ্গে দেশের অন্য প্রান্তের মানুষদের এই সেতু যোগাযোগে বিশাল ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয়, এই সেতুর কারণে যোগাযোগের জন্য ব্যয় ও সময় কম লাগবে, পাশাপাশি অর্থনীতিতে আরও প্রবৃদ্ধি যোগ হবে। এই সেতু দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন বাংলাদেশের উন্নয়নে এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত হতে চলেছে। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জিডিপিতে ১ দশমিক ২ শতাংশেরও বেশি যোগ করবে। আমরা সেতু নিজেরাই ব্যবহার করতে এবং এটি জনগণ, পরিবার ও বাণিজ্যিক সংযোগের সুবিধার্থে কী করে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছি। অভিনন্দন, বাংলাদেশ।

ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জান কুউন বলেন, পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক অর্জন। ঐতিহাসিক এই প্রকল্প বাস্তবায়নে কোরিয়া যুক্ত থাকতে পারায় আনন্দিত। কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন নামে কোরিয়ান একটি প্রতিষ্ঠান এই সেতু নির্মাণে সুপারভাইজরের কাজ করেছে। এই সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য যুগান্তকারী সাফল্য, যা বাংলাদেশের উন্নয়নে মাইলফলক। ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকো নুনজিয়াতা বলেন, শেখ হাসিনার সাহস এবং দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই শত প্রতিকূলতার মধ্যেও এত বড় অবকাঠামো তৈরি করতে পেরেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকার অবকাঠামো উন্নয়নে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা সত্যি প্রশংসনীয়। পদ্মা সেতু নির্মাণের বিরুদ্ধে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই সেতু বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। এদেশে যে বড় বড় অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে, তা বিশ্বদরবারে আস্থা তৈরি করেছে। অনেকেই ভাবছে, এদেশে বড় বিনিয়োগের কথা। ইতালিয়ান অনেক বিনিয়োগকারী শিগগিরই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবেন। কারণ বড় অবকাঠামো মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি করে। আমরা মনে, করি বাংলাদেশ এখন প্রস্তুত।

ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের আস্থার প্রতীক। এই সেতুর ফলে বাংলাদেশে যোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়বে। এই সেতু শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা ভারত উপমহাদেশে আঞ্চলিক যোগাযোগে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে জাইকা শেষ পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পে অংশীদার হতে পারেনি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। তবে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে, এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা অবশ্যই প্রশংসনীয়। পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের সক্ষমতার চমৎকার একটি উদাহরণ। দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণে জাপান সহযোগিতা করার সুযোগ নেবে। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানÑ অর্থাৎ এ অঞ্চলের (বিবিআইএন কানেক্টিভিটিতে) উন্নয়নে জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখবে। আঞ্চলিক কানেক্টিভিটিতে এই সেতু যে ভূমিকা রাখবে, এতে ভারত খুশি। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী সিদ্ধান্ত। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের এই আনন্দময় মুহূর্তে আমি বাংলাদেশকে অভিন্দন জানাই। বাংলাদেশের প্রতিটি বন্ধুকে আমি স্বাগত জানাই।

ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের সাহসের প্রতীক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী সিদ্ধান্তের জন্যই এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ সিদ্ধান্তে প্রয়োজন ছিল সীমাহীন সাহস ও সুদৃঢ় রাজনৈতিক প্রতিজ্ঞা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে সেটা ছিল বলেই এই সেতু এখন বাস্তব। পদ্মা সেতু নিয়ে আমি যখন ভাবি, তখন শুধু তিনটি শব্দ আমার মনে আসে, সেটা হলো- সাহস, সঙ্কল্প ও সমৃদ্ধি। পদ্মা সেতু নির্মাণে চীনা কোম্পানি জড়িত রয়েছে। সেজন্য আমি গর্ববোধ করি। পদ্মা সেতু শুধু দুই পাড়ের ভূখণ্ডকেই যুক্ত করবে না, এটা মানুষের হৃদয়কেও যুক্ত করে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা অভিনন্দন জানাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের মেগা প্রকল্প বাংলাদেশে তৈরি হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। এই সেতুর ফলে বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আরও আকৃষ্ট হবেন।

পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে ঢাকার রাশিয়ার দূতাবাস এক বার্তায় বলেছে, এই উচ্চাভিলাষী মেগা প্রকল্পটি সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়েছে, যেটা প্রশংসনীয়। পদ্মা সেতু একটি সত্যিকারের গেমচেঞ্জার। কারণ এটি আঞ্চলিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, সংযোগ, কর্মসংস্থান, পর্যটন ও অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে সুযোগ প্রসারিত করবে। নিঃসন্দেহে এটি জাতীয় জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ব্যাপকভাবে অবদান রাখবে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশ সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টির কারণে একটি যুগান্তকারী অর্জন।

নিউজ ট্যাগ: পদ্মা সেতু

আরও খবর