
পেরুতে মাসব্যাপী চলা রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে সর্বশেষ সহিংসতায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিক্ষোভকারীরা যখন একটি বিমানবন্দরে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করে তখন এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ন্যায়পাল অফিসের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, পুনো অঞ্চলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর জুলিয়াকাতে এই রক্তপাত ঘটে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট
দিনা বোলুয়ার্তের পদত্যাগের দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। গত ৭ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট
পেদ্রো ক্যাস্টিলো ক্ষমতাচ্যুত ও গ্রেপ্তার হওয়ার পর দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।
কংগ্রেস ভেঙে
দিয়ে ডিক্রির মাধ্যমে শাসন শুরুর চেষ্টা করার পরে ক্যাস্টিলোকে অপসারণ করা হয়। এরপর
বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের মুখোমুখি হন তিনি। এর জেরে বছরের পর বছর ধরে
চলা রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল দেশটিতে সপ্তাহব্যাপী সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
বামপন্থি ক্যাস্টিলোকে
অপসারণে ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা বোলুয়ার্তের পদত্যাগ এবং অবিলম্বে নতুন নির্বাচন চান।
তারা ইতোমধ্যে ২০২৬ থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিলে নেমে এসেছেন।
পেরুর একটি টিভি চ্যানেলকে ক্যালোস মঙ্গে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা বলেন, জুলিয়াকাতে সোমবার নিহত ব্যক্তিদের গায়ে গুলি লেগেছে। ক্যাস্টিলোকে ক্ষমতাচ্যুত করার ফলে সৃষ্ট সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত সারাদেশে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জুলিয়াকার মেয়র অস্কার ক্যাসেরেস শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পেরুভিয়ানরা একে অপরকে হত্যা করছে। আমি শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ করছি। এর আগে, শনিবার জুলিয়াকা বিমানবন্দর দখল করার চেষ্টা করেছিল বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু এটি সুরক্ষিত রাখে পুলিশ ও সৈন্যরা।
বলিভিয়ার সীমান্তে
পুনো অঞ্চলে অবস্থিত জুলিয়াকা। এখানে আয়মারা আদিবাসী গোষ্ঠীর বহু লোক বসবাস করেন।
এই সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে পুনো সরকারবিরোধী বিক্ষোভের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। গত
৪ জানুয়ারি সেখানে হরতাল ঘোষণা করা হয়েছিল।
নববর্ষের ছুটিতে
বোলুয়ার্তে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে বিরতি নেওয়া হয়। কিন্তু ওই দিন এটি আবার শুরু
হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় এলাকাগুলোসহ দেশটির ছয়টি বিভাগে সড়ক
অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা।
বোলুয়ার্তে
ক্যাস্টিলোর ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং তার মতোই একজন বামপন্থি। কিন্তু অনেক আদিবাসী
বোলুয়ার্তেকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিহিত করেছেন। কারণ তিনি তাদের স্বার্থ রক্ষা করেন
না।