Logo
শিরোনাম

প্রস্তুতি শেষ, অপেক্ষা ক্রেতার

প্রকাশিত:সোমবার ০৪ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৪ নভেম্বর ২০২৩ | ৮৭৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

প্রতি বছরই ঈদুল আজহাকে ঘিরে জমে ওঠে পশুর হাট-বাজার। রাজধানী ঢাকায় ক্রেতাদের সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায় প্রধান ও স্থায়ী গাবতলী পশুর হাটে। ঈদকে সামনে রেখে গাবতলীর হাটসহ রাজধানীর বেশিরভাগ হাটেরই প্রস্তুতি শেষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে কোরবানির পশু। এখন অপেক্ষা শুধু ক্রেতার। ঈদের ১০-১৫ দিন আগেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটগুলো সাজানোর প্রস্তুতি নেন ইজারাদাররা। উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীন গাবতলী স্থায়ী পশুর হাটের পাশে অস্থায়ী হাটের প্রস্তুতিও শেষ পর্যায়ে। পশু ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রস্তুতি থাকলেও অস্থায়ী হাটে নেই কোরবানির পর্যাপ্ত পশু। আর স্থায়ী হাটে পর্যাপ্ত পশু থাকলেও ক্রেতাদের ভিড় শুরু হয়নি।

ব্যবসায়ীদের আশা, আগামী মঙ্গল-বুধবার নাগাদ জমে উঠবে পশুর হাট। তখন ক্রেতাদের চাহিদামতো হাটে উঠবে কোরবানির পশু। এবার বাড়তি দামের আশা তাদের। গাবতলী স্থায়ী পশুর হাটে সরেজমিনে দেখা যায়, কোরবানির পশুর জন্য শেড নানা রঙের ত্রিপলে সাজানো হয়েছে। ধোয়া-মোছার কাজও চলছে। সাজানো হয়েছে আকর্ষণীয় ডিজাইনের প্রধান ফটক। বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও র‌্যাবের জন্যও উঁচু ওয়াচ টাওয়ার। তবে এখনো ব্যাংক, বিকাশ, রকেটের জন্যও বুথ ঘর তৈরি হয়নি।

হাটে কথা হয় কুষ্টিয়ার গরু ব্যবসায়ী খোরশেদ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, দুই বছর ধরে লোকসান হচ্ছে। এবার এখনো জমেনি পশুর হাট। মানুষ (ক্রেতা) আসছে, ঘুরছে, চলে যাচ্ছে। আমি ১১টি গরু এনেছি। একেকটির ওজন ৬ থেকে ১৩ মণ পর্যন্ত। দেড় লাখ টাকার নিচে কোনো গরু নেই। একেকটি গরুর পেছনে প্রতিদিন খরচ ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। গত এক সপ্তাহ ধরে খরচ করে যাচ্ছি, কিন্তু ক্রেতার দেখা নেই। লস খাইতে তো আর বিক্রেতারা গরু আনবে না। এবার গরু কম আসছে। আমরা যারা ১২ মাস ব্যবসা করি তারাই আছি।

ঝিনাইদহের গরু ব্যবসায়ী লিটন বেপারি বলেন, এখন গরু-ছাগল কম হাটে। বেচাকেনা নেই। চারটি গরু এনে খরচ করেই যাচ্ছি। বিক্রি করতে পারিনি। গরু এনে রাখলেই খরচ। কবে থেকে জমতে পারে গরুর এ স্থায়ী হাট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী মঙ্গল-বুধবার থেকে জমবে হাট। আগে আগে অনেকবারই বেচাকেনা হয়েছে। আবার গত বছর গরু বেচতে না পেরে ফিরে গিয়েছিলাম। এবার মনে হচ্ছে হাট জমবে। তবে দেরিতে। তাই আশায় আছি। ঈদের খুব বেশি আগেই ঢাকার ক্রেতারা কোরবানির পশু কেনেন না। আগে খোলামেলা বাড়ি ছিল, এখন তা নেই। আগে কিনলে গরু-ছাগল রাখার জায়গা কোথায়? তাই শেষ মুহূর্তে জমে গরু-ছাগলের হাট। এখন যা হচ্ছে টুকটাক অনুষ্ঠান যেমন জন্মদিন, বিয়ে-বাড়ি আর কসাইখানার জন্য বিক্রি হচ্ছে।

আমিনবাজারের ছাগলের মালু বেপারি বলেন, গরুর কেনাবেচা নাই বললেই চলে, যা হচ্ছে দুই-চারটে ছাগল বেচাকেনা চলছে। কোরবানির চাপ এখনো পড়েনি হাটে। ক্রেতা সমাগম হলেই কোরবানির স্পেশাল ছাগল নামাব। একেকটার ওজন থাকবে ৩০ থেকে ৪৫ কেজি। গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটের পাশেই কোরবানির ঈদে জমে উঠে অস্থায়ী পশুর হাটও। সেখানে প্রধান ফটকের সামনেই ইট-বালুর ব্যবসা করেন মো. বুদ্দু মিয়া। তিনি বলেন, ইট বালুর ব্যবসা গুটাইছি। এখন কোরবানির সময়। শেড বানাইছি। ঈদের ১০ দিন এ ব্যবসাই করব। অস্থায়ী হাটের শেড বহুদূর পর্যন্ত গেছে; কিন্তু এখনো হাট জমেনি। গরু-ছাগল আসতেছে; কিন্তু ক্রেতা নাই।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় থাকছে মোট ২০টি হাট। এরমধ্যে ১৮টি অস্থায়ী এবং দুটি স্থায়ী হাট। অস্থায়ী হাটগুলোর মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অধীনে আটটি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতায় বসবে ১০টি। হাটগুলোতে বেচাবিক্রি চলবে ঈদের আগের চার দিন এবং ঈদের দিন।

ডিএসসিসির অধীনে ১০টি অস্থায়ী হাট হলো লালবাগের রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত জায়গা, শ্যামপুর-কদমতলী ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার মৈত্রী সংঘের ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগ এলাকায় ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা এবং লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গাসহ কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের এলাকায় অস্থায়ী হাট বসবে।

ডিএনসিসির আওতায় যে ৮টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাট বসবে- ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাট, কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন ৬ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, মোহাম্মদপুর বছিলায় ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় অবস্থিত বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং ব্লক-ই থেকে এইচ পর্যন্ত এলাকার খালি জায়গা এবং ৩০০ ফিট সড়ক সংলগ্ন উত্তর পাশের সালাম স্টিল-যমুনা হাউজিং কোম্পানির খালি জায়গা, দক্ষিণখানের কাঁচকূড়া ও এর পাশে ব্যক্তিগত মালিকানাধীনের খালি জায়গা মিলিয়ে অস্থায়ী পশুর হাট বসবে। এসব অস্থায়ী হাট ছাড়াও গাবতলী ও ডেমরার সারুলিয়ার স্থায়ী হাটেও কোরবানির পশু বিক্রি হবে। আগামী ১০ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে।

নিউজ ট্যাগ: ঈদুল আজহা

আরও খবর

এলপিজির দাম আরও বাড়ল

বৃহস্পতিবার ০২ নভেম্বর 2০২3