Logo
শিরোনাম

পুতিন: কিশোর গ্যাং থেকে রাষ্ট্রনায়ক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০১ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ নভেম্বর ২০২৩ | ২১৩৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

মর্নিং শোজ দ্য ডে- বহুল প্রচলিত কথাটি সবসময় সমার্থক হয় না। কে জানতো স্কুলে মারামারি করে বেড়ানো ছেলেটা একদিন বিশ্বনেতা হবে? অথবা অপরাধ জগত থেকে মুক্ত রাখার জন্য পরিবারের কৌশল হিসেবে জুডো শেখা ছেলেটাই এক সময় হবে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত রাষ্ট্রনায়ক! হ্যাঁ, স্কুলে নিজের গ্যাং পরিচালনা করা সেই কিশোর আজকের আলোচিত রাষ্ট্রনায়ক ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ পুতিন 

১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন বিরতি নিয়ে বাড়ি ফেরেন রুশ সেনাবাহিনীর সদস্য ভ্লাদিমির স্পিরিদোনোভিচ পুতিন। বাড়ি ঢোকার মুখে তিনি দেখতে পান বাড়ির সামনে বেশ কিছু মৃতদেহ পড়ে আছে এবং সেগুলো ট্রাকে তোলার কাজ চলছে। একটু খেয়াল করে দেখলেন সেই লাশের ভেতর থেকে উঁকি দিচ্ছে তার স্ত্রী মারিয়া পুতিনার জুতো। ভারাক্রান্ত মন নিয়ে স্ত্রীর লাশ বুকে তুলে দেখেন তখনো জীবন আছে! দ্রুত স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যান তিনি। সেই ঘটনার ৮ বছর পর মারিয়া পুতিনা জন্ম দেন এক সন্তান। আজ তিনিই রাশিয়ার প্রেসিডিন্ট।  পুতিন ছোটবেলা বেজায় দুরন্ত ছিলেন। সহপাঠীদের সঙ্গে নিত্যদিন ঝগড়া, মারামারি লেগেই থাকতো। এমনকি অপরাধ জগতের দিকেও পা বাড়াতে শুরু করেছিলেন। তখন পরিবার থেকে তাকে ব্যস্ত রাখা হয় বিভিন্ন খেলাধুলায়। ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয় জুডো ক্লাসে। এই কৌশল পরে খুব কাজে লেগেছিল।

পুতিন লেলিনগ্রাদ স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে অর্জন করেন আইনের ওপর ডিগ্রী। যদিও আইন পেশায় মন ছিল না তার। পেশা হিসেবে বেছে নেন গুপ্তচরবৃত্তি। দুরন্ত কৌতূহলী মন এই পেশা বেছে নিতে উৎসাহ জোগায়। কেজিবিতে তিনি চাকরি করেন ১৫ বছর, যার মধ্যে ৬ বছর কাটিয়ে দেন জার্মানির ড্রেসিডেনে। ১৫ বছর পর কেজিবি থেকে অবসর নিয়ে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি নেন।

বলাবাহুল্য কেজিবি থেকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদবি নিয়ে অবসরে যান পুতিন। যাই হোক, বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কাজ ছিল বাইরের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ রক্ষা করা। এর কিছুদিন পরেই তিনি সেন্ট পিটার্সবুগের প্রথম নির্বাচিত মেয়র সবচেকের উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন। এবং অল্পদিনেই সবচেকের মন জয় করে নেন।  ফলশ্রুতিতে মিলে যায় ডেপুটি মেয়রের পদ। এরপর ১৯৯৬ সালে পুতিন মস্কো চলে আসেন। এখানে প্রেসিডেন্ট স্টাফ হিসেবে পাভেল বরোদিনের ডেপুটি হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৮ সালে পুতিন তখনকার প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিনের নজরে আসেন। তিনি তাকে ন্যাশনাল সিকিউরিটি সার্ভিসের ডিরেক্টর পদে বসান। পুতিন ধীরে ধীরে প্রেসিডেন্টের আস্থাভাজন হন।  ১৯৯৯ সালে ইয়েলৎসিন পুতিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপরের ইতিহাস সবার জানা। ২ বারের বেশি প্রেসিডেন্ট না থাকার বিধান থাকলেও পুতিন প্রথমে ২ বার প্রেসিডেন্ট এবং পরে একবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে আরও দুবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় আসিন। একজন গোয়েন্দা বা গুপ্তচর হিসেবে পুতিনের জীবন বর্নাঢ্য বললেও কম বলা হবে। কেননা বিয়ে করতে গিয়েও তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন গুপ্তচরবৃত্তির। নিজের বন্ধুকে পাঠিয়ে যাচাই করে দেখেছিলেন তার প্রেমিকা আসলেই তাকে ভালোবাসে কিনা! লুদমিলা পুতিন সেদিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। কিন্তু ক'জন পারেন এমন এক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে? অর্থাৎ যাচাই বাছাই ছাড়া পুতিন জীবনের কোনো সিদ্ধান্তই নেন না।

'সেভেনটিন মোমেন্টস অব স্প্রিং' সিনেমাটি দেখার পর পুতিন গুপ্তচরবৃত্তি পেশায় অনুপ্রাণিত হন। মূলত ২য় বিশ্বযুদ্ধের ওপর নির্মিত ছবিগুলো তাকে বেশি অনুপ্রাণিত করেছিল। কে ভেবেছিল এই কিশোর গ্যাং নেতা একদিন জাদরেল গোয়েন্দা হবেন এবং পরবর্তীকালে বিশ্বনেতা? তাই সব সময় সকাল দেখে দিনের পূর্বাভাস দেওয়া যায় না...।

নিউজ ট্যাগ: ভ্লাদিমির পুতিন

আরও খবর

আতশবাজির আলোতে ঝলমলে রাজধানী

রবিবার ০১ জানুয়ারী ২০২৩

রসগোল্লার জন্মদিন আজ

মঙ্গলবার ১৫ নভেম্বর ২০২২