চীনের সিনোফার্মের টিকা আজ শনিবার থেকে
দেশব্যাপী দেওয়া শুরু হচ্ছে। এর মাধ্যমে দেড় মাসের বেশি সময় পর আবার করোনার টিকার প্রথম
ডোজ চালু হচ্ছে। এ পর্যায়ে ১০ ক্যাটাগরির মানুষ প্রথম ডোজের টিকা পাবেন। রাজধানীর চারটি
হাসপাতালসহ প্রত্যেকটি জেলা সদর হাসপাতালে এ টিকাদান চলবে। শুক্রবার ও সরকারি ছুটির
দিন ছাড়া বাকি দিনগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা
করা হবে। তবে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে পাওয়া ফাইজারের টিকা বিতরণের দিনক্ষণ এখন চূড়ান্ত
হয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,
সিনোফার্মের টিকা ইতোমধ্যে সারাদেশে পৌঁছেছে। রাজধানীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল,
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল- এই চারটি কেন্দ্রে সিনোফার্মের টিকা বিতরণ করা
হবে। প্রতিটি টিকাকেন্দ্রে দুটি করে বুথ থাকবে। ঢাকা জেলা ছাড়া প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে
একটি করে টিকাকেন্দ্র এবং দুটি করে বুথ থাকবে। তবে বুথ চালুর বিষয়টি নির্ধারণ করা হবে
টিকাগ্রহীতার ওপর ভিত্তি করে। প্রতিটি কেন্দ্রে
টিকাগ্রহীতার সংখ্যা ১৫০ থেকে ২০০ জন হলে একটি বুথ চালু করা হবে এবং টিকাগ্রহীতার সংখ্যা
২০০ জনের বেশি হলে দুটি বুথ চালু করা হবে।
সিনোফার্মের টিকা ১০ ক্যাটাগরির মানুষকে
দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে টিকার জন্য নিবন্ধিত ব্যক্তি, অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত
সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ সদস্য, অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিদেশগামী বাংলাদেশি কর্মী
(যাদের বিএমইটি নিবন্ধন কার্ড রয়েছে), সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থী,
সরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি, সরকারি ম্যাটস ও আইএসটি শিক্ষার্থী, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের
আবাসিক হলের শিক্ষার্থী, বিডার আওতাধীন ও অন্যান্য জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক সরকারি
প্রকল্পে (পদ্মা সেতু প্রকল্প, মাতারাবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্প, এক্সপ্রেস
হাইওয়ে প্রকল্প, রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র) সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী,
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী, সারাদেশে করোনায় মৃতদের দাফন
ও সৎকারে নিয়োজিত ওয়ার্ড ও পৌরসভার কর্মী এবং বাংলাদেশে বসবাসকারী চীনের নাগরিকরা এই
টিকা পাবেন।
তবে প্রথম ডোজ হিসেবে অন্য কোনো টিকা নিয়ে
থাকলে তারা সিনোফার্মের টিকা পাবেন না। নিবন্ধন ছাড়া কেউ টিকা গ্রহণ করতে পারবেন না।
শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে শিক্ষার্থী পরিচয়পত্রের তথ্য লিপিবদ্ধ করে
টিকা নিতে পারবেন। তবে দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণের আগে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সুরক্ষা
অ্যাপে নিবন্ধন করে নিতে হবে।
১৮ বছরের নিচে কেউ এই টিকা পাবেন না। জ্বর,
অসুস্থতা, অ্যালার্জি থাকা ব্যক্তি, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ,
অ্যাজমা, স্ট্রোক, ঘা, কিডনি রোগ, ক্যান্সার আক্রান্ত এবং স্বল্প রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার
ব্যক্তিদের টিকা গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে ভারতের সেরাম
ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড টিকা দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী
ভারত থেকে টিকা না পাওয়ায় ২৫ এপ্রিল থেকে প্রথম ডোজ স্থগিত করা হয়। এ পর্যন্ত টিকার
জন্য সুরক্ষা অ্যাপে ৭২ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৯ জন নিবন্ধন করেছেন। তাদের মধ্য থেকে ৫৮ লাখ
২০ হাজার ১৫ জন প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন।
পরবর্তী সিরিয়াল অনুযায়ী আরও সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ সিনোফার্মের টিকা পাবেন। তবে কোভিশিল্ডের টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী আরও প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ মানুষ দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় রয়েছেন।