জাতীয় সংসদের
নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ বিল-২০২১’ নামে নতুন আইন
পাশ হয়েছে।
শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর)
আইনমন্ত্রী আইনটি পাসের প্রস্তাব করলে সংসদে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।এর আগে বেলা ১১টায়
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল
হামিদ স্বাক্ষর করলেই পাস হওয়া বিলটি কার্যকর হবে।
এর ফলে সীমানা
নির্ধারণ ছাড়াই করা যাবে সংসদীয় নির্বাচন। দৈব-দুর্বিপাকে কোনো এলাকার সংসদ নির্বাচনের
সীমানা নির্ধারণ করা সম্ভব না হলে বিদ্যমান সীমানায় নির্বাচন হওয়ার বিধান রেখে আইনটি
পাস হয়েছে।
এর আগে আইনটি
পাস না করে কয়েকজন এমপি জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য পুনরায় পাঠানোর দাবি জানালে
তা কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়।এ আইন কার্যকর হলে ১৯৭৬ সালের ‘দ্য ডিলিমিটেশন
অব কন্সটিটিউয়েন্সিস অর্ডিনেন্স’রহিত হবে।
গত ৩ জুন আইনমন্ত্রী
আনিসুল হক বিলটি সংসদে উত্থাপন করেছিলেন।পরে তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন,
বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
আইনে নির্বাচন
কমিশনকে বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা বিদ্যমান আইনে নেই। এছাড়াও আইনটি আগে
ইংরেজিতে ছিল, এখন তা বাংলায় করা হয়েছে।
নতুন বিলে বিদ্যমান
আইনের ৮ নম্বর ধারায় একটি উপধারা যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা আছে, দৈব-দুর্বিপাকে
বা অন্য কোনো কারণে আঞ্চলিক সীমানা নির্ধারণ করা না গেলে বিদ্যমান সীমানার আলোকে নির্বাচন
অনুষ্ঠিত হবে। সংসদের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের
লক্ষ্যে এবং বাংলায় আইন করতেই মূলত বিলটি আনা হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন
কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে
রোডম্যাপ ঘোষণা করে বিদ্যমান আইনগুলোর সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের
আগে জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইনটি সংস্কারের ঘোষণাও দেয়া হয়।
কিন্তু সেটা হয়নি। পরে বিদ্যমান আইনেই সীমানা পুনর্বিন্যাস করে ওই নির্বাচন সম্পন্ন
করা হয়।
বিদ্যমান আইনের
৮টি ধারার স্থলে নতুন আইনে ৯টি ধারার প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন ধারাটিতে আইনের অধীনে
বিধি প্রণয়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে বিধি প্রণয়নের সুযোগ নেই। বিদ্যমান
আইনের ধারা-১-এ একটি নতুন উপধারার প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে আইনটি অবিলম্বে কার্যকর
হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলে আঞ্চলিক
নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে সংবিধানের ৬৫(২) অনুচ্ছেদে
উল্লিখিত সংখ্যক সংসদ সদস্য নির্বাচিত করতে পুরো দেশকে সে সংখ্যক একক আঞ্চলিক নির্বাচনী
এলাকায় বিভক্ত করার কথা বলা হয়েছে।এক্ষেত্রে ভৌগলিক অখণ্ডতা বজায় রাখা এবং আদমশুমারির
ভিত্তিতে যতদূর সম্ভব বাস্তবভিত্তিক বণ্টনের কথা বলা হয়েছে।
বিলের ৭ ধারায়
বলা হয়েছে, ইসির সীমানা নির্ধারণের বিষয় নিয়ে দেশের কোনো আদালত বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের
কাছে প্রশ্ন তোলা যাবে না।