Logo
শিরোনাম

ভবিষ্যতের চাষ ‘স্মার্ট' চাষ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ জুলাই ২০২২ | হালনাগাদ:সোমবার ২০ নভেম্বর ২০23 | ১০৯৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

বিজ্ঞানীরা টেকসই ও পরিবেশবান্ধব কৃষি পদ্ধতির খোঁজ করছেন। সেক্ষেত্রে উপাত্ত ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর কৃষি হতে পারে একটি উপায়। পৃথিবীর কোথাও কোথাও এরই মধ্যে এই পদ্ধতির ব্যবহার হচ্ছে।

পৃথিবীর প্রায় ৩৮ ভাগ ভূমি ব্যবহৃত হয় খাদ্য উৎপাদন ও পশুপালনে। কৃষি প্রায় চার ভাগের এক ভাগ বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী। এই খাত একাই ৭০ ভাগ সুপেয় পানি ব্যবহার করে।

তারপরও পৃথিবীর সবার জন্য পর্যাপ্ত খাবার নেই। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন বলছে, ২০২০ সালে ৭০ কোটি মানুষ অভুক্ত ছিলেন, যা পৃথিবীর জনসংখ্যার প্রায় ৯ ভাগ। এসব সমস্যা সমাধানে প্রয়োজন স্মার্ট' চাষপদ্ধতি।

স্মার্ট ফার্মিং' বিশেষজ্ঞ রনভীর চন্দ্র বলেন, ‘‘আমাদের আরো বেশি খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। তবে আমাদের এমন ভালো ও পুষ্টিকর খাবার উৎপাদন করতে হবে, যা পৃথিবীর ক্ষতি করে না। আমাদের পানিস্তর নেমে যাচ্ছে, জমির গুণাগুণ বাড়ছে না। তাহলে আমরা আরো ভালো খাবার কেমন করে উৎপাদন করব? সবচেয়ে ভালো উপায় হতে পারে, উপাত্ত নির্ভর কৃষি। এর অর্থ, উপাত্ত ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কৃষকের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো।''

মালয়েশিয়ার এই জলখামার স্মার্ট টানি' নামের পদ্ধতি ব্যবহার করে। পানিতে রাখা সেন্সরগুলো কাঁকড়ার জন্ম ও বেড়ে ওঠার জন্য পিএইচ মান, অক্সিজেনের মাত্রা ও পানির তাপমাত্রার মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে।

জলখামারি ফারহানা আবদ আজিজ বলেন, ‘‘আমরা তাপমাত্রা ও অন্যান্য সূচকগুলোর মাত্রা দেখতে পাই। আগে আমরা সবকিছু হাতে কলমে করতাম। বারবার টেস্ট কিট কিনে এসব পরীক্ষা করতাম, যার কারণে খরচ অনেক বেড়ে যেত। কিন্তু এই প্রযুক্তিতে একবার বিনিয়োগ করে আমরা এখন নিয়মিত সব উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারি। খামারের যে কোন পরিস্থিতির মূল্যায়ণ এখন আমরা করতে পারি।''

ফারহানা আবদ আজিজ একটি অ্যাপের ড্যাশবোর্ডে চোখ রাখলেই উপাত্ত দেখতে পান। বিগ ডেটা অ্যানালাইটিক সিস্টেমের মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ করা হয়। অ্যাপের তাৎক্ষণিক নোটিফিকেশন জলদি সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে। এভাবে বাড়তি কিছু না করেই সার্বক্ষণিক পানির মান পর্যবেক্ষণ করতে পারেন ফারহানা।

ফারহানা বলেন, ‘‘আমি মনে করি এটা সহজ। কারণ আমাকে খামারে আসতে হয় না। বাড়ি থেকে, যাওয়া আসার পথে বা যে কোন জায়গা থেকে পর্যবেক্ষণ করতে পারি।''

মালয়শিয়ান কোম্পানি স্যাট এশিয়ার পণ্য স্মার্ট টানি। হাফিজ হাসান একজন স্থানীয় উদ্যোক্তা হওয়ায় তিনি জানেন মালয়শিয়ান খামারিদের কী দরকার।

স্যাট এশিয়ার সিইও হাফিজ হাসান বলেন, ‘‘স্মার্ট টানি তিনটি ভিন্ন উপাদানে তৈরি। এক, কম দামী সেন্সর; দুই, বিস্তৃত সংযোগ সুবিধা এবং তিন, আমাদের বিগ ডেটা অ্যানালাইটিক সিস্টেম।''

স্মার্ট টানি সেন্সরগুলো মাটির পুষ্টিগুণও পরিমাপ করে, যেমনটি হচ্ছে এই আনারস খামারে। সেন্সরের সংখ্যা ও যন্ত্রপাতির পরিমাণ অনুযায়ী এটির দাম কয়েকশত ইউরো পর্যন্ত। স্বল্প বিনিয়োগ, দূর্বল ফোন নেটওয়ার্ক থাকার পরও মানসম্পন্ন সংযোগ এবং উপাত্তের পরিষ্কার উপস্থাপনের কারণে এটি চাষিদের জন্য খুব উপযোগী।

হাফিজ হাসান আরো বলেন, ‘‘আমাদের ভোক্তাদের বেশিরভাগই তরুণ প্রজন্মের। তারা প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চায়৷ এটি ইতিবাচক। আমরা নতুন প্রজন্মের চাষিদের এ পেশায় আগ্রহী করার চেষ্টা করছি।''

উদ্যোক্তাদের দাবি, খাদ্য সংকট সমাধান ও টেকসই কৃষিব্যবস্থা তৈরিতে স্মার্ট চাষ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে সেজন্য একে এমনকি ছোট খামারিদের মাঝেও ছড়িয়ে দিতে হবে।

রনভীর চন্দ্র বলেন, ‘‘সুতরাং উপাত্তনির্ভর কৃষি এখন অবশ্যম্ভাবী। খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে উপাত্ত ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে উত্তম সিদ্ধান্ত নিতে হবে।''

স্মার্ট চাষ কৃষিকে আরো দক্ষ ও পরিবেশবান্ধব করে গড়ে তুলতে পারে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের এ সময়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে এর ভূমিকা এখন অনস্বীকার্য।

নিউজ ট্যাগ: স্মার্ট চাষ

আরও খবর

কমেছে রোলেক্স ও প্যাটেক ফিলিপ ঘড়ির দাম

বুধবার ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩