Logo
শিরোনাম

হাওরের বন্যা চালের বাজারমূল্যে প্রভাবক হয়ে উঠতে পারে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৯ এপ্রিল ২০২২ | হালনাগাদ:শনিবার ২৫ নভেম্বর ২০২৩ | ৬৮৯০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

হাওরে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে একের পর এক বোরো ধানের জমি। সর্বশেষ তথ্য পাওয়া পর্যন্ত শুধু সুনামগঞ্জ জেলায়ই ১০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেসব জমি এখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, বন্যায় তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সেগুলো থেকে কাঁচা বা আধাপাকা ফসল কেটে আনছেন কৃষক। হাওরের বর্তমান পরিস্থিতি দেশে এবার চালের বাজারমূল্যে বড় ধরনের প্রভাবকের ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দেশে মোট চাল উৎপাদনের বড় একটি অংশ আসে হাওরাঞ্চল থেকে। শুধু বোরো মৌসুমে আবাদ হলেও দেশে চালের সরবরাহ ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় প্রভাবকগুলোর একটি হলো হাওরাঞ্চলের উৎপাদন। বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অতীতেও হাওরের উৎপাদন বিপর্যয়ের ধারাবাহিকতায় দেশে চালের বাজারে অস্থিতিশীলতা নেমে আসতে দেখা গিয়েছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালে সংঘটিত হাওরের আগাম বন্যার কারণে ওই বছর দেশে পণ্যটির বাজারে ব্যাপক অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছিল।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ এম আসাদুজ্জামান বলেন, বোরো ধানের প্রায় ১০ শতাংশ হাওর এলাকা থেকে আসে। আমাদের চাল উৎপাদনের ৬০ শতাংশই যেহেতু বোরো, সে কারণে হাওরের বন্যার ক্ষতির বেশ প্রভাব পড়তে পারে আমাদের মোট চাল উৎপাদনে। এছাড়া বন্যার প্রভাবে হাওরাঞ্চলে তাত্ক্ষণিক খাদ্যাভাবের মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। দেশের কিছু স্থানে তাপপ্রবাহ চলছে। ফলে কিছু জায়গার ধান পুড়ে যাচ্ছে, চিটা হয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে আমরা যদি বিষয়গুলো পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখতে পাব বোরো উৎপাদনে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। এ অনিশ্চয়তা অবশ্যম্ভাবীভাবে আমাদের খাদ্যনিরাপত্তায় বড় ধরনের হুমকি তৈরি করতে পারে।

খাদ্যনিরাপত্তার এ হুমকি সামাল দিতে এখনই সরকারকে প্রস্তুতি নিতে হবে জানিয়ে এ অর্থনীতিবিদ বলেন, যে বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, হয়তো আমদানি করে সেটা সামাল দেয়া যাবে। কিন্তু তার জন্য নীতিনির্ধারকদের এখনই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। পাশাপাশি আমনে যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়, সেই প্রস্তুতিও নিয়ে রাখতে হবে।

ভারতের মেঘালয় অঞ্চলে অতিবৃষ্টির ফলে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাওরের পানি ক্রমেই বাড়ছে। আগাম বন্যায় ভেঙে পড়ছে একের পর এক বাঁধ। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে আধাপাকা ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বড় ধরনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে চাল উৎপাদন নিয়েও।

পনি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামসোদ্দাহা বলেন, উজানে বৃষ্টিপাত হওয়ায় হাওরে পানি বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয়ে ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যদি মেঘালয়ে ভারি বৃষ্টিপাত বাড়ে, তাহলে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। তাতে আরো বেশি হুমকিতে পড়বে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ। আমরা চেষ্টা করছি যাতে হাওর রক্ষা বাঁধ না ভাঙে।

এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জের দিরাই, শাল্লা, ধরমপাশাসহ সাত উপজেলার ১৭টি হাওরে বাঁধ ভেঙে ফসলি জমিতে পানি ঢুকে পড়ার তথ্য পাওয়া গিয়েছে। রবিবার (১৭ এপ্রিল) গভীর রাতে উপজেলার জগদল ইউনিয়নের হুরামন্দিরা হাওরের সাতবিলা স্লুইস গেট এলাকায় ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করে। তাতে সেখানকার এক হাজার হেক্টর জমি নিমিষেই তলিয়ে যায়। এর আগে সকালে তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ার-সংলগ্ন বর্ধিত গুরমার হাওরেও বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে। সব মিলিয়ে জেলার প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এখনো তাহিরপুর, ধরমপাশা, দিরাই, শাল্লাসহ জেলার প্রায় সবক’টি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। অনেক বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন, পাউবো ও কৃষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে হাওরের ধান রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সুনামগঞ্জের সব হাওর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। যেকোনো সময় যেকোনো বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই উপজেলা প্রশাসন, পাউবো, কৃষি বিভাগ, জনপ্রতিনিধিসহ আমরা সবাই মাঠে আছি। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় হাওরের ফসল রক্ষা করতে হবে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। এ কারণে এখন একের পর এক বাঁধ ভেঙে পড়ছে। প্রশাসন ও পাউবো তথ্য অনুযায়ী আগাম বন্যার আশঙ্কা থাকায় কাঁচা-আধাপাকা ধান কাটছেন হাওরের কৃষকরা। এবার হাওরে ধান চাষাবাদ হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার হেক্টর জমিতে। এসব জমি থেকে ১৩ লাখ টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য ছিল।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, একদিকে হাওরে পানি ঢুকছে, অন্যদিকে আমরা হারভেস্টার মেশিন দিয়ে কৃষকদের দ্রুত ধান কেটে দিচ্ছি। দিরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি বিভাগ, পাউবোসহ স্থানীয়রা মিলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করছেন। এ পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলায় মোট ৫৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান কাটা হয়েছে। আমরা আশা করছি আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এক সপ্তাহের মধ্যে হাওরের সব ধান কাটা শেষ হবে।

এর আগে ২০১৭ সালের বন্যায় হাওরে ফসলহানির পর বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। পরে ঠিকাদারি প্রথা বাতিল করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের উদ্যোগ নিয়েছিল পাউবো। এখন পাউবোর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পিআইসির মাধ্যমে করা কাজগুলো মানসম্মত হচ্ছে না। এসব বাঁধে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে যাচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পাউবোর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এসএম শহিদুল ইসলাম বলেন, বাঁধে মাটির কাজগুলো তো পিআইসি করে। পিআইসির কাজগুলো খুব একটা মানসম্পন্ন হয় না। এ কারণে দু-এক জায়গায় বাঁধ ধরে রাখা যায়নি। এর ওপর উপর্যুপরি দুবার বন্যা হলো। প্রথম দফার বন্যায় বাঁধটা দুর্বল হয়ে পড়ে। পরে আরেকবার বন্যা হওয়ার ফলে দু-এক জায়গা ভেঙে যায়।

পিআইসির কাজে পাউবোর তদারকি ছিল কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তদারকি ছিল। কিন্তু অনেক ইকুইপমেন্ট লাগে, অনেক কিছু লাগে, যেটা ছাড়া তদারকি সম্ভব নয়। আমরা আমাদের কাজগুলো করছি। প্রতি বছরই আমরা নিয়মমাফিক ডিজাইন অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করি। প্রতি বছরই কাজ হয়। প্রতি বছরই আমরা চেষ্টা করি বাঁধগুলো ধরে রাখার। এজন্য বাজেটেরও সমস্যা নেই। কিন্তু বাঁধ মেরামতের কাজগুলো খুব দ্রুত দু-তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে হয়। আর মানসম্মত কাজ করার জন্য আরো বড় প্রকল্প নেয়ার প্রয়োজন আছে।

বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনিয়ম তেমনভাবে হয়নি। বাঁধ যেগুলো ভাঙছে সেগুলো আট-দশ বছরের পুরনো। চার বছর বন্যা হয়নি। এবার বন্যা হওয়ায় ঝামেলাটা তৈরি হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে হাওরে আগাম বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কাও এখন বেশি। এ অবস্থায় হাওর ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসে গিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এজন্য সার্বিকভাবে নতুন পরিকল্পনার ভিত্তিতে কাজ এগিয়ে নেয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন তারা।

পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ এবং ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেন, হাওর ব্যবস্থাপনার বিষয়টি নতুন করে ভাবতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগাম বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ধান রোপণের সময় এগিয়ে আনতে হবে, যাতে মার্চের মধ্যে ধান কেটে নেয়া যায়। এছাড়া ধান উৎপাদন ও মাছ চাষের মধ্যে একটা সমন্বয় রাখতে হবে। যাতে দুটির কোনোটিই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এজন্য বিষয়টি নিয়ে সার্বিকভাবে একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। হাওর রক্ষায় সাবেকি পদ্ধতিতে কাজ করলে হবে না, সেটি বদলাতে হবে। ১৯৫০ বা ১৯৭০ সালের পরিকল্পনায় এ সময়ের হাওর ব্যবস্থাপনা চলতে পারে না। এজন্য স্থানীয় অধিবাসীদের সম্পৃক্ত করে সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিয়ে এ প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

নিউজ ট্যাগ: সুনামগঞ্জ হাওর

আরও খবর

এলপিজির দাম আরও বাড়ল

বৃহস্পতিবার ০২ নভেম্বর 2০২3




জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৩০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদ জামাত শুরু হয়।

ঈদের প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের লাখো মুসল্লি।

ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন। দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সিটি কর্পোরেশন থেকে জানানো হয়, এবার জাতীয় ঈদগাহের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের মূল প্যান্ডেলে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। ছিল ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা।

এদিকে জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।  ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭, ৮, ৯ ও ১০ ও ১০টা ৪৫ মিনিটে ঈদের জামাত হবে।


আরও খবর



বায়তুল মোকাররমে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৪০জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৭টায় এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড় নামে।

প্রথম জামায়াতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। নামাজের সময়ে মুসল্লিদের ঢল নামে। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। নামাজের পর একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

জাতীয় মসজিদে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহীউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের মোয়াজ্জিন (অব.) হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

তৃতীয় জামাত সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন আজিমপুর কবরস্থান মেয়র হানিফ জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ইমরান বিন নূরউদ্দীন। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির ড. মো. আবু ছালেহ পাটোয়ারী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. জসিম উদ্দিন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল পৌনে ১১টায়। ইমামতি করবেন মিরপুর জামেয়া আরাবিয়া আশরাফিয়া ও এতিমখানার মুহতামিম মাওলানা সৈয়দ ওয়াহীদুজ্জামান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. রুহুল আমিন।

৫টি জামাতে কোন ইমাম অনুপস্থিত থাকলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাষা শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ নূর উদ্দীন বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।


আরও খবর



আজ ঈদ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১১ এপ্রিল ২০২৪ | ৭৬৫জন দেখেছেন
নিউজ পোস্ট ডেস্ক

Image

রোজা শেষে আবারও এলো ঈদ। খুশির বার্তা নিয়ে ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা পূর্ণ হলো। এক মাস সিয়াম সাধনার পর আজ উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেনে দেশবাসী।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল যে দিবসে তারা খেলাধুলা করতো। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, এ দুদিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসী উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দুই দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এ দুই দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দুটো দিন দিয়েছেন। তা হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৩৪)

ঈদের দিনের শুরু হয় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে।ঈদের দিন সকালে পুরুষদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বিশেষ পদ্ধতিতে অতিরিক্ত তাকবিরসহ জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা এবং তারপর ঈদের খুতবা দেওয়া ও শ্রবণ করা। ঈদের নামাজ খোলা ময়দানে আদায় করা উত্তম। 

ঈদুল ফিতরের দিন দেশের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। আবহাওয়া খারাপ হলে জাতীয় ঈদগাহে সম্ভব না হলে বায়তুল মোকাররমে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।

এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও পবিত্র ঈদুল ফিতরে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।  তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টায়।  চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন  সর্বসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। আর নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছে ১০ এপ্রিল। অফিস খুলবে ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছেন টানা ১০ দিন। লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হয়েছে কম। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সময় নিয়ে নিজের শেকড়ে ফিরতে পেরেছেন।

কর্মব্যস্ত এই নগরীর সবাই যখন ঈদ উদযাপনে ঢাকা ছেড়েছেন তখন এই ঢাকা হয়ে উঠেছে এক অন্য শহর। বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র, নেই চিরচেনা রূপ। এখন আর ঢাকার সড়কে ঘণ্টা পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় না। মুহূর্তেই চলে যাওয়া যাচ্ছে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে।

এদিকে দেশের সবার জন্য সুখী, আনন্দময় ও নিরাপদ ঈদুল ফিতরের কামনা করে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি।

রাজনৈতিক নেতাদের অধিকাংশই নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবার। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদ করবেন, আবার কেউ নামাজ শেষে যাবেন এলাকায়। সব মিলিয়ে  নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করবেন তারা, যোগ দেবেন সামাজিক অনুষ্ঠানেও।


আরও খবর